অতি বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলের কারণে সিলেটে নদ-নদীর পানি বাড়ছে। গত কয়েকদিনের অবিরাম বৃষ্টিপাতে শনিবার (১৭ জুন) সকালে সিলেটের নদ-নদীগুলোর পানি ছিল কোথাও বিপৎসীমার উপরে এবং কোথাও বিপৎসীমা ছুঁইছুঁই।
রোববার (১৮ জুন) বিকেলের মধ্যে সিলেটের প্রধান নদী সুরমায় সেই সীমা ছাড়িয়ে পানি ওঠে বিপৎসীমার উপরে। সিলেট শহরের নিম্নাঞ্চলেও পানি উঠেছে।
সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আশিফ আহমেদ জানান, সুরম নদীর পানি কানাইঘাট পয়েন্টে বিকেল ৩টার দিকে বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। এ সময় এ পয়েন্টে রেকর্ড করা হয় ১২ দশমিক ৯৫ পয়েন্ট। বিপৎসীমা ছিল ১২ দশমিক ২৬ পয়েন্ট। সুরমা নদীর পানি সিলেট ও সুনামগঞ্জে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
সিলেটের আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে শনিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত সিলেটে ১১৫ দশমিক ৫ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। আগামী ৪৮ ঘণ্টা সিলেটে ভারি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এজন্য সবাইকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। বিশেষ করে সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোয় পাহাড়ি ঢল নামার সমূহ আশঙ্কা রয়েছে।
পাউবো সূত্রে জানা গেছে, সিলেটের অন্যান্য নদ-নদীর পানিও বাড়ছে। সুরমা নদীর সিলেট পয়েন্টে বিপৎসীমা ১০ দশমিক ৮০ সেন্টিমিটার। সেই পয়েন্টে শনিবার ৯ দশমিক ৯০ সেন্টিমিটার উচ্চতা দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছিল। সেখানে রোববার সন্ধ্যা ৬টায় ৯ দশমিক ৯৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
কুশিয়ারা নদীর শেওলা পয়েন্টে পানির বিপৎসীমা ১৩ দশমিক ৫ সেন্টিমিটার। সেখানে শনিবার ছিল ১১ দশমিক ১০ সেন্টিমিটার। আজ রোববার সন্ধ্যা ৬টায় নদীর ওই পয়েন্টে ১১ দশমিক ৫৬ সেন্টিমিটার উচ্চতায় প্রবাহিত হচ্ছিল। নদীর ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে বিপৎসীমা ৯ দশমিক ৪৫ সেন্টিমিটার। শনিবার সন্ধ্যা ৬টায় প্রবাহিত হচ্ছিল ৭ দশমিক ৭০ সেন্টিমিটার। সেখানে আজ সন্ধ্যা ৬টায় নদীর ওই পয়েন্টে ৮ দশমিক ২৩ সেন্টিমিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এ ছাড়া সারি নদীর সারীঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমা ১২ দশমিক ৩৫ সেন্টিমিটার। সেখানে রোববার সন্ধ্যায় ৬টায় ১১ দশমিক ১৭ সেন্টিমিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমান বলেন, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের এরই মধ্যে অবহিত করা হয়েছে। আগামী কয়েক দিন সিলেটে অতিবৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সিলেটে হতে পারে বন্যা। এ পরিস্থিতিতে নগদ টাকাসহ ত্রাণসামগ্রীর ব্যবস্থা করে রেখেছে জেলা প্রশাসন। প্রস্তুত করা হয়েছে আশ্রয়কেন্দ্রগুলো।
এদিকে সিটি করপোরেশনের আওতাধীন টুকের বাজার, কুমারগাঁও এলাকার কয়েকটি স্থানে নিম্নাঞ্চলে পানি উঠেছে। এসব এলাকায় যেসব ভোটকেন্দ্র রয়েছে তার আশপাশ এলাকার রাস্তাঘাটে পানি। পানি আরও দুদিন বাড়লে কেন্দ্রগুলো পরিবর্তন করা লাগতে পারে বলে স্থানীয় একটি সূত্র জানিয়েছে।
মন্তব্য করুন