ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার বাগুটিয়া গ্রামে জান্নাতি খাতুন নামে এক ৬ বছরের শিশুকে হত্যার পর বাড়ির পাশে পুকুরে ফেলে রাখার ঘটনায় সেলিনা খাতুন নামে একজনকে আটক করেছে র্যাব। আটক মহিলা বাগুটিয়া গ্রামের রবিউল ইসলামের স্ত্রী।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ওই নারী জানান, সমিতির কিস্তির টাকা জোগাড় করতে ব্যর্থ হয়ে শিশু জান্নাতির কানের স্বর্ণের রিংয়ের দিকে নজর পড়ে তার। আর সেই রিংয়ের জন্যই হত্যা করা হয় শিশু জান্নাতিকে।
আটককৃত সেলিনা খাতুনের স্বামী রবিউল ইসলাম জানান, সেলিনা খাতুন বিভিন্ন সমিতি থেকে প্রায় ১ লাখ টাকা মতো কিস্তির টাকা লোন করেছে। কিন্তু কিস্তির টাকা নিয়মিত পরিশোধ করতে না পারার কারণে জান্নাতির কানের স্বর্ণের রিংয়ের জন্য এমন কাজ করতে পারে।
র্যাব জানিয়েছে, অভিযান চালিয়ে ওই শিশুর কানের দুল উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল দুপুরে শৈলকুপার হাটফাজিলপুর বাজারের একটি সোনার দোকান থেকে এই কানের দুল উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় র্যাব গ্রেপ্তারকৃত সেলিনা খাতুন জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার কথা স্বীকার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে কানের দুলের জন্যই শিশু জান্নাতিকে হত্যা করা হয়েছে বলে জানা যায়।
ঝিনাইদহ র্যাবের কোম্পানি কমান্ডার স্কোয়াড্রন লিডার মো. ইসতিয়াক হোসেন জানান, উক্ত ক্লুলেস হত্যা মামলার মূল হত্যাকারী ও পরিকল্পনাকারী আসামি সেলিনা বেগম বাগুটিয়া গ্রামে নিজ এলাকায় নিজেকে আত্মগোপন করে অবস্থান করছে। প্রাপ্ত সংবাদের ভিত্তিতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। আসামিকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছে।
তিনি জানান, আসামি গত ১১ সেপ্টেম্বর নিজ বসতবাড়ির পেছনের রাস্তায় শিশু জান্নাতিকে একা পেয়ে জোরপূর্বক তার কানে পরিহিত স্বর্ণের রিং নেওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় শিশুটি চিৎকার করলে তার মুখ ও গলা চেপে ধরে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে নিথর দেহ কাঠের লাকড়ির ভেতর রেখে ভিকটিমের কান থেকে রিং খুলে নিয়ে স্বর্ণকারের দোকানে বিক্রি করে। পরে লাশ গুম করার জন্য নিকটস্থ স্থানীয় পুকুরে ফেলে রেখে চলে যায়। উল্লেখ্য, শৈলকুপার বাগুটিয়া গ্রামে নিখোঁজের ৮ ঘণ্টা পর জান্নাতি খাতুন নামে ৬ বছর বয়সী এক শিশুর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। প্রথম থেকেই জান্নাতির পরিবার অভিযোগ করে আসছে ধর্ষণের পর এই নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটতে পারে। সে কারণে পুলিশ প্রতিবেশী যুবক রিপনকে আটক করে।
মন্তব্য করুন