

জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও খুলনা মহানগরীর আমির অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান বলেছেন, এখনই আওয়ামী লীগের বিচার প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। এ অন্তর্বর্তী সরকার হয়তো তাদের বিচার শেষ করতে পারবে না। কিন্তু শুরুটা তাদেরই করতে হবে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ কাল্পনিক অভিযোগ দাঁড় করিয়ে জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের বিচারিক হত্যা করেছে। চোর, ডাকাত, খুনি, দুর্নীতিবাজ, লুটেরা পালিয়ে যায়, কোনো ভালো মানুষ পালায় না, কেবল অপরাধীরাই পালিয়ে যায়। তারা যে অপরাধ করেছে পালানোর মাধ্যমেই তা প্রমাণিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) বিকেলে খুলনা নিউ মার্কেটের বায়তুন নূর কমপ্লেক্সের উত্তর গেটে মহানগরী জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিলে সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
মাহফুজুর রহমান বলেন, ফ্যাসিবাদের সূত্রপাত হয়েছে ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীদের নারকীয় হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে। ২৮ অক্টোবর ছিল ভিনদেশি ভারতের ফরমায়েশি হত্যাকাণ্ড। যা বাস্তবায়নে প্রকাশ্যে নির্দেশ দিয়েছে শেখ হাসিনা। ২০২৪-এর ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার ঐক্যবদ্ধ তীব্র আন্দোলনের মুখে দেশ ফ্যাসিবাদ মুক্ত হয়েছে। এ পটপরিবর্তনের ফলে দেশে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হবে এবং অবিলম্বে ২৮ অক্টোবরের গণহত্যাকারীদের বিচার নিশ্চিত করা হবে।
তিনি আরও বলেন, নারকীয় এ গণহত্যার সঙ্গে জড়িত খুনিদের বিচারের জন্য সুনির্দিষ্ট মামলা করা হয়েছিল। কিন্তু তৎকালীন সরকার সেই মামলা প্রত্যাহার করে বিচারের পথ রুদ্ধ করে খুনিদের রক্ষা করে। দেশের জনগণের দাবি, অবিলম্বে ২৮ অক্টোবরের খুনিদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা পুনরায় সচল করে তাদের গ্রেপ্তার ও শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
জামায়াতের এ নেতা বলেন, ২০০৬ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচন বানচাল করার উদ্দেশ্যে চারদলীয় জোট সরকারের মেয়াদ শেষে ২৮ অক্টোবর আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট সারা দেশে লগি-বৈঠার তাণ্ডব সৃষ্টি করে। সেদিন বায়তুল মুকাররমের উত্তর গেটে জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে জনসভার আয়োজন করে। সকাল থেকে জনসভার স্টেজ নির্মাণের কাজ চলছিল। হঠাৎ ১৪ দলীয় জোটের সন্ত্রাসীরা পল্টন এলাকায় জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষের ওপর লগি-বৈঠা, লোহার রড ও বিভিন্ন আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়।
মাহফুজুর বলেন, শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ থেকে ’৭৫ সালে বাংলাদেশে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম, একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠা, খুন, গুম, ভোট ডাকাতির ইতিহাস রচনা করেছে। আর তারই কন্যা শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালে জাতির কাছে ক্ষমা চেয়ে, তওবা করে, রাজনীতির ময়দানে একবার সুযোগ ভিক্ষা চেয়ে রাজনীতির মাঠে জনগণের দয়ায় এসেছে। আসার পর শেখ হাসিনা আবার দেশ ও জনগণকে নিয়ে ষড়যন্ত্র শুরু করে। পরে ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত ভারতের মদদে বাংলাদেশকে কারাগারে পরিণত করেছিল।
মহানগরী সহকারী সেক্রেটারি প্রিন্সিপাল শেখ জাহাঙ্গীর আলম ও আজিজুল ইসলাম ফারাজীর পরিচালনায় বক্তব্য দেন- মহানগরী নায়েবে আমির অধ্যাপক নজিবুর রহমান, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও মহানগরী সেক্রেটারি খুলনা-২ আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী অ্যাডভোকেট শেখ জাহাঙ্গীর হুসাইন হেলাল, সহকারী সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট শাহ আলম, ইসলামী ছাত্রশিবির মহানগরী সভাপতি আরাফাত হোসেন মিলন, মহানগরী অফিস সেক্রেটারি মিম মিরাজ হোসাইন। আরও উপস্থিত ছিলেন- মহানগরী কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা আ ন ম আব্দুল কুদ্দুস, মাওলানা আবু বকর সিদ্দিক, আ স ম মামুন শাহীন, মুকাররম বিল্লাহ আনসারী, মাওলানা শেখ মো. অলিউল্লাহ, মাওলানা শাহারুল ইসলাম, অধ্যাপক ইকবাল হোসেন, অ্যাডভোকেট শফিকুল ইসলাম লিটন, ইঞ্জিনিয়ার মোল্লা আলমগীর, খুলনা সদর থানা আমির এস এম হাফিজুর রহমান, সোনাডাঙ্গা থানা আমির জি এম শহিদুল ইসলাম, খালিশপুর থানা আমির আব্দুল্লাহ আল মামুন, হরিণটানা থানা আমির আব্দুল গফুর, দৌলতপুর থানা আমির মুশাররফ আনসারী, আড়ংঘাটা থানা আমির মুনাওয়ার আনসারী, লবণচরা থানা আমির মোজাফফর হোসেন।
উপস্থিত ছিলেন- খুলনা সদর থানা সেক্রেটারি আব্দুস সালাম, সোনাডাঙ্গা থানা সেক্রেটারি মাওলানা জাহিদুর রহমান নাঈম, খালিশপুর থানা সেক্রেটারি আব্দুল আওয়াল, দৌলতপুর থানা সেক্রেটারি মাওলানা মহিউদ্দীন, আড়ংঘাটা থানা সেক্রেটারি শেখ মো. তুহিন, হরিণটানা থানা সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট ব ম মনিরুল ইসলাম, লবনচরা থানা সেক্রেটারি মাহমুদুল হাসান জিকু, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের মহানগরী সহ-সভাপতি এস এম মাহফুজুর রহমান ও কাজী মাহফুজুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক ডা. সাইদুজ্জামান।
মন্তব্য করুন