

বরিশালে বিদেশ থেকে আমদানি করা বিপুল পরিমাণ নন-ইউরিয়া সার ব্যবহার অনুপযোগী হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) বিকেলে নষ্ট হয়ে যাওয়া ২৭২ টন সার মাটিচাপা দেওয়া হয়েছে।
কর্মকর্তাদের দাবি―অবহেলা নয়, ঘূর্ণিঝড় রিমালের সময় গুদামে পানি উঠে তলিয়া যাওয়া ৩ হাজার ২০০ টনের মধ্যে ২৭২ টন সার নষ্ট হয়ে গেছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, পানিতে ভিজে যাওয়ার পর সারগুলো যথাযথভাবে সংরক্ষণ না করায় নষ্ট হয়ে গেছে।
জানা গেছে, গত বছর মে মাসে ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে জোয়ার এবং বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে যায় বরিশালে নিম্নাঞ্চল। ওইসময় কীর্তনখোলা নদীতীরবর্তী কেডিসি এলাকার বিএডিসির সার গোডাউনের ভেতরও পানি প্রবেশ করে। এতে গোডাউনে রাখা সারিবদ্ধ সারের বস্তার মধ্য থেকে নিচে থাকা বস্তাগুলো পানিতে ভিজে যায়।
বিএডিসির সঙ্গে সম্পৃক্ত একাধিক সূত্র অভিযোগ করেছে, প্রাকৃতিক দুর্যোগ শেষে ভিজে যাওয়া সারের বস্তাগুলো তাৎক্ষণিক গোডাউন থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়নি। তবে ভালো সার অপসারণের পর দীর্ঘদিন পড়ে থাকা সেসব সারের বস্তা থেকে নমুনা নিয়ে পরীক্ষার জন্য ল্যাবে পাঠানো হয়।
পরে ল্যাব পরীক্ষায় সারগুলো ফসলের জন্য ব্যবহার অনুপযোগী ঘোষণা করা হয়, যা পরবর্তীতে মাছের খাবার হিসেবে ব্যবহার করা সম্ভব নয় বলে জানানো হয়। এরপর দীর্ঘসূত্রিতা শেষে প্রায় দেড় বছরের মাথায় সারগুলো মাটিচাপা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় কর্তৃপক্ষ।
অপরদিকে বিএডিসির সার গোডাউনের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত দিলে সারগুলো অন্তত মাছের খাবার হিসেবে ব্যবহার করা যেত। ফলে কোটি টাকার লোকসান কিছুটা হলেও এড়ানো যেত।
বিএডিসির সহকারী পরিচালক (সার) মো. সাঈদ হোসেন খোকন বলেন, ডাই-অ্যামোনিয়াম ফসফেট (ডিএপি) ও ট্রিপল সুপার ফসফেট (টিএসপি) জাতীয় ২৭২ টন নন ইউরিয়া সার ২০২৪ সালে ঘূর্ণিঝড় রিমালের সময় নষ্ট হয়। এগুলো সবজি ও ফসলি জমিতে ব্যবহার করা সম্ভব নয়, বিধায় মৎস্য ল্যাবে পরীক্ষা করা হয়েছিল। সেখান থেকে এগুলো মৎস্য খাবার হিসেবে উপযোগী নয় বলে জানালে যথাযথ কর্তৃপক্ষের নির্দেশে জেলা প্রশাসনের প্রতিনিধির উপস্থিতিতে ডিসপোজাল করা হচ্ছে।
কর্তৃপক্ষের কোনো অবহেলা নয় জানিয়ে বিএডিসির যুগ্ম পরিচালক (সার) মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ঘূর্ণিঝড় রিমালের কারণে গুদামে পানি ঢুকে গিয়ে নষ্ট হয়ে যাওয়া ২৭২ টন সার ডিসপোজাল করা হচ্ছে। যা ল্যাব পরীক্ষার মাধ্যমে যথাযথ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে গুদাম থেকে অপসারণের কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়েছে। এখন এগুলো ব্যবহার অনুপযোগী হওয়ায় গর্ত করে মাটিচাপা দেওয়া হচ্ছে।
মন্তব্য করুন