ডিমলা (নীলফামারী) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৬ অক্টোবর ২০২৫, ০৬:১০ পিএম
আপডেট : ০৬ অক্টোবর ২০২৫, ০৬:১৬ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

কখন গিলে নেয় ভিটেমাটি, ভাঙনের শঙ্কায় তিস্তাপাড়ের মানুষ

নীলফামারীর ডিমলার তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত। ছবি : কালবেলা
নীলফামারীর ডিমলার তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত। ছবি : কালবেলা

উজানের পাহাড়ি ঢল ও টানা ভারী বৃষ্টির কারণে কয়েকদিন তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপরে প্রবাহিত হয়ে নীলফামারীর ডিমলার তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়। এখন পানি নেমে যাওয়ায় কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে, কিন্তু স্বস্তির জায়গা নিয়েছে ভাঙনের ভয়। নদীর পানি কমতে শুরু করায় তীরের মাটি সরে গিয়ে অনেক স্থানে ভাঙন শুরু হয়েছে।

ফলে তিস্তাপাড়ের মানুষ এখন ভয়ে দিন কাটাচ্ছেন- কখন নদী গিলে নেয় তাদের ভিটেমাটি।

সোমবার (০৬ অক্টোবর) দুপুর ১২টার পর ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানিপ্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ০৫ সেন্টিমিটার, যা বিপৎসীমা ৫২ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটারের ১০ সেন্টিমিটার নিচে।

এর আগে রোববার (০৫ অক্টোবর) রাত ১১টায় পানিপ্রবাহ ছিল ৫২ দশমিক ৫০ সেন্টিমিটার, যা বিপৎসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার ওপরে ছিল। তিস্তার পানি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ব্যারেজের ৪৪টি গেট খুলে রেখেছে কর্তৃপক্ষ।

পানি নামার পর ডিমলা উপজেলার পূর্ব ছাতনাই, খগাখড়িবাড়ি, টেপাখড়িবাড়ি, খালিশা চাপানি, ঝুনাগাছ চাপানি ও গয়াবাড়ি ইউনিয়নের অধিকাংশ নিম্নাঞ্চলে পানি কিছুটা কমেছে। তবে নতুন করে নদীভাঙন দেখা দিয়েছে বিভিন্ন স্থানে। অনেকের আবাদি জমির পাশে নদীর পাড় ধসে পড়ছে, কোথাও কোথাও বসতভিটে হুমকির মুখে পড়েছে।

পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়নের জুলহাস আলী বলেন, ‘রোববার রাতে হঠাৎ করে তিস্তার পানি বাড়ায় ঘরবাড়ি ডুবে গিয়েছিল। সোমবার পানি কমেছে, কিন্তু এখন নদী পাড়ে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভয়ে আছি, কখন নদী আমাদের ঘরটাও নিয়ে যায়।’

আরেক বাসিন্দা হজরত আলী বলেন, ‘তিস্তার পানি বাড়লে যেমন ভয়, কমলেও ভয়। গতরাতে পানি ঘরে ঢুকেছিল, আজ নামছে- কিন্তু পাড়ে ফাটল ধরেছে। এখন দিন-রাত ভাঙনের ভয়।’

এদিকে ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) পানি পরিমাপক নূরুল ইসলাম জানান, রোববার সন্ধ্যা থেকে তিস্তার পানি বাড়তে শুরু করে। রাত ১১টায় বিপৎসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার ওপরে ছিল। সোমবার দুপুরে তা বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার নিচে নেমে এসেছে।

ডালিয়া পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী বলেন, ‘তিস্তার পানি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। বাড়ার সম্ভাবনা নেই, বরং নিম্নাঞ্চলের পানি দ্রুত নামছে। তবে পানি নামার সময়ই সবচেয়ে বেশি ভাঙন দেখা দেয়। তাই আমরা ঝুঁকিপূর্ণ জায়গাগুলো নজরদারিতে রেখেছি।’

তিনি জানান, তিস্তা ব্যারেজের আশপাশের পাড় রক্ষায় বালুর বস্তা ও জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে, যাতে ভাঙনের ঝুঁকি কমানো যায়।

অন্যদিকে ডিমলা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মীর হাসান আল বান্না বলেন, ‘তিস্তা তীরবর্তী এলাকায় এখন রোপা আমন, চিনাবাদাম ও শাকসবজির আবাদ চলছে। পানি যদি আরও তিন থেকে চার দিন স্থায়ী থাকত, তাহলে ব্যাপক ক্ষতি হতো। তবে পানি দ্রুত নেমে গেলে ক্ষতির আশঙ্কা কমবে।’

তিনি জানান, যেসব জমিতে পানি দাঁড়িয়ে ছিল, সেসব এলাকায় ফসলের রোগবালাই ছড়ানোর ঝুঁকি রয়েছে। কৃষি বিভাগ মাঠপর্যায়ে পর্যবেক্ষণ চালিয়ে যাচ্ছে এবং কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

রোববার রাজধানীর যেসব মার্কেট বন্ধ

শুটিংয়ের প্রলোভনে মডেলকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, অতঃপর...

কেয়ামতের দিন যে ৩ ব্যক্তির বিরুদ্ধে স্বয়ং মহান আল্লাহ বাদী হবেন

বাম চোখ লাফালে কী হয়? যা বলছেন বিশেষজ্ঞ আলেম

২৩ নভেম্বর : আজকের নামাজের সময়সূচি

লবণ নাকি চিনি, কোনটি হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়াতে পারে?

হল ত্যাগের নির্দেশ, ঢাবিশিক্ষার্থীদের প্রতি তাসনিম জুমার যে অনুরোধ

ভূমিকম্প আতঙ্কে হল ছেড়ে খোলা আকাশের নিচে অবস্থান ইডেন শিক্ষার্থীদের

৭ ঘণ্টা পর রাজশাহীর সঙ্গে সারাদেশের ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক

ঢাকা আলিয়া মাদ্রাসায় সংঘর্ষ, আহত অনেক

১০

ক্যাম্প ন্যুতে বার্সার রাজকীয় প্রত্যাবর্তন

১১

জনগণকে নিয়ে এলাকার কল্যাণে কাজ করব : রবিন 

১২

দ্বিতীয় বিভাগ ক্রিকেটে ৭৬ ক্লাবকে নিয়ে কোয়াবের চা-চক্রের আয়োজন

১৩

ভূমিকম্প আতঙ্কে ঢাবি ভিসির বাসভবনের সামনে শুয়ে পড়েছেন শিক্ষার্থীরা

১৪

এবার নিজেদের মাঠে নাস্তানাবুদ লিভারপুল

১৫

ভূমিকম্পে নিহতদের সম্পর্কে যা বলেছেন নবীজি (সা.)

১৬

তারেক রহমানের জন্মদিন উপলক্ষে কোরআন বিতরণ 

১৭

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ১৫ দিন বন্ধ ঘোষণা, হল ত্যাগের নির্দেশ

১৮

সিমেন্ট কারখানায় বয়লার বিস্ফোরণ, ৬ শ্রমিক দগ্ধ

১৯

বাংলাদেশ সমাজকর্ম শিক্ষক সমিতির আত্মপ্রকাশ 

২০
X