চট্টগ্রামের পটিয়ায় বিভিন্ন ব্যাংকে অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছেন এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণ থেকে মুক্ত হওয়া ছয় ব্যাংকের চাকরিচ্যুত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এতে উপজেলার ২৫টি ব্যাংকের কার্যক্রম অন্তত চার ঘণ্টা ধরে বন্ধ হয়ে যায়।
রোববার (১০ আগস্ট) সকাল ৯টা থেকে দুপুর একটা পর্যন্ত ব্যাংকগুলোর প্রবেশপথ অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকেন অবরোধকারীরা। একপর্যায়ে তারা চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কেও কিছু সময়ের জন্য অবরোধ করেন। এ সময় গ্রাহকরা ব্যাংকের ভেতরে ঢুকতে পারেননি। ফলে স্থবির হয়ে পড়ে ব্যাংকের লেনদেন ও অন্যান্য সেবা। আন্দোলনকারীরা গ্রাহকদের এটিএম বুথে প্রবেশেও বাধা দেন।
স্থানীয় সাংবাদিক আবদুল হাকিম জানান, চাকরি পুনর্বহালের দাবিতে ব্যাংকিং কার্যক্রম অবরোধ স্লোগান লেখা ব্যানার হাতে নিয়ে আন্দোলনকারীরা দুপুর ১টা পর্যন্ত অবরোধ চালিয়ে যান। এর আগে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পটিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারহানুর রহমান ও পুলিশ কর্মকর্তারা গিয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলেন। পরে আন্দোলনকারীদের দাবি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছানোর আশ্বাসে তারা অবরোধ তুলে নেন। পরে দুপুর একটার দিকে বিভিন্ন ব্যাংকে ব্যাংকিং কার্যক্রম শুরু হয়।
জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বাংলাদেশ ব্যাংক ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক ও ইউনিয়ন ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দেয়। নতুন পর্ষদ গঠনের পর এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণকালীন সময়ে নিয়োগ পাওয়া অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারীকে ছাঁটাই করা হয়।
চাকরিচ্যুতদের অভিযোগ, চট্টগ্রামের বাসিন্দা ও পটিয়ার মানুষদের বিশেষভাবে টার্গেট করে বিনা নোটিশে চাকরি থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। এতে প্রায় সাত হাজার কর্মী একসঙ্গে বেকার হয়ে পড়েছেন। বয়সসীমা পেরিয়ে যাওয়ায় অনেকের আর নতুন করে চাকরি পাওয়ার সুযোগ নেই। তাদের আবার চাকরিতে পুনর্বহাল করা হোক।
ইউএনও ফারহানুর রহমান জানান, ‘গ্রাহকের দুর্ভোগের কথা ভেবে আন্দোলনকারীদের ব্যাংকের প্রবেশপথ থেকে সরে যেতে অনুরোধ করেছি। প্রথমে সোনালী ব্যাংকের সামনে থেকে সরে যান, পরে ধাপে ধাপে অন্য ব্যাংকগুলোর সামনেও অবরোধ তুলে নেন।’
পটিয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরিফুল ইসলাম জানান, ‘আন্দোলনকারীরা কিছু সময় মহাসড়কে অবস্থান নিলেও পরে নিজেরাই সরে যান।’
মন্তব্য করুন