পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে দিনাজপুরের পার্বতীপুরে অবস্থিত কয়লাভিত্তিক বড়পুকুরিয়া ৫২৫ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন। ফলে পার্বতীপুর উপজেলাসহ উত্তরাঞ্চলের আট জেলা বিদ্যুৎহীন কিংবা লো-ভোল্টেজের কবলে পড়েছে।
গত বৃহস্পতিবার টারবাইন নষ্ট হয়ে ২৭৫ মেগাওয়াটের তৃতীয় ইউনিট বন্ধ হয়ে যাওয়ার তিন দিন পর গত রোববার যান্ত্রিক ত্রুটির কবলে পড়ে একমাত্র সচল থাকা ১২৫ মেগাওয়াটের প্রথম ইউনিটটিরও বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। অন্যদিকে, তাপবিদুৎ কেন্দ্রের দ্বিতীয় ইউনিটের সংস্কারকাজ ২০২০ সালের নভেম্বর থেকে চলমান আছে।
বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রধান প্রকৌশলী মো. আবু বক্কর সিদ্দিক কালবেলাকে বলেন, ‘ত্রুটির কারণে গুরুত্বপূর্ণ এ বিদ্যুৎকেন্দ্রের বন্ধ হয়ে যাওয়া তৃতীয় ও দ্বিতীয় ইউনিট এক সপ্তাহের মধ্যে উৎপাদনে যেতে পারছে না। তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র সচলের চেষ্টা চলছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমানে তাপবিদ্যুৎ উৎপাদন পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। কেন্দ্রের তৃতীয় ইউনিট ও প্রথম ইউনিটটি মেরামত কাজ চলমান রয়েছে। দুটি ইউনিট চালু হলে লোডশেডিংয়ের মাত্রা অনেকটা কমবে। আগামী এক সপ্তাহের পর কেন্দ্রের দুটি ইউনিটি বিদ্যুৎ উৎপাদনে ফিরবে।’
এ দিকে জাতীয় গ্রিড থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হলেও উত্তরাঞ্চলে চাহিদা পূরণে পার্বতীপুরের বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। একদিকে বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ, অন্যদিকে সরবরাহে ঘাটতি। এক সপ্তাহ ধরে লোডশেডিং বেড়ে যাওয়ায় চরম ভোগান্তিতে রয়েছেন জেলার মানুষ।
উপজেলার রামপুর ইউনিয়নের রঘুনাথপুর নয়াপড়ার বাসিন্দা আবু সালেম বলেন, ‘একদিকে গরম, অন্যদিকে রাত-দিন লোডশেডিং। এ অবস্থায় সুস্থ থাকাটাই কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে।’
এ বিষয়ে দিনাজপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২-এর পার্বতীপুর জোনাল কার্যালয়ের ডিজিএম জহুরুল হক কালবেলাকে জানান, বড়পুকুরিয়া ৫২৫ মেগাওয়াট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ থাকায় ভোগান্তি আরও বেড়েছে। ছুটির দিন ছাড়া তার জোনে প্রতিদিনের চাহিদা ১৮ মেগাওয়াট। কয়েকদিন থেকে চাহিদার তুলনায় সরবরাহে ঘাটতি থাকায় লোডশেডিং করতে হচ্ছে। এতে করে পল্লী বিদ্যুতের ৮০ হাজার গ্রাহকরা দুর্ভোগে পড়েছেন। চাহিদার বিপরীতে পাচ্ছি মাত্র ৬-৭ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। এ ছাড়া বিদ্যুতের ভোল্টেজ স্থিতিশীল রাখাও কষ্টসাধ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে।
উল্লেখ্য, উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাওয়া ২৭৫ মেগাওয়াট তৃতীয় ইউনিট থেকে প্রতিদিন ১৪০ থেকে ১৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ হতো।
মন্তব্য করুন