ময়মনসিংহ ব্যুরো
প্রকাশ : ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৬:৫৩ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

কর্মচারীর গ্রাম দেখে মুগ্ধ সৌদি মালিক

সৌদি আরবের জেদ্দায় স্থানীয় বাসিন্দা আবু নাসের ময়মনসিংহে। ছবি : কালবেলা
সৌদি আরবের জেদ্দায় স্থানীয় বাসিন্দা আবু নাসের ময়মনসিংহে। ছবি : কালবেলা

সৌদি আরবের জেদ্দায় স্থানীয় বাসিন্দা আবু নাসেরের বাড়িতে কাজ করেন বাংলাদেশি যুবক দেলোয়ার হোসেন ও মনির হোসেন। মনির ছয় বছর আর তার বড় ভাই দেলোয়ার চার বছর ধরে কাজ করছেন সেখানে। দীর্ঘদিন কাজ করায় মালিক আবু নাসেরের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে উঠেছে তাদের। অর্জন করেছেন আস্থা, বিশ্বাস আর ভালোবাসা। সেই সম্পর্কের টানে সবাইকে চমকে দিয়ে কর্মীর বাড়ি ময়মনসিংহের ত্রিশালে ছুটে এসেছেন আবু নাসের।

নিজেকে সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা পরিচয় দেওয়া এই সৌদি নাগরিক এক সপ্তাহ ধরে ঘুরে বেড়াচ্ছেন গ্রামের মেঠো পথ। কখনো রাখাল হয়ে গরু নিয়ে যাচ্ছেন মাঠে আবার পুকুরে দিচ্ছেন মাছের খাবার। গ্রামের মানুষ কীভাবে জীবনধারণ করেন সেটিও দেখছেন নিজ চোখে।

গত ৬ সেপ্টেম্বর আবু নাসের বাংলাদেশে পা রাখলে বিমানবন্দর থেকে দেলোয়ারের স্বজনরা তাকে বরণ করে নেন। পরে ত্রিশালের মঠবাড়ী ইউনিয়নের মঠবাড়ী গ্রামে নিয়ে আসেন এই সৌদি নাগরিককে। এক সপ্তাহে তিনি মনের আনন্দে গ্রামের আশপাশের এলাকা ছাড়াও ত্রিশাল, ময়মনসিংহ, কিশোরগঞ্জের হাওর অঞ্চল ঘুরে বেড়িয়েছেন। খেয়েছেন বাংলাদেশি নানা খাবার। সবমিলিয়ে দারুণ সময় কাটিয়েছেন আবু নাসের।

এখানকার মানুষের আতিথেয়তায় মুগ্ধ এই সৌদি নাগরিক। অনুভুতি ব্যক্ত করতে গিয়ে আবু নাসের বলেন, এ দেশের গ্রাম এতো সুন্দর তা এখানে আসার আগে জানা ছিল না। চারদিকে সবুজ, পুকুর, পানি, মাছ শাক-সবজির বাগান। আমার দেশে এসব শুধু বাজারেই দেখেছি। কীভাবে উৎপাদন হয় এখানে তা দেখলাম, আমি খুবই খুশি।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ যেমন সুন্দর, এখানকার মানুষও তেমন ভালো এবং অতিথিপরায়ণ। আমি যাদের কাছে এসেছি তাদেরকে নিজের পরিবারের সদস্যদের মতোই মনে হচ্ছে। এই পরিবারের দুজন সদস্য আমার বাড়িতে কাজ করে। তাদেরকে আমি নিজের সন্তানের মতো ভালোবাসি। তারাও আমাকে খুব শ্রদ্ধা করে।

অতিথির এমন আনন্দ দেখে খুশি দেলোয়ার ও মনিরের পরিবারও। স্থানীয়রা বলছেন, মালিক আবু নাসেরের সঙ্গে যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলেছেন বাংলাদেশি দেলোয়ার ও মনির, সেটা অন্যান্য শ্রমিকের জন্য দারুণ উদাহরণ হতে পারে।

প্রবাসী দেলোয়ারের বাবা মিন্টু মিয়া বলেন, আমার দুই ছেলের কাজের সুবাদে তাদের মালিক একজন সৌদি নাগরিক আমাদের মতো এমন অজপাড়াগাঁয়ের বাড়িতে বেড়াতে আসবেন তা আমার কল্পনাতেও ছিল না। বাবা হিসেবে এর চেয়ে বড় প্রাপ্তি ও খুশির বিষয় আর কি হতে পারে। এক সপ্তাহ ধরে তিনি বিভিন্ন স্থানে ঘুরেছেন। আমাদের সঙ্গে খাবার খেয়েছেন, মাছ ধরেছেন, বাজার করেছেন। তিনি পরিবারের সদস্য হয়ে গেছেন। আমার আরেক ছেলেকেও তিনি নিয়ে যাবেন। নিজে উপস্থিত থেকে ছেলেদের বিয়ে দেবেন বলে জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, আমরা আমাদের সাধ্যমতো তাকে আদর-আপ্যায়ন করার চেষ্টা করছি। যাতে ওনি বাংলাদেশ ও এদেশের মানুষ সম্পর্কে আরও ভালো ধারণা নিয়ে যেতে পারেন। ওনাদের সঙ্গে আমাদের আত্মিক সম্পর্কটা যেন আরও সুদৃঢ় হয়। মরুভূমির দেশের মানুষ হয়ে এমন নির্মল প্রকৃতির ছোঁয়া ও সুন্দর কিছু স্মৃতি নিয়ে আগামীকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে জেদ্দার উদ্দেশ্যে রওনা হবেন আবু নাসের।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উত্তপ্ত যবিপ্রবি, স্থানীয়দের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ

সাতক্ষীরায় বিএনপির তিন গ্রুপের দ্বন্দ্ব, নেতাকর্মীদের আস্থায় রহমতুল্লাহ পলাশ

আশাশুনি-কালীগঞ্জে সন্ত্রাস ও দখলবাজির স্থান হবে না : কাজী আলাউদ্দিন

৩০ বছরের বিরোধ মিটিয়ে প্রশংসায় ভাসছেন নুরুদ্দিন আহাম্মেদ অপু

দেখে নিন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের ম্যাচের সূচি

তনির বিরুদ্ধে সাবেক স্বামীর এজাহার, জবাবে যা বললেন

৫ ধরনের ব্যক্তির জন্য পেঁপে খাওয়া বিপজ্জনক

জামায়াত আমিরের সঙ্গে কসোভোর সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সাক্ষাৎ

একটানা লম্বা ছুটিতে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান

টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্ট / চার দিনের মধ্যে দাবি না মানলে শাটডাউন

১০

প্রকাশিত হলো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সূচি, প্রথম দিনই মাঠে নামছে বাংলাদেশ

১১

হাঁস নাকি মুরগির ডিম বেশি উপকারী? যা বলছেন পুষ্টিবিদ 

১২

ধানের শীষের পক্ষে জনমত গড়তে হবে : মফিকুল হাসান

১৩

‘বাউলিয়ানার নামে ভণ্ডামি ছাড়ুন’

১৪

পুরুষ বাউলদের নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য হাসিনা সরকারের

১৫

আবুল সরকারের বিষয়ে অবস্থান পরিষ্কার করল এনসিপি

১৬

মেট্রোর অনলাইন রিচার্জে ধস, ৪ ঘণ্টায় ৭ লাখ হিট 

১৭

নির্বাচন আয়োজনে সরকার ও কমিশন প্রস্তুত : উপদেষ্টা শারমীন

১৮

শহুরে ব্যস্ততায় স্বস্তি দিতে আমিন মোহাম্মদ এগ্রোর প্রাকৃতিক পিকনিক স্পট

১৯

জীবাশ্ম জ্বালানি ছাড়াই কপ-৩০ চুক্তি, শক্তি রূপান্তর কি তাহলে থমকে গেল?

২০
X