কয়েজ দিনের আনন্দ-উৎসব শেষে বিদায় নিলেন দেবী দুর্গা। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় এই উৎসবের সমাপ্তি ঘটল বিজয়া দশমীর বিসর্জনের মধ্য দিয়ে।
বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) বিকেল ৩টা থেকে রাজশাহীর পদ্মা নদীর বিভিন্ন ঘাটে প্রতিমা বিসর্জনের আয়োজন করা হয়।
রাজশাহী নগরীর ১০৩ টি মণ্ডপের মধ্যে ৮০টি মণ্ডপের দেবী দুর্গা নগরীর ফুদকিপারা পদ্মা নদীর ঘাটে বিসর্জন দেন ভক্তরা। বাকিগুলো মন্নুজান ঘাটসহ চারটি ঘাটে বিসর্জন দেওয়া হয়।
মহাষষ্ঠী থেকে শুরু হয়ে মহাসপ্তমী, অষ্টমী, নবমীর পূজা শেষে দশমীতে ভক্তরা ভক্তি আর অশ্রুভেজা চোখে বিদায় জানান দেবী দুর্গাকে। মণ্ডপে মণ্ডপে দেবীর প্রতি অঞ্জলি ও প্রসাদ গ্রহণ শেষে শোভাযাত্রার মাধ্যমে প্রতিমা নিয়ে যাওয়া হয় নদীর ঘাটে। ঢাকের বাদ্য, শঙ্খধ্বনি আর উলুধ্বনিতে মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো নগরী।
শাস্ত্র মতে, এ বছর দেবী এসেছিলেন গজে চড়ে। বিদায় নিলেন দোলায় চড়ে কৈলাসে। ভক্তরা বিশ্বাস করেন, দেবীর এই আগমন ও প্রস্থান মানুষের সুখ-দুঃখ, দুঃসময় ও শুভাশুভের ইঙ্গিত বহন করে।
রাজশাহী মহানগর ও জেলার ৪৭০টি মণ্ডপ থেকে প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়। নগরীর সাহেববাজার, সোনাদিঘি, কাটাখালী, বুলনপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় শোভাযাত্রা বের হয়। বিসর্জন ঘিরে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেয়া হয় তিন স্তরের নিরাপত্তা। পুলিশের পাশাপাশি র্যাব, আনসার ও স্বেচ্ছাসেবকেরা দায়িত্ব পালন করেন।
বিসর্জন উপলক্ষে পদ্মা পাড়জুড়ে ছিল ভক্ত-দর্শনার্থীদের ঢল। অনেকেই বিসর্জনের মুহূর্তকে ক্যামেরায় বন্দি করতে ভিড় জমান। ভক্তরা বলেন, দুর্গাপূজা শুধু ধর্মীয় উৎসব নয়, এটি আনন্দ আর মিলনের উৎসব। প্রতি বছর এই উৎসব মানুষকে ভ্রাতৃত্ব ও শান্তির বার্তা দেয়।
দেবীর বিদায়ে ভক্তদের হৃদয়ে ছিল শূন্যতার বেদনা, তবে একই সঙ্গে ছিল আশার আলো। ভক্তরা প্রার্থনা করেছেন, আগামী বছর আবারও দেবী দুর্গা মর্ত্যে ফিরে আসবেন নতুন শক্তি আর আশীর্বাদ নিয়ে।
মন্তব্য করুন