

দিনাজপুরে দ্বিতীয় দিনের মতো হিম হাওয়া ও ঘনকুয়াশায় কনকনে শীত অনুভূত হচ্ছে। কৃষকরা বীজতলা বাঁচাতে ইরি-বোরো বীজতলায় ছাই ছিটিয়ে ঢেকে দিচ্ছেন। রাস্তায় মানুষজন কম চলাচল করতে দেখা গেছে।
রোববার (২১ ডিসেম্বর) দিনাজপুরে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা গতকাল শনিবার রেকর্ড করা হয়েছিল ১৩.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
গত দুদিন বাতাসের আর্দ্রতা রেকর্ড করা হয়েছে ৯৫ শতাংশ। দিনের তাপমাত্রা আরও কিছুটা কমার সম্ভাবনা রয়েছে। শুক্রবার সন্ধ্যার পর থেকে দিনাজপুরে হিমেল বাতাস বইছে। গতকাল সকাল থেকে সূর্যের মুখ দেখা যায়নি। কনকনে শীতের কারণে মানুষজন বাড়ি থেকে কম বের হয়েছে। বিশেষ করে বয়স্ক ও শিশুদের বাড়ি থেকে বের হতে দিচ্ছেন না পরিবারের সদস্যরা।
প্রচণ্ড ঠান্ডা ও ঘন কুয়াশার কারণে দিনমজুর, রিকশাচালক, ইজিবাইক চালক ও খেটে খাওয়া মানুষজন কাজে বের হতে পারছেন না। এতে তাদের দৈনন্দিন আয়ের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। শেখপুরা এলাকার কফিল উদ্দিন বলেন, আজকে সূর্যের মুখ কিছু সময় দেখা গেলেও, শুধু ঠান্ডা বাতাস। এই শীতে বাড়ি থেকে বের হওয়াই মুশকিল। সারাদিন যে বাতাস বইছে, তাতে কাজ করতে কষ্ট হচ্ছে।
ঘন কুয়াশার কারণে বিভিন্ন যানবাহন চালাতে সমস্যা হচ্ছে। ইজিবাইক চালক মকবুল হোসেন বলেন, ঘন কুয়াশার কারণে একটু আগে আমি লক্ষ্মীতলা বাজার থেকে দিনাজপুরে ঢোকার পথে কাউগার মোড় এলাকায় দুর্ঘটনার হাত থেকে বেঁচে গেছি। সামনে একটি ট্রাক দাঁড়ানো ছিল, ঘনকুয়াশার কারণে কিছুই দেখতে পারিনি। একবারে ট্রাকের পেছনে গিয়ে ব্রেক করেছি। আরেকটু হলে ধাক্কা লেগে যেত।
ট্রাকচালক মশিউর রহমান বলেন, দুদিন ধরে দিনাজপুরে তীব্র শীত গায়ে লাগছে। এরই মধ্যে কয়েকদিন ধরে ঘন কুয়াশার শুরু হয়েছে, এতে গাড়ি চালাতে খুবই সমস্যা হচ্ছে। গাড়ির সামনের কয়েক হাত দূরে ঠিকমতো দেখা যাচ্ছে না। এতে দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা রয়েছে।
এদিকে শীতের তীব্রতায় বেড়েছে গরম কাপড়ের চাহিদা। শহরের গোর-এ শহীদ ময়দানের হকার্স মার্কেটের পুরাতন কাপড় ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম বলেন, দুদিন ধরে শীতের তীব্রতা বেড়েছে। গত শনিবার এই বাজারে ক্রেতার ভিড় কম ছিল। রোববার সকাল থেকে ক্রেতার খুবই ভিড়।
দিনাজপুর আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তোফাজ্জল হোসেন কালবেলাকে বলেন, বায়ুমণ্ডলের উপরিভাগে জলীয় বাষ্প বা কুয়াশার পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই সূর্যের আলোর প্রখরতা বা দাপট অনেকটাই কম থাকবে। আগামী দু-তিন দিন দিনের তাপমাত্রা কিছুটা কমে আসবে। বৃষ্টির তেমন কোনো সম্ভাবনা নেই। ডিসেম্বরের শেষের দিকে কিছু স্থানে শৈত্যপ্রবাহ বা শৈত্যপ্রবাহের মতো অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে।
মন্তব্য করুন