বরগুনার পাথরঘাটায় দুটি মডিফাইড মাছ ধরার ট্রলার আটক করে মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবি এবং চাঁদা না পেয়ে মাছ লুট ও ট্রলার দুটি ধ্বংসের হুমকির অভিযোগ উঠেছে দক্ষিণ স্টেশনের কোস্টগার্ড ইউনিটের সদস্যদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় উত্তেজিত জেলেরা কোস্টগার্ডের একটি মোটরসাইকেল ও একটি পিকআপ ভাঙচুর করে। পরে খবর পেয়ে পাথরঘাটা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
বুধবার (১৮ জুন) সকালে কোস্টগার্ডের একটি মোটরসাইকেল ও পিকআপ ভাঙচুর করে বিক্ষুব্ধ জেলেরা। গত মঙ্গলবার রাতে বরগুনার পাথরঘাটায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
জেলা ট্রলার মালিক সমিতি সাধারণ সম্পাদক মাসুম আকন অভিযোগ করে বলেন, ট্রলারের বৈধতা নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে তর্কাতর্কির এক পর্যায়ে তারা সংঘর্ষে জড়ালে কোস্টগার্ড সদস্যদের ছোঁড়া গুলিতে ২ জেলে গুলিবিদ্ধ হন। এসময় আতঙ্কিত হয়ে পানিতে ঝাঁপ দিলে আরও চার জেলে নিখোঁজ রয়েছেন।
তিনি বলেন, কোস্টগার্ড সদস্যরা ট্রলার ধ্বংস করতে এলে বাধা দেয় জেলেরা। এতে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এবং গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে।
জেলেদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, মঙ্গলবার রাতে বিষখালী ও বলেশ্বর নদীর সংযোগস্থল বাড়াননি খাল থেকে আলম কোম্পানি ও মাসুম কোম্পানির মালিকানাধীন দুটি ট্রলার আটক করে পাথরঘাটা দক্ষিণ স্টেশনের কোস্টগার্ড ইউনিটের সদস্যরা। বিষয়টি নিয়ে তর্ক-বিতর্কের একপর্যায়ে জেলেদের সঙ্গে কোস্টগার্ড সদস্যদের সংঘর্ষ হয়। এতে কোস্টগার্ড সদস্যদের ছোড়া গুলিতে দুই জেলে গুলিবিদ্ধ হন। আহতরা হলেন- পাথরঘাটা উপজেলার চরদুয়ানি এলাকার ইসমাইল হাওলাদার (৩৫) ও আমিনুল ইসলাম (৩২)।
ট্রলারে থাকা জেলেদের দাবি, বৈধ কাগজপত্র ও আদালতের আদেশ দেখিয়েও ট্রলার ছাড়েনি দক্ষিণ স্টেশনের কোস্টগার্ড ইউনিট। এ সময় ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে এবং না পেয়ে ট্রলারে থাকা সামুদ্রিক মাছ লুট করে নেয় তারা।
স্থানীয় মৎস্যজীবীদের অভিযোগ, কোস্টগার্ড নিয়মিতভাবে ট্রলার আটকে চাঁদা দাবি করে এবং মারধর করে। রাতের এ গুলির ঘটনায় তারা আতঙ্কে রয়েছেন এবং নিরপেক্ষ তদন্ত ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
এ দিকে পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মিজানুর রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে উভয়পক্ষকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি কালবেলাকে বলেন, জেলে ও কোস্টগার্ডদের একটা বৈঠক হয়েছে। ট্রলার মালিক সমিতি কোনো অবৈধ মাছ ধরার ট্রলার দিয়ে মাছ ধরবেন না বলে বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে। তা ছাড়া কোস্টগার্ড কর্তৃপক্ষের মোটর ও পিকআপের যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তার ক্ষতিপূরণ দেবেন ট্রলার মালিকরা।
গুলিবিদ্ধ ও নিখোঁজ জেলের বিষয়ে জানতে চাইলে তথ্য সঠিক নয়. বলে জানিয়েছেন ইউএনও মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, কেউ গুলিবিদ্ধ ও নিখোঁজ হয়নি।
মন্তব্য করুন