পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় সীমান্ত নদী মহানন্দায় পাথর তুলতে বাধা দেওয়াকে কেন্দ্র করে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও স্থানীয় পাথর শ্রমিকদের মধ্যে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এ সময় শ্রমিকরা বিজিবি সদস্যদের অবরুদ্ধ করে রাখেন। এ ঘটনায় চারজনকে আটক করা হয়েছে।
শনিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সকালে রণচন্ডী বিওপির দায়িত্বপূর্ণ এলাকা ভাদ্রুবাড়িতে টহলরত ছিলেন বিজিবির সদস্যরা। বেলা ১১টার দিকে মহানন্দা নদী থেকে বালু ও পাথরবোঝাই তিনটি ট্রলি আটক করে বিজিবি। এতে বিজিবির সঙ্গে শ্রমিকদের কথা কাটাকাটি হয়। তারা বিজিবির সদস্যদের অবরুদ্ধ করে রাখেন।
খবর পেয়ে তেঁতুলিয়ার ইউএনও ফজলে রাব্বি, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী মাহমুদুর রহমান ডাবলু, সদর ইউপি চেয়ারম্যান মাসুদ করিম সিদ্দিকী ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনে মীমাংসার জন্য বসেন। এ সময়ের মধ্যে পঞ্চগড় থেকে দুটি পিকআপে বিজিবির অতিরিক্ত সদস্য ঘটনাস্থলে এলে আবার উত্তেজনা দেখা দেয়। এ ঘটনায় ১২ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
এদিকে বিজিবির ওপর হামলার অভিযাগে আটক চারজন হলেন, উপজেলার সদর ইউনিয়নের ভাদ্রুবাড়ি এলাকার ট্রাক্টরচালক সালমান আলী (৩০), একই এলাকার পাথর ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলম (২৪), রণচন্ডী এলাকার ট্রাক্টরচালক অমিত হাসান (২৩) ও পঞ্চগড় সদর উপজলার তালমা এলাকার ট্রাক্টরচালক শিমুল হাসান (২৮)।
এদিকে এ ঘটনাটি নিয়ে বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে উপজেলা চত্বরে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী মাহমুদুর রহমান ডাবলু, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফজলে রাব্বী, মডেল থানার ওসি আবু সাঈদ চৌধুরী, সদর ইউপি চেয়ারম্যান মাসুদ করিম সিদ্দিকীসহ পাথর শ্রমিকরা।
পঞ্চগড় ১৮ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফট্যানেন্ট কর্নেল যুবায়েদ হাসান বলেন, ‘সীমানা অতিক্রম করে একটি চক্র পাথর উত্তোলন করতে গেলে বিজিবি বাধা দেয়। এ সময় তারা আমাদের ৬-৭ জন্য সদস্যকে অবরুদ্ধ করে রাখেন। এর ফাঁকে সীমান্ত থেকে ট্রাক্টরগুলো সরিয়ে নেন তারা। পরে আমাদের বাড়তি সদস্য গিয়ে অবরুদ্ধদের উদ্ধার করেন। এ সময় চারজনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলার প্রক্রিয়া চলছে। অভিযোগ উঠা লাঠিচার্জের বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা।’
তেঁতুলিয়া মডেল থানার ওসি আবু সাঈদ চৌধুরী বলেন, ‘এ ঘটনায় চারজনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে বিজিবি। বিজিবির পক্ষ থেকে থানায় একটি মামলা প্রক্রিয়াধীন। বিকেল ৫টার দিকে উপজেলার সার্বিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে প্রশাসনিক ও জনপ্রতিনিধিসহ শ্রমিকদের নিয়ে বসা হয়েছিল। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।’
মন্তব্য করুন