পূজার সময় যারা মন্দিরে হামলা করত তারা দেশে নেই বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নির্বাহী সদস্য এটিএম আজহারুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘আপনারা দেখেছেন সব সময় দুর্গাপূজায় কোন মন্দিরে হামলা করা হয়। কিন্তু এবার বাংলাদেশের কোন মন্দিরে কেউ হামলা করেনি। তাহলে যারা হামলা করত তারা দেশে নেই।’
শুক্রবার (১০ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে বদরগঞ্জ বহুমুখী মডেল উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন আয়োজিত শ্রমিক সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।
এটিএম আজহারুল ইসলাম আওয়ামী লীগ ইঙ্গিত করে বলেন, যারা মুখে মুখে অমুসলিম ভাইদের নিরাপত্তার কথা বলে, তারা ক্ষমতায় থাকতে তাদের হাতেই অমুসলিম ভাইদের নিরাপত্তা সবচেয়ে বেশি বিঘ্নিত হয়েছে। তার সবচাইতে বড় প্রমাণ এবারের দুর্গাপূজা। এবার নিশ্চিন্তে দূর্গাপূজা পালন করতে পেরেছে। আমরা ইসলাম বিদ্বেষ পোষণ করি না এটাই আমাদের ইসলামের শিক্ষা। যে যার ধর্ম বিশ্বাস করে সে তার ধর্ম মেনে চলবে। ইসলাম একটি জীবন ব্যবস্থা যেখানে হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, শ্রমিক-মালিক সবাই নিরাপত্তা পাবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা শুধু রাজনীতি করার জন্য রাজনীতি করি না। আমরা দেশ ও সমাজকে পরিবর্তন করতে চাই। বর্তমান যে সমাজ ও রাষ্ট্র তাতে কোনো মানুষের অধিকার নিশ্চিত হয় না। আমরা এমন একটি রাষ্ট্র ব্যবস্থার স্বপ্ন দেখি যেখানে শ্রমিকরা তাদের ন্যায্য অধিকার পাবে। কারও প্রতি কোনো বৈষম্য থাকবে না। ইনসাফভিত্তিক সমাজ ব্যবস্থায় প্রত্যেকে তার হক বুঝে পাবে।’
জামায়াতের এ কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, ‘বাংলাদেশ স্বাধীন ও সার্বভৌম থাকবে কিনা তার ফয়সালা হবে আগামী নির্বাচনে। হাত থেকে দেশকে বাঁচানো যাবে কিনা সে ফয়সালাও হবে নির্বাচনে। যাকে পছন্দ সেই প্রার্থীকে ভোট দিতে পারি সেই পরিবেশ ঠিক রাখার ভোট আগামী নির্বাচন। যদি তা না হয় তাহলে আমাদেরকে পিছনে ফিরে যেতে হবে। আবার মাস্তান তন্ত্র, সন্ত্রাস তন্ত্র, পরিবার তন্ত্রের ধ্বজাধারীরা তাহলে দেশটাকে আবারও ভোট ডাকাতি করে ব্যালট ছিনতাই করে পরবর্তীতে ক্ষমতায় থাকার চেষ্টা করবে।’
নির্বাচনে ভোট কেন্দ্র দখল করতে আসলে প্রতিহত করার হুঁশিয়ারি দিয়ে জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতা আরও বলেন, ‘যে যাকে ভোট দিতে চায় তাকে সেই ভোট দেওয়ার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। সরকারের পাশাপাশি সবাইকে কাজ করতে হবে। কেউ ভোট কেন্দ্র দখল করতে আসলে প্রতিহত করা হবে।’
এ শ্রমিক সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা শাখার সভাপতি মুহা. শাহিনুর ইসলাম এবং সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক এম. এ. মতিন সরকার।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের রংপুর–দিনাজপুর অঞ্চলের সহকারী পরিচালক অধ্যাপক আবুল হাশেম বাদল, জেলা সভাপতি মো. বেলাল আবেদীন, উপদেষ্টা শাহ মুহাম্মদ রুস্তম আলী ও পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের রংপুর জেলা সভাপতি নুর আলম সিদ্দিকী।
এছাড়া সভায় স্থানীয় জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরাও বক্তব্য রাখেন।
মন্তব্য করুন