

চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে সাড়ে ৩ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে ধান চাষ করেছিলেন তাপস দে। চারশ শতক জমির কাটা আমন ধান ঘরে তোলার আগ মুহূর্তে পুড়িয়ে ছাই করে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) রাতে উপজেলার হারুয়ালছড়ি ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের মহানগর গ্রামের কেশব কুমার বাবুর বাড়িতে এ ঘটনাটি ঘটেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, একই এলাকার কৃষক তাপস দে এবং তার পরিবার বিভিন্ন এনজিও থেকে সাড়ে ৩ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে ১২ কানি বর্গা জমিতে চাষাবাদ করেন। তাদের জমিতে ভালো ফলন হয়েছে। তারা ধান কেটে জমিতে স্তূপ করে রাখেন। সেখানে ১০ কানি বা ৪০০ শতক জমির ধান আগুন দিয়ে পুড়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
কৃষক তাপসের স্ত্রী রিংকু রানী দে কালবেলাকে বলেন, আমার স্বামী, সন্তান এবং সন্তানের বউ সবাই বিভিন্ন এনজিও থেকে সাড়ে ৩ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছি। এভাবে ধান পুড়িয়ে তারা আমাদের সব পরিশ্রম শেষ করে দিয়েছে, আমাদের মাথার ওপর ঋণের বোঝা চাপিয়ে দিল। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।
কৃষক তাপস দে এবং কিল্টন দে বলেন, বিলের মধ্যে যেহেতু ধান ছিল, আমরা রাতে কয়েকবার ঘুম থেকে উঠে জমির কাটা ধান পাহারা দিই। ঘটনার দিন রাত ৩টার দিকে গিয়ে দেখি ধানের মধ্যে আগুন জ্বলছে। পরে আমাদের চিৎকারে সবাই ছুটে আসে এবং ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেয়। ততক্ষণে আমাদের সব ধান পুড়ে ছাই হয়ে যায়। আমরা অভিযুক্ত কয়েকজনের নামসহ প্রশাসনকে বিচার দিয়েছি। এর সুষ্ঠু বিচার এবং আমার ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করতে হবে।
ঘটনার পর একই এলাকার সানী দাশ, প্রদীপ কুমার দাশ এবং তয়ন দেবের বিরুদ্ধে ভূজপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন ভুক্তভোগী কৃষক তাপস কান্তি দে।
হারুয়ালছড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইকবাল হোসেন চৌধুরী বলেন, বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। তারা ধারদেনা করে এ ধান চাষ করেছেন। গরিব পরিবারটি যখন ফলন ঘরে তুলবে ঠিক তখনি অভিযুক্তরা এ ন্যক্কারজনক কাজ করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ভূজপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহাবুবুল আলম কালবেলাকে বলেন, ধান পুড়ে দেওয়ার ঘটনায় আমরা অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনার পর সরেজমিনে পুলিশ গেছে। তদন্ত করে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ফটিকছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক চৌধুরী কালবেলাকে বলেন, অভিযুক্ত দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন