

বগুড়ার পুত্রবধূ সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে কাঁদছেন দলের নেতাকর্মীরা। বগুড়া জেলাজুড়ে নেমে এসেছে গভীর শোক। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের স্মৃতিবিজড়িত গাবতলী উপজেলার বাগবাড়ি এলাকাসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে শোকাহত মানুষের ভিড় দেখা গেছে।
সেইসঙ্গে বগুড়া শহরের নবাববাড়ি সড়কের বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের আশপাশের সব দোকানপাট বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। কোনো দোকানপাট খোলেনি।
খালেদা জিয়ার মৃত্যুর খবরে বগুড়ায় বিএনপির সব কর্মসূচি স্থগিত করা হয়েছে। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে কালো পতাকা উত্তোলন, কোরআনখানি ও দোয়ার আয়োজন করা হয়েছে।
দলীয় নেতাকর্মীরা বলছেন, এটি শুধু একজন নেত্রীর বিদায় নয়, এটি একটি যুগের সমাপ্তি। তবে শোক শুধু দলীয় গণ্ডিতে সীমাবদ্ধ নেই। রাজনীতির সঙ্গে সরাসরি যুক্ত নন এমন অনেক মানুষও এই মৃত্যুতে আবেগাপ্লুত।
বগুড়ার পুত্রবধূ হিসেবে খালেদা জিয়ার সঙ্গে জেলার মানুষের সম্পর্ক ছিল ঘরোয়া ও আত্মিক। দিনাজপুরের মেয়ে খালেদা খানম ১৯৬০ সালে বগুড়ার গাবতলীর বাঘবাড়ি গ্রামে পুত্রবধূ হিসেবে আসেন। তখন তার স্বামী জিয়াউর রহমান পাকিস্তান সেনাবাহিনীর একজন ক্যাপ্টেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় ও পরবর্তী রাজনৈতিক জীবনে তিনি সংসার ও সন্তানদের দায়িত্ব সামলানো একজন গৃহবধূ হিসেবেই ছিলেন দীর্ঘদিন।
বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুর সংবাদ পাওয়ার পরপরই বগুড়া নেতাকর্মীরা দলীয় কার্যালয়ে ছুটে আসেন।
মঙ্গলবার সকালে জেলা বিএনপির কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, বিভিন্ন এলাকায় নেতাকর্মীদের কান্নায় ভেঙে পড়েছেন। এ সময় জেলা বিএনপির সভাপতি রেজাউল করিম বাদশা, আলী আজগর তালুকদার হেনা, যুবদলের সভাপতি জাহাঙ্গীর হোসেন তারাও দলীয় অফিসে বসে কাঁদছেন।
তার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন বগুড়া জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক পৌর মেয়র রেজাউল করিম বাদশা এবং ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন।
জেলা বিএনপির সভাপতি রেজাউল করিম বাদশা কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া কেবল আমাদের নেত্রী ছিলেন না, তিনি ছিলেন আমাদের মায়ের মতো। বগুড়ার মানুষের সঙ্গে তার আত্মার সম্পর্ক। তার মৃত্যুতে আমরা গণতন্ত্রের মাকে হারালাম। সত্যিকার অর্থেই আমরা এতিম হয়ে গেলাম। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রামে তার আপসহীন নেতৃত্ব ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।
ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন বলেন, ম্যাডাম অসুস্থ অবস্থায়ও দলের ও দেশের মানুষের খোঁজ নিতেন। উন্নত চিকিৎসার জন্য আমরা বারবার দাবি জানিয়েছি। কিন্তু সুচিকিৎসার সুযোগ না দিয়েই তাকে চলে যেতে হলো। এই অপূরণীয় ক্ষতি কোনোদিন পূরণ হওয়ার নয়।
পরে দলীয় কার্যালয়ে কালো পতাকা উত্তোলন করা হয়। অনেককেই কান্নায় ভেঙে পড়তে দেখা যায়। জেলা বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, মরহুমার বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনায় শহরের বায়তুর রহমান সেন্ট্রাল মসজিদে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে।
এ ছাড়াও বিভিন্ন এতিমখানা ও মাদ্রাসায় কোরআন খতম করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন