নারায়ণগঞ্জে মায়ের জন্য ওষুধ কিনতে বাসা থেকে বেরিয়ে আর ফেরেননি মো. ইয়াছিন (১৭) নামের এক কিশোর। তিন দিন পর গত বুধবার (১৩ আগস্ট) সকালে তার মরদেহ সিদ্ধিরগঞ্জের ডিএনডি লেক থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। এটি একটি হত্যাকাণ্ড বলে ধারণা চিকিৎসকের।
নিহত মো. ইয়াছিন (১৭) সোনারগাঁ উপজেলার কাঁচপুর এলাকার সৌদিপ্রবাসী মোহাম্মদ আলীর ছেলে। সে শহরের পাইকপাড়া নয়াপাড়া এলাকার বেইজ স্কুলে পড়াশোনা করত। পড়াশোনার সুবিধার্থে মা আফরিনা নাসরিন তার তিন সন্তানকে নিয়ে চাষাঢ়ায় ভাড়া থাকেন।
নিহতের মামা মনসুর রহমান জানান, গত জুলাই মাসে প্রকাশিত এসএসসি পরীক্ষার ফলে ইয়াছিন জিপিএ ৪.৬২ পয়েন্ট পেয়ে পাস করে। তিন ভাই-বোনের মধ্যে সে সবার ছোট।
নিহতের মামাতো ভাই মুনতাসির রহমান জিহাদ জানায়, গত সোমবার (১১ আগস্ট) সন্ধ্যায় ৫০ টাকা নিয়ে ইয়াছিন তার মায়ের জন্য ওষুধ কিনতে বাসা থেকে বের হয়। ওষুধ আনতে তার ১০ মিনিটের বেশি সময় লাগার কথা নয়। কিন্তু দীর্ঘ সময় পার হলেও সে বাসায় না ফেরায় তার কাছে থাকা মোবাইলে ফোন করলে রিসিভ করা হয়নি। রাত ২টা পর্যন্ত তার মোবাইল ফোন সচল ছিল। এরপর ফোন বন্ধ ও তাকে না পেয়ে রাতেই তার মা সদর মডেল থানায় একটি নিখোঁজ জিডি করেন। ছেলেকে হারিয়ে মা এতটাই মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন যে, তার সঙ্গে কথা বলার মতো অবস্থায় তিনি নেই।
এদিকে ময়নাতদন্ত শেষে বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক হায়দার আলী শিমুল বলেন, নিহতের মাথা ও বুকে আঘাতের আলামত পাওয়া গেছে। পানিতে ডুবে মৃত্যু হলে পেটে যে পানির উপস্থিতি পাওয়া যায় তার ক্ষেত্রে তেমনটি পাইনি। এটি হত্যাকাণ্ড বলে মনে হচ্ছে।
এ বিষয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক ওয়ালী সওদাগর বলেন, মরদেহ উদ্ধারের পর বুধবার রাতে থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে। পরিবারের ভাষ্যমতে, তার সঙ্গে মোবাইল ফোন থাকার কথা। কিন্তু মরদেহের সঙ্গে ফোনটি পাইনি। জুতা পেয়েছি এক পায়ে একটি। লাশের অবস্থা অনুযায়ী অন্তত ২৪ ঘণ্টা পানিতে ছিল বলে মনে হচ্ছে। গুরুত্বের সঙ্গে ঘটনাটি তদন্ত করছি। হত্যাকাণ্ড হলে তদন্তে বেরিয়ে আসবে।
মন্তব্য করুন