সাতক্ষীরা প্রেস ক্লাবে সাংবাদিকদের ওপর নারকীয় হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। মঙ্গলবার (০১ জুলাই) দুপুরে সাতক্ষীরার শহরের নিউমার্কেট মোড়ে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এদিকে, হামলার ঘটনায় প্রেস ক্লাব সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান বাদী হয়ে ১৮ জনকে জ্ঞাত ও অজ্ঞাত আরও ৩০-৪০ জনকে আসামি করে সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। এ মামলায় একজন চিহ্নিত সন্ত্রাসীকে এরইমধ্যে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
প্রেস ক্লাব সভাপতি আবুল কাসেমের মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন। এ সময় বক্তব্য রাখেন সিনিয়র সাংবাদিক কল্যাণ ব্যানার্জি, প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি মমতাজ আহমেদ বাপী, অধ্যক্ষ আশেক-ই-এলাহি, প্রেস ক্লাবের সহসভাপতি আবুল কালাম, সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ, অর্থ সম্পাদক ফরিদ আহমেদ ময়না, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক আকরামুল ইসলাম, নির্বাহি সদস্য কাজী মামুন, সাংবাদিক মশিউর রহমান ফিরোজ, তৌফিকুজ্জামান লিটু, মমিনুর রহমান, মুনসুর রহমান প্রমুখ। এ সময় সেখানে অর্ধশত সাংবাদিক উপস্থিত ছিলেন।
মানবন্ধনে সাতক্ষীরা প্রেস ক্লাবের বহু কাঙ্ক্ষিত একটি নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য ভোটের জন্য জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের আশ্বাস সব কর্মসূচি আগামী ৮ জুলাই পর্যন্ত স্থগিত ঘোষণা করা হয়।
সভাপতির বক্তব্যে আবুল কাসেম বলেন, সাংবাদিকদের দীর্ঘদিনের আকাঙ্ক্ষা প্রেস ক্লাবের একটি গ্রহণযোগ্য ভোট। এ লক্ষ্যে ধারাবাহিক ও শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চলমান রয়েছে। এ ছাড়া সাধারণ সদস্যদের প্রেস ক্লাবে যাতায়াত একটি গঠণতান্ত্রিক অধিকার। কিন্তু প্রেসক্লাবের কিছু সদস্য গঠণতন্ত্রের ধার না ধেরে একটি মনগড়া কমিটি গঠন করে সাধারণ সদস্যদের প্রেস ক্লাবে যাতায়াত অঘোষিতভাবে বন্ধ করেছে।
তিনি বলেন, সোমবার (৩০ জুন) পূর্বঘোষিত সাধারণ সভায় যোগদানের উদ্দেশ্যে প্রেস ক্লাবের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে সাধারণ সদস্যরা শান্তিপূর্ণভাবে প্রেসক্লাবে প্রবেশের আগেই রাস্তায় লাঠি, রড, হাতুড়িসহ দেশী অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীরা সাংবাদিকদের ওপর হায়েনার মতো ঝাঁপিয়ে পড়ে। এতে সাতক্ষীরা প্রেস ক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক এম বেলাল হোসাইন, সাধারণ সদস্য আমিনুর রহমান, ইদ্রিস আলীসহ অন্তত ২০-২৫ জনেরও বেশি সাংবাদিক গুরুতর আহত হন।
সামগ্রিক প্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসনের আহ্বানে মঙ্গলবার সকালে উভয় গ্রুপের নেতাদের উপস্থিতিতে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় সাতক্ষীরা প্রেস ক্লাবের একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশন গঠনের লক্ষ্যে আগামী ৮ জুলাই জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আবারও একটি সভা আহ্বানের সিদ্ধান্ত হয়।
এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন, সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ, পুলিশ সুপার মনিরুল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) বিষ্ণুপদ পাল, অতিরিক্তি জেলা ম্যাজিস্ট্রেট রিপন বিশ্বাস, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুকিত হাসান খান, জেলা এনএসআই’র উপপরিচালক আসাদুজ্জামান, ডিজিএফআরই’র সহকারী পচিালক মামুনুর রহমান, সাতক্ষীরা প্রেস ক্লাবের সভাপতি আবুল কাশেম, সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান, অপর গ্রুপের সাংবাদিক আব্দুল বারী ও মনিরুল ইসলাম মিনিসহ সরকারী কর্মকর্তারা।
এদিকে, জেলা প্রশাসন আগামী ৮ জুলাই নির্বাচন কমিশন গঠনের প্রতিশ্রুতিতে প্রেস ক্লাবের সব কর্মসূচি আপাতত স্থগিত করা হয়েছে।
এর আগে, প্রেস ক্লাবের সাংবাদিকদের ওপর নারকীয় হামলার ঘটনায় সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান বাদী হয়ে ১৮ জনকে জ্ঞাত ও আজ্ঞাত আরও ৩০-৪০ জনকে আসামি করে সাতক্ষীরা সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এরইমধ্যে এ মামলার আসামি চিহ্নিত ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী ও মাদকাসক্ত যুবক সদর উপজেলার মৃগিডাঙ্গা গ্রামের নাজমুল হুদার ছেলে সাব্বির হোসেনকে সাতক্ষীরা শহর থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামিনুল হক এক জনের গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
মন্তব্য করুন