শওকত হাসান, তাহিরপুর (সুনামগঞ্জ)
প্রকাশ : ০৪ অক্টোবর ২০২৫, ১১:০৫ এএম
অনলাইন সংস্করণ

বালু লুটে বিপর্যয়ের মুখে হাওরাঞ্চলের কৃষি ও পরিবেশ

অবৈধভাবে চলছে বালু উত্তোলন। ছবি : কালবেলা
অবৈধভাবে চলছে বালু উত্তোলন। ছবি : কালবেলা

সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে অবস্থিত শান্তিপুর নদী। এই নদীটি উপজেলার হাওরগুলোর জন্য আগাম বন্যার হুমকি। প্রায় ৩৭ বছর আগে পাহাড়ি ঢলে ভেসে আসা বালু আর পলি পড়ে ভরাট হওয়ায় আগাম বন্যা থেকে রক্ষা পায় হাওরবাসী।

কিন্তু বিগত এক বছরে নদী থেকে শত কোটি টাকার বালু লুট করেছে একটি প্রভাবশালী মহল। এই অবৈধ বালু উত্তোলনের ফলে উপজেলার বৃহত্তম শনি ও মাটিয়ান হাওর ভয়াবহ ঝুঁকিতে পড়েছে। বিশেষ করে আগাম বন্যার আশঙ্কায় কৃষকদের দুশ্চিন্তা আরও বেড়েছে।

হাওরপাড়ের কৃষকরা জানান, প্রায় ৩৭ বছর আগে প্রতিবছর আগাম বন্যা থেকে ফসল রক্ষায় ফাল্গুন মাসে শান্তিপুর নদীর মুখে বিকল্প ফসল রক্ষা বাঁধ দেওয়া হতো। তবে ১৯৮৮ সালের ভয়াবহ বন্যায় মেঘালয় পাহাড় থেকে প্রচুর বালু নেমে এসে নদীমুখ প্রাকৃতিকভাবেই ভরাট হয়ে যায়। এর ফলে আর বাঁধ দেওয়ার প্রয়োজন হয়নি।

কৃষকরা অভিযোগ করেন, একবছর ধরে বালুদস্যুরা ওই নদীমুখ থেকে বিপুল বালু তুলেছে। এতে শনির ও মাটিয়ান হাওরের ফসল রক্ষাবাঁধ আবারও ঝুঁকির মুখে পড়েছে।

মাটিয়ান হাওর পাড়ের বড়দল গ্রামের ইউপি সদস্য জুয়েল মিয়া বলেন, শান্তিপুর নদী উপজেলার সর্ববৃহৎ শনি ও মাটিয়ান হাওরের প্রবেশমুখ। একবার নদীর মুখ পুরোপুরি খুলে গেলে প্রতিবছরই আগাম বন্যায় হাওরের ফসল তলিয়ে যাবে।

স্থানীয় পরিবেশকর্মী আবুল হোসেন, শান্তিপুর এলাকার রফিকুল ইসলাম ও মুজিবুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, বিগত সময়ে শান্তিপুর নদী থেকে কেউ বালু তুলতে সাহস পায়নি। কিন্তু বর্তমানে ইজারা ছাড়াই বালু লুটের উৎসব শুরু হয়েছে। প্রভাবশালী একটি চক্র প্রতিদিন অবাধে নদী থেকে বালু উত্তোলন করছে, যা হাওরাঞ্চলের কৃষি, প্রকৃতি ও পরিবেশের জন্য মারাত্মক হুমকিতে পরিণত হয়েছে।

তারা আরও জানান, প্রশাসনের নাকের ডগায় প্রতিদিনই বালুখেকো চক্র ছোট ছোট নৌকায় উত্তোলিত বালু নিয়ে দক্ষিণ বড়দল ইউনিয়নের টাকাটুকিয়া, কামারকান্দি, রামেরশ্বরপুর, তাহিরপুর সদর ইউনিয়নের চিকসা, জামলাবাজ, গাজিপুর এবং উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের বালিয়াঘাট ও তেলিগাঁও এলাকায় উঁচু স্থানে মজুদ রাখে। পরে রাতে ১০ থেকে ১৫ হাজার ঘনফুট ধারণক্ষমতা সম্পন্ন বাল্কহেডে লোড করে দেশের বিভিন্ন জেলায় পাচার করা হয়।

অবৈধ বালু উত্তোলন প্রসঙ্গে তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মেহেদী হাসান মানিক বলেন, আমি এখানে নতুন এসেছি। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি অভিযান পরিচালনা করেছি। অনেককে জেল-জরিমানা করা হয়েছে। অবৈধভাবে বালু উত্তোলন কোনোভাবেই বরদাশত করা হবে না। প্রশাসন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ঢাকা-১৩ আসনে ধানের শীষের সমর্থনে যুবদলের গণমিছিল

নতুন জোটের ঘোষণা দিল এনসিপি

কড়াইল বস্তিতে আগুন, তারেক রহমানের সমবেদনা

কড়াইল বস্তিতে আগুনের ঘটনায় প্রধান উপদেষ্টার উদ্বেগ ও সমবেদনা 

গণভোট অধ্যাদেশ জারি করে গেজেট প্রকাশ

জেসিআই ঢাকা ইউনাইটেডের ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলেন মাসউদ

কড়াইল বস্তির আগুন নিয়ন্ত্রণে

চীনা দূতাবাস কর্মকর্তার সঙ্গে চৌদ্দগ্রাম জামায়াত নেতাদের মতবিনিময়

নুরুদ্দিন আহম্মেদ অপুর সঙ্গে সেলফি তুলতে মুখিয়ে যুবসমাজ

অগ্রণী ব্যাংকের লকারে শেখ হাসিনার ৮৩২ ভরি স্বর্ণ

১০

শুভর বুকে ঐশী, প্রেম নাকি সিনেমার প্রচারণা?

১১

৭০৮ সরকারি কলেজকে চার ক্যাটাগরিতে ভাগ

১২

ইউএস বাংলার সাময়িকীর কনটেন্ট তৈরি করবে অ্যানেক্স কমিউনিকেশনস

১৩

সাদিয়া আয়মানের সমুদ্র বিলাশ

১৪

পৌরসভার পরিত্যক্ত ভবনে মিলল নারীর মরদেহ 

১৫

কড়াইলের আগুন নিয়ন্ত্রণে না আসার কারণ জানাল ফায়ার সার্ভিস

১৬

প্রশাসনের ৭ কর্মকর্তার পদোন্নতি

১৭

যুক্তরাষ্ট্রে যোগাযোগ ও মিডিয়া কনফারেন্সে জুলাই অভ্যুত্থান নিয়ে আলোচনা

১৮

এবার জুবিনের মৃত্যু নিয়ে উত্তাল বিধানসভা

১৯

‘সুখবর’ পেলেন বিএনপির আরেক নেত্রী

২০
X