

শরীয়তপুর জেলার জাজিরায় কাচিকাটা নদীতে বন্ধুদের সঙ্গে মাছ ধরতে গিয়ে নৌপুলিশের তাড়া খেয়ে নদীতে ঝাঁপ দিয়ে নিখোঁজ হন মনপুরা এক জেলে। এ ঘটনার পের থেকে ১৩ দিন ধরে নিখোঁজ রয়েছেন ওই জেলে।
এদিকে নিখোঁজ জেলেকে খুঁজতে শরীয়তপুরের জাজিরায় থানা পুলিশ ও নৌপুলিশের নিকট যাওয়ার পরও সহযোগিতা পায়নি পরিবারের সদস্যরা। উল্টো হয়রানির শিকার হয়েছেন। শনিবার (২৫ অক্টোবর) পর্যন্ত নিখোঁজ জেলের কোনো খবর পায়নি পরিবারের সদস্যরা। তবে শেষমেশ ছেলের মরদেহ পেতে আহাজারি করেছে তারা।
এর আগে, গত ১৩ অক্টোবর সকাল সাড়ে ৮টায় জাজিরা অঞ্চলের কাচিকাটা নদীতে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মাছ শিকারের সময় নৌপুলিশের তাড়া খেয়ে নদীতে ঝাঁপ দিয়ে নিখোঁজ হন। শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) পর্যন্ত গত ১৩ দিন ধরে নিখোঁজ রয়েছেন ওই জেলে।
নিখোঁজ জেলে মো. আবেদ (২০) উপজেলার ১নং মনপুরা ইউনিয়নের কুলাগাজী তালুক গ্রামের বাসিন্দা আবুল বাশার মাঝির ছেলে।
জানা গেছে, নিষেধাজ্ঞার মধ্যে গত ১৩ অক্টোবর মনপুরার পাঁচ বন্ধু মিলে শরিয়তপুর জেলার জাজিরায় কাচিকাটা নদীতে হায়ারে মাছ শিকারে যায় নিখোঁজ জেলে আবেদ। কাচিকাটা নদীর লালবয়া নামক স্থানে জাল ফেলে মাছ শিকার করছিল। এই সময় নদীতে নৌপুলিশের একটি টিম টহল দেওয়ার সময় তাদের ধাওয়া দেয়। পরে তার জাল ফেলে নৌকা চালিয়ে পালানোর সময় নৌপুলিশ ছড়া গুলি করে। এতে আবেদসহ পাঁচ জেলে নদীতে ঝাঁপ দেয়। পরে নদী থেকে নৌপুলিশ ৩ জেলেকে উদ্ধার করে। নদীতে ঝাঁপ দেওয়া আবেদ ও মনছুর নিখোঁজ হন। পরে ছড়া গুলিতে আহত অবস্থায় মনছুরকে জেলেরা উদ্ধার করে নিয়ে আসে। কিন্তু আবেদ এখন পর্যন্ত নিখোঁজ রয়েছেন। তার খোঁজ এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।
নিখোঁজ জেলের বাবা বাশার মাঝি জানান, নিখোঁজ ছেলের খবর পেয়ে শরীয়তপুরের জাজিরায় গিয়ে থানা পুলিশ ও নৌপুলিশের কাছে গিয়েছি। ছেলের খোঁজ পায়নি। ওল্টো হয়রানি হয়েছি। এমনকি নদীতে গিয়ে ছেলের খোঁজ করেছি। আজ পর্যন্ত ছেলের খোঁজ পায়নি বলে হাউমাউ করে কেঁদে ওঠেন তিনি। এ সময় পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা আহাজারি করতে থাকেন।
মনপুরা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আহসান কবির বলেন, নিখোঁজ জেলে আবেদের বাবা থানায় এসেছিল। ঘটনাটি জাজিরাতে, তাই জাজিরা থানায় যেতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তবে জাজিরা থানায় যোগাযোগ রয়েছে নিখোঁজ জেলের সন্ধান পেলে তারা জানাবে।
এ বিষয়ে জাজিরা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাইনুল বলেন, ঘটনাটি থানার আওতায় হলেও জাজিরা নৌপুলিশের নিয়ন্ত্রণে। নৌপুলিশের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য বলা হয়েছে। তবে থানায় কোনো জিডি হয়নি।
মন্তব্য করুন