পূর্ব সুন্দরবনের কটকা অভয়ারণ্য এলাকায় শিয়ালের আনাগোনা দেখা যাচ্ছে। শরণখোলা রেঞ্জের কটকা অভয়ারণ্য কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুরজিত চৌধুরী জানান, গত কিছু দিন ধরে কটকা অভয়ারণ্য কেন্দ্রে হঠাৎ শিয়ালের উপস্থিতি নজরে আসছে। প্রতিদিন সন্ধ্যায় শিয়ালের প্রকট ডাকাডাকি সংখ্যার ঘনত্ব নির্দেশ করে।
এদিকে কটকায় আগত পর্যটকরা খুব কাছ থেকে নির্ভয়ে ঘোরাফেরা করা হরিণ দেখে পুলকিত হন। কেউ কেউ কটকা ফরেস্ট অফিস চত্বরসহ আশপাশের গাছের ডাল ভেঙে নিজের হাতে বনের হরিণকে পাতা খাইয়ে থাকেন। শিয়ালের তাড়নায় পর্যটনকেন্দ্র কটকায় অবাধ বিচরণ করতে পারছে না হরিণ। সংশ্লিষ্টরা জানান, বর্তমানে ২০-২৫টি শিয়াল রয়েছে। সুন্দরবনের এ অংশে আগে এত শিয়াল দেখা যায়নি।
শরণখোলা রেঞ্জের সাবেক রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, তিনি দীর্ঘ চাকরিজীবনে সুন্দরবনে শিয়ালের কোনো অস্তিত্ব পাননি। কটকায় শিয়ালের উপদ্রবের খবর জেনে হতবাক হয়ে তিনি বলেন, ‘শিয়াল হরিণের বংশবিস্তারে হুমকির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।’
বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ বিভাগ (ওয়াইল্ড লাইফ) খুলনার সাবেক বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মদিনুল আহসান বলেন, ‘সুন্দরবনে শিয়াল থাকার কথা নয়। লোকালয়ের কাছে থাকা সুন্দরবনে দু-একটি শিয়াল থাকলেও থাকতে পারে। কিন্তু কটকাসহ গভীর সুন্দরবনে শিয়াল থাকার খবর শুনিনি।’
বন্যপ্রাণী নিয়ে কাজ করা কুমির বিশেষজ্ঞ আদনান আজাদ বলেন, কটকায় বাঘের মেরে রাখা বড় আকারের হরিণ শিয়ালকে খেতে দেখেছেন তিনি।
বন বিভাগ খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক (সিএফ) মিহির কুমার দো বলেন, কটকায় শিয়ালের খবর তিনি প্রথম বারের মতো শুনলেন। স্বাভাবিকভাবে সুন্দরবনের গভীরে শিয়াল থাকার কথা নয়। কটকায় শিয়ালের সংখ্যা বেড়ে গেলে ভবিষ্যতে তা হরিণ বৃদ্ধির ক্ষেত্রে শঙ্কার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। বিষয়টি সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে করণীয় নির্ধারণ করবেন বলে তিনি জানান।
মন্তব্য করুন