রেল কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে টানা তিন ঘণ্টা পর রাজশাহীর চারঘাটের নন্দনগাছি এলাকার রেলপথ অবরোধ তুলে নেওয়া হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে সারা দেশের সঙ্গে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।
এর আগে বুধবার (১১ জুন) ভোর ৬টা থেকে যাত্রাবিরতির দাবিতে নন্দনগাছী রেলস্টেশনে আন্তঃনগর ট্রেনের যাত্রাবিরতির (স্টপেজ) দাবিতে রেলপথ অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করে স্থানীয় লোকজন।
এতে রাজশাহীর সঙ্গে সারা দেশের রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। তবে কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে সকাল ৯টার দিকে তারা অবরোধ প্রত্যাহার করে নেন। আগামী ২০ জুনের মধ্যে দাবি মানা না হলে আবারও কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে বলেও জানান তারা।
জানা গেছে, সকাল সাড়ে ৬টার দিকে স্টেশনের অদূরে সাগরদাড়ি এক্সপ্রেস থামিয়ে বিক্ষোভ করেন আন্দোলনকারীরা। তারা স্টেশন সংস্কার ও আন্তঃনগর ট্রেন থামানোর দাবি-সম্পর্কিত বিভিন্ন ব্যানার ও ফেস্টুন তুলে ধরেন। দাবির মধ্যে ছিল- সিল্কসিটি এক্সপ্রেস, সাগরদাঁড়ি এক্সপ্রেস, বরেন্দ্র এক্সপ্রেস ও ঢালার চর এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রাবিরতি এবং স্টেশনের সংস্কার।
জানা গেছে, ১৯২৯ সালে উপজেলার নন্দনগাছী স্টেশনটি স্থাপিত হয় নিমপাড়া ইউনিয়নের বরকতপুর এলাকায়, যা নন্দনগাছী স্টেশন নামে পরিচিত। শতবর্ষী স্টেশনটির কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায় ২০১৫ সালের শেষের দিকে। নিয়ম অনুযায়ী এই স্টেশনে স্টেশনমাস্টার, টিকিট মাস্টার, পোর্টারম্যান, পয়েন্টসম্যান, গেটম্যানসহ জনবল ছিল ১২ জন। বর্তমানে শুধু পোর্টারম্যান পদে একজন কর্মরত আছেন। শুধু দুটি লোকাল ট্রেন সেখানে থামে।
আন্দোলনকারীদের মধ্যে সুমন নামে একজন বলেন, রেলওয়ে স্টেশনটি অনেক পুরোনো। ট্রেন থামবে বলে সংস্কার করা হয়েছে। কিন্তু একটি মাত্র লোকাল ট্রেন ছাড়া কোনো ট্রেন থামে না। এর আগে গত ১ মে স্টেশনে ট্রেন থামার দাবিতে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হয়েছিল। পরে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ১ জুন থেকে ট্রেন থামানোর আশ্বাস দিয়েছিল। কিন্তু তারা কথা রাখেনি।
সাগরদাড়ি ট্রেনের যাত্রী সুজন আলী বলেন, ট্রেন নির্ধারিত সময়ে ছেড়েছিল রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন থেকে। এরপর নন্দনগাছি স্টেশনে এলাকায় এসে থেমে যায়। ট্রেন থেকে নিচে এসে দেখি, রেললাইনে একটি লাল পতাকা টানিয়ে অবরোধ করেছেন এলাকাবাসী। এ অবরোধের ফলে দীর্ঘ এক ঘণ্টার বেশি সময় ধরে ট্রেন থেমেছিল। এতে করে ট্রেনের যাত্রীরা দুর্ভোগে পড়েন।
পশ্চিম রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) আহম্মদ হোসেন মাসুম বলেন, নন্দনগাছি রেলওয়ে স্টেশনের কাছে সাধারণ মানুষ আন্দোলন করেছেন। তারা স্টপের যে দাবিতে আন্দোলন করছেন এতে বেশ কিছু ট্রেন আটকা পড়েছিল। তবে তাদের দাবির বিষয়টি বাস্তবতা পর্যালোচনা করে বিবেচনা করা হবে।
মন্তব্য করুন