

রাজশাহীর তরুণ-তরুণীদের মাঝে এখন নতুন আগ্রহ— পেশাদারভাবে রান্না শেখা। ফুড অ্যান্ড বেভারেজ প্রোডাকশন এবং বেকারি অ্যান্ড পেস্ট্রি প্রোডাকশন বিষয়ক চার মাসের প্রশিক্ষণে অংশ নিতে এ বছর দেখা গেছে ব্যতিক্রমী প্রতিযোগিতা। শুধু আবেদন করলেই হচ্ছে না; বাছাই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েই মিলছে অংশগ্রহণের সুযোগ। এজন্যই শতাধিক আগ্রহী অংশ নিয়েছেন এমসিকিউ ভিত্তিক লিখিত পরীক্ষায়।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের স্কিলস ফর ইন্ডাস্ট্রি কম্পেটিটিভনেস অ্যান্ড ইনোভেশন প্রোগ্রাম— এসআইসিআইপির আওতায় আয়োজিত এ প্রশিক্ষণের মাঠপর্যায়ের দায়িত্বে রয়েছে নগরের গণকপাড়ায় অবস্থিত প্রতীতি টেকনিক্যাল ট্রেনিং একাডেমি। সোমবার (২৪ নভেম্বর) সকালে সেখানেই অনুষ্ঠিত হয় বাছাই পরীক্ষা, যার ভিত্তিতে ৫০ জনকে নির্বাচন করা হবে।
এই ৫০ প্রশিক্ষণার্থী ডিসেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত চার মাস মেয়াদি কোর্সে অংশ নেবেন। প্রথম দুই মাস একাডেমিতে সরাসরি শেখানো হবে রান্নার নানা তাত্ত্বিক ও ব্যবহারিক দিক। পরের দুই মাস তারা বিভিন্ন রেস্তোরাঁয় কাজ করে অর্জন করবেন বাস্তব অভিজ্ঞতা, যা ভবিষ্যৎ ক্যারিয়ারের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
পরীক্ষায় অংশ নিতে নগরের বিনোদপুর থেকে আসেন গৃহিণী সুমাইয়া আরেফিন। তিনি বলেন, ‘আমি উদ্যোক্তা হতে চাই। তাই প্রশিক্ষণ গ্রহণের চেষ্টা করছি।’ হাদীর মোড় থেকে আসা বেনজির আহমেদ বলেন, ‘রান্না শিখে আমি দেশের বাইরে যেতে চাই। এ জন্যই প্রশিক্ষণ নিতে চাই।’
এসআইসিআইপি প্রকল্পের সমন্বয়কারী ও ফুড অ্যান্ড বেভারেজ প্রোডাকশনের প্রধান প্রশিক্ষক ইশরাত জাহান রুবা বলেন, ‘পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী ও বেকারদের কর্মসংস্থানের লক্ষ্য নিয়ে আমরা কাজ করছি। দক্ষ জনবল তৈরি করে অর্থনীতিতে অবদান রাখার জন্য সরকারের সঙ্গে সমন্বয় রেখে আমাদের কার্যক্রম চলছে। প্রশিক্ষণ শেষে জব প্লেসমেন্ট সেন্টারের মাধ্যমে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থাও করা হচ্ছে।’
প্রতীতি টেকনিক্যাল ট্রেনিং একাডেমিতে ফুড অ্যান্ড বেভারেজ, বেকারি অ্যান্ড পেস্ট্রি, বেকিং অ্যান্ড কনফেকশনারি, শেফ কোর্স, ফুড প্রসেসিং, কন্টিনেন্টাল, ডেজার্ট মেকিং, কেক ডেকোরেটিং, মাইক্রোওয়েভ কুকিংসহ নানা বিশেষায়িত কোর্স চলছে।
প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ মুশারৎ জাহান রুমী বলেন, ‘এই সেক্টরে দেশ ও দেশের বাইরে সুদূর প্রসারী ভবিষ্যৎ আছে। সুবিধাবঞ্চিত ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর আগ্রহীদেরও অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। চাহিদা বেশি হওয়ায় আমাদের সক্ষমতার চাইতে বেশি প্রশিক্ষণার্থী আসছেন, তাই তাদের মধ্যে থেকে বেছে নিতে পরীক্ষা নিতে হচ্ছে।’
প্রসঙ্গত, রাজশাহীতে রন্ধনশিল্পে বাড়তে থাকা আগ্রহ নতুন সম্ভাবনার দিগন্ত খুলে দিচ্ছে। একটি সিট পেতে পরীক্ষা দিতে হলেও, অনেকের জন্য এটি ভবিষ্যতের স্বপ্নপথে প্রথম পদক্ষেপ।
মন্তব্য করুন