কেন্দুয়া(নেত্রকোনা) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৭ জুন ২০২৩, ১১:৫৫ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে ব্যস্ত কেন্দুয়ার কামারশিল্পীরা

আগুনে লোহা গলাচ্ছেন এক কামার শিল্পী। ছবি : কালবেলা
আগুনে লোহা গলাচ্ছেন এক কামার শিল্পী। ছবি : কালবেলা

নেত্রকোনার কেন্দুয়ায় আসন্ন ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে বেড়ে গেছে কামারশিল্পীদের ব্যস্ততা। কামারশিল্পীরা দিন রাত নিরলস পরিশ্রম করে মাংস কাটার বিভিন্ন ধরনের যন্ত্রপাতি তৈরি করে চলেছেন।

সরেজমিনে উপজেলা সদরের দিগদাইর মোড় এলাকায় চোখে পড়ে কামারশিল্পীদের ব্যস্ততম জীবন চিত্র। তারা গরম লোহা পিটিয়ে পরিশ্রমের ফসল হিসেবে সেই লোহাকে একটা নির্দিষ্ট বস্তুতে পরিণত করছে। আর সেই লোহা থেকে তৈরি যন্ত্রপাতি ব্যবহার হয় দৈনন্দিন জীবনযাপনের কাজসহ ঈদুল আজহার কোরবানির পশুর মাংস কাটতে। এ সময়ে বিভিন্ন ধরনের যন্ত্রপাতি তৈরিতে কামারদের মধ্যে প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে যায়। তাদের নিরলস পরিশ্রমের ফসল হিসেবে মুসলমানদের ধর্মীয় উৎসবের জন্য তৈরি করে এসব লোহার যন্ত্রপাতি।

কামারশিল্পীদের বেশিরভাগই হিন্দু ধর্মাবলম্বী। তাদের অনেকেরই পৈতৃক সূত্রে পাওয়া এ পেশা। কামারদের তৈরি যন্ত্রগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে দা, বটি, ছুঁরি, চাপাতি, কোদাল, কুড়াল ছাড়াও আরও বিভিন্ন ধরনের যন্ত্রপাতি। যা ঈদুল আজহার কোরবানির জন্য খুবই প্রয়োজনীয়। লোহার দাম বৃদ্ধি, লাগামহীন বাজার ব্যবস্থা, পরিশ্রমের তুলনায় কমমূল্য পাওয়ায় এসব সঙ্গত কারণেই বছরের বেশিরভাগ সময়ই কামারশিল্পীদের কর্মহীন জীবন চালাতে হয়।

বর্তমান বাজারে স্টেইনলেস স্টিলের যন্ত্রপাতি থাকায় কামারশিল্পীদের তৈরি যন্ত্রপাতির ব্যবহার কমে যাওয়ায় কামাররা ধীরে ধীরে তাদের পৈতৃক পেশা হারাতে বসেছে। তবে ঈদ উপলক্ষে কাজকর্ম বেশি থাকায় বর্তমানে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। উপজেলার পৌর সদরের কামারশিল্পী সুদন কর্মকার জানান, বছরের বেশিরভাগ সময়ই আমাদের কাজ না থাকায় অলস সময় কাটাতে হয়। বহু কষ্টে ছেলেমেয়ে নিয়ে দিনযাপন করি আর ঈদুল আজহার জন্য অপেক্ষা করি। ঈদুল আজহা এলেই মনে হয় যেন আমাদের ভাগ্যের সুদিন এসেছে। তাই নিরলস পরিশ্রম করে তৈরি করি বিভিন্ন ধরনের যন্ত্রপাতি।

উপজেলার রোয়াইলবাড়ি ইউনিয়নের ফতেপুর গ্রামের কামারশিল্পী অরুন কর্মকার জানান, বয়স হয়েছে আমার। জীবনের প্রায় শুরু থেকে বংশানুক্রমিকভাবে এ কাজ করছি। এক সময় কেন্দুয়া উপজেলার মধ্যে ফতেপুর গ্রামে সবচেয়ে বেশি কামার ছিল। কাল পরিক্রমায় এই শিল্পটি হারাতে বসেছে। আগে এমন অবস্থার শিকার হইনি কখনো। সারা বছরই কাজ থাকত। কিন্তু বর্তমানে একটা ঈদের জন্য আমাদের সারা বছর অপেক্ষা করে থাকতে হয়। খেয়ে না খেয়ে দিনযাপন করতে হয়। আর ভাবি আবার কখন আসবে সেই ঈদ। অপেক্ষার প্রহর গুনতে গুনতে ঈদ আসে ঈদ যায় তবু আমাদের জীবনের কোনো পরিবর্তন হয় না। তারপরও ঈদ এলেই নিরলসভাবে কাজ শুরু করি মুসলমানদের ঈদ অনুষ্ঠানের জন্য।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

২০২৬ ফুটবল বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিত করল আরও ৫ দেশ

দেশে ফিরেছেন প্রধান উপদেষ্টা

রান্নায় মরিচ বেশি হলে যা করবেন

আজ ঢাকার আবহাওয়া যেমন থাকবে

নেইমারকে পেছনে ফেলে মেসির বিশ্বরেকর্ড

জবাব দিলেন সোনাক্ষী

অগ্নিকাণ্ডে নিহতদের পরিবারকে এক লাখ করে টাকা দেবে বিএনপি

চাকসুর ভোটগ্রহণ শুরু, ১০ মিনিটে দিতে হবে ৪০ ভোট

ইস্টার্ন ব্যাংকে ক্যারিয়ার গড়ার সুযোগ

অর্ধশতাধিক রাজনীতিকের ভিসা বাতিল করল যুক্তরাষ্ট্র

১০

ঘুম থেকে উঠে আগে পানি খাবেন, না ব্রাশ করবেন—জানালেন চিকিৎসক

১১

রাজধানীতে আজ কোথায় কী

১২

ইসলামিক রিলিফ বাংলাদেশে ইন্টার্ন করার সুযোগ

১৩

পুয়ের্তো রিকোকে গোলবন্যায় ভাসিয়ে আর্জেন্টিনার জয়

১৪

চীনকে ঠেকাতে অভিনব উদ্যোগ ভারতের

১৫

বুধবার রাজধানীর যেসব এলাকার মার্কেট বন্ধ

১৬

১৫ অক্টোবর : আজকের নামাজের সময়সূচি

১৭

৩৫ বছর পর আজ চাকসুর ভোট

১৮

আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীতে বড় নিয়োগ

১৯

রাজস্থানে ভয়াবহ দুর্ঘটনা, বাসে আগুনে পুড়ে ২০ জনের মৃত্যু

২০
X