ফেসবুকে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার আলদাদপুর গ্রামে হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় দোষীদের শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা এই দাবি জানান। প্রতিনিধি দলে ছিলেন পরিষদের কেন্দ্রীয় ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মনীন্দ্র কুমার নাথ, যুব ঐক্য পরিষদের সভাপতি শিমুল সাহা, ছাত্র ঐক্য পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সজিব সরকার ও সাংগঠনিক সম্পাদক শান্ত কুমার।
ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ি পরিদর্শন শেষে ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর সঙ্গে কথা বলেন ঐক্য পরিষদের নেতারা। তারা ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিটি পরিবারের দুঃখ-দুর্দশার কথা শোনেন এবং সান্ত্বনা জানান। এ সময় সংগঠনের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর তালিকা করা হয় এবং তাৎক্ষণিকভাবে নগদ অর্থ সহায়তাও দেওয়া হয়। একইসঙ্গে পরবর্তীতে সংগঠনের পক্ষ থেকে তাদের পাশে থাকার আশ্বাসও দেওয়া হয়।
এ সময় মনীন্দ্র কুমার নাথ বলেন, কেউ যদি অন্যায় করে থাকে, সেজন্য তার দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী শাস্তি হবে। কিন্তু একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে একটি গ্রামের মানুষের ওপর হামলা চালানো, ঘরবাড়ি ভাঙচুর, লুটপাট এমনকি গরু-ছাগল নিয়ে যাওয়ার মতো ঘটনা এককথায় নির্মমতা। দুর্ভাগ্যের বিষয়, ঘটনার এতদিন পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।
তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা সারা দেশে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। দুজন উপদেষ্টা এখানে এসে ক্ষতিগ্রস্তদের অবস্থা দেখতে পারলেন না। সরকার এখানে আসতে পারল না, প্রশাসনের লোক আসতে পারলো না। এটা দুর্ভাগ্যজনক।
হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের এই ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমরা এসেছি স্বচক্ষে সত্য ঘটনা দেখে পুনরায় সেটা তুলে ধরার জন্য। আমরা হঠকারিতায় বিশ্বাস করি না। আমরা চাই- একটি সুন্দর বাংলাদেশ, এই মাতৃভূমি আমাদের। এখানে আমরা বড় হবো এবং আমাদের ছেলেমেয়েরা বড় হবে। কিন্তু কেন এখানে আমার ঘরের টিন ভেঙে দেবে, আমার ঘর লুটপাট করবে।
এ ঘটনার বিচার দাবি করে তিনি বলেন, ন্যক্কারজনক ও জঘন্য এ ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
যুব ঐক্য পরিষদের সভাপতি শিমুল সাহা বলেন, হামলাকারীরা ১৭টি পরিবারকে নিঃস্ব বানিয়ে ফেলেছে। এর আগে যতগুলো হামলার ঘটনা ঘটেছে, সেসব ঘটনার মধ্যে একটির সঠিক বিচার হলেও এ ধরনের ঘটনা আর ঘটতো না। আওয়ামী লীগের আমলেও এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে, কিন্তু আমরা বিচার পাইনি। বিচারহীনতার সংস্কৃতি বন্ধ না হলে এ ধরনের হামলার ঘটনা চলতে থাকবে।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের রংপুর মহানগর কমিটির আহ্বায়ক অলক নাথ, যুব ঐক্য পরিষদের রংপুর জেলা সভাপতি সুবাস চন্দ্র দাস, মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক অশোক রায়সহ হিন্দু সম্প্রদায়ের বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা।
মন্তব্য করুন