কুড়িগ্রামের চিলমারীতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে আমেরিকান নাগরিকত্ব নিতে দীর্ঘদিন বিনা অনুমতিতে অনুপস্থিত থাকার অভিযোগ উঠেছে। তিনি প্রতি বছর সামান্য ছুটি নিয়ে দীর্ঘদিন আমেরিকায় অবস্থান করেও সরকারি বেতন-ভাতা উত্তোলন করে আসছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার ফকিরকুটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। ওই শিক্ষকের নাম মোছা. মর্জিনা বেগম। তার স্বামী-ছেলে এবং ছেলের বউ ইতোমধ্যে আমেরিকায় নাগরিকত্ব পেয়েছেন বলে জানা যায়। বিষয়টি নিয়ে শিক্ষক সমাজ ও সচেতন মহলের মাঝে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় উঠলেও নীরব ভূমিকায় রয়েছে কর্তৃপক্ষ।
জানা গেছে, উপজেলার থানাহাট ইউনিয়ানাধীন ফকিরেরকুটি এলাকার রানু মিয়া তার ছেলের সুবাদে আমেরিকায় গিয়ে নাগরিকত্ব নেন। রানু মিয়ার স্ত্রী মর্জিনা বেগম স্থানীয় ফকিরেরকুটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। তিনিও এখন নাগরিকত্ব অর্জনের জন্য নিয়মিত প্রতি বছর নির্দিষ্ট সময়ে আমেরিকায় অবস্থানের জন্য নামে মাত্র ছুটি নিয়ে দীর্ঘদিন বিনা ছুটিতে সে দেশে অবস্থান করেন। দীর্ঘদিন কর্মস্থলে অনুপস্থিত থেকেও বেতন-ভাতাসহ যাবতীয় সুবিধা ভোগ করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
সরেজমিনে বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে, শিক্ষক হাজিরা খাতায় গত ২ জুন তারিখ পর্যন্ত মর্জিনা বেগমের স্বাক্ষর রয়েছে। ৩ জুন তারিখ হতে অদ্যাবধি হাজিরা খাতায় তার নামের স্থান ফাকা রয়েছে। ২০২৪ সালের ২২ মার্চ থেকে ১ জুন পর্যন্ত তিনি বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত ছিলেন বলেও জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সহকারী শিক্ষক মর্জিনা বেগম প্রধান শিক্ষকের নিকট ৩ মাসের ছুটি চেয়েছিলেন। এটি প্রধান শিক্ষকের এখতিয়ারবহির্ভূত হওয়ায় তিনি ছুটি দেননি। পরে ওই শিক্ষিকা রংপুর বিভাগীয় উপপরিচালকের নিকট হতে ২৪ জুন থেকে ১৮ জুলাই ২০২৫ পর্যন্ত মোট ২৫ দিনের ছুটি অনুমোদন নিয়েছেন, যার কাগজ গত ২৫ জুলাই তারিখে স্কুলে পৌঁছেছে।
প্রধান শিক্ষক আব্দুল লতিফ জানান, মর্জিনা বেগমের ছুটির বিষয়ে আমি কিছু জানি না, সব উপরওয়ালা জানেন। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস থেকে ২৫ দিন ছুটি অনুমোদনের একটি পত্র পেয়েছি।
সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার সাহেদুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার (চ.দা.) মো. কামরুজ্জামান জানান, শিক্ষক মর্জিনা বেগম ২৪ জুন থেকে হতে ১৮ জুলাই পর্যন্ত ২৫দিন ছুটি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে অসুস্থ স্বামীকে দেখতে গেছেন। পরবর্তী সময়ের জন্য ছুটি বৃদ্ধি করতে না পারলে চাকরিবিধি মোতাবেক শাস্তি হবে।
মন্তব্য করুন