

কুষ্টিয়ার দৌলতপুর সীমান্ত এলাকায় নিরাপত্তা ও টহল কার্যক্রম জোরদার করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (৪৭ বিজিবি)। ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির ওপর গুলিবর্ষণের ঘটনায় জড়িত হামলাকারীকে গ্রেপ্তারে এ নিরাপত্তা বাড়ানো।
বিজিবি সূত্র জানায়, কুষ্টিয়া ব্যাটালিয়নের (৪৭ বিজিবি) অধিনায়কের নির্দেশে কয়েক দিন ধরে সীমান্তের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে জনসচেতনতামূলক মাইকিং চালানো হচ্ছে। এতে সীমান্তবর্তী এলাকার বাসিন্দাদের আইন মেনে চলার আহ্বান জানানো হচ্ছে। নির্ধারিত সময়ের পর সীমান্তের ‘জিরো লাইন’ এলাকায় সাধারণ মানুষের চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। পাশাপাশি স্থানীয়দের অহেতুক সীমান্তের কাছাকাছি না যাওয়ার জন্য উৎসাহিত করছে বিজিবি।
নির্বাচনের আগে সীমান্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দৌলতপুর সীমান্তসংলগ্ন ২১টি বর্ডার আউটপোস্টে (বিওপি) অতিরিক্ত জনবল মোতায়েন করা হয়েছে। একই সঙ্গে বিজিবি ক্যাম্পসহ ব্যাটালিয়নের আওতাধীন সব সীমান্ত এলাকায় দিনরাত ২৪ ঘণ্টা টহল ও গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে সীমান্ত পরিস্থিতি স্পর্শকাতর হয়ে ওঠায় এ উদ্যোগকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে কর্তৃপক্ষ।
শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) রাত ১২টা থেকে সব ক্যাম্পে সীমান্ত টহল তৎপরতা ও গোয়েন্দা নজরদারি আরও জোরদার করা হয়।
অভিযুক্ত সন্ত্রাসী যেন সীমান্ত এলাকা ব্যবহার করে পালিয়ে যেতে না পারে, সে লক্ষ্যেই এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে বিজিবি।
বিজিবি জানায়, গুলিবর্ষণের ঘটনায় জড়িত শুটার ফয়সাল করিম মাসুদকে গ্রেপ্তারের জন্য সীমান্তবর্তী এলাকার সব নাগরিককে সজাগ থাকতে হবে। সন্দেহজনক কোনো তথ্য পাওয়া গেলে তাৎক্ষণিকভাবে বিজিবিকে অবহিত করার জন্য সাধারণ মানুষের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।
দৌলতপুর উপজেলা ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার জলঙ্গী ও করিমপুর থানার সঙ্গে সীমান্তযুক্ত। বিজিবির তথ্য অনুযায়ী, এ অঞ্চলে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের মোট দৈর্ঘ্য ৮১ দশমিক ৫ কিলোমিটার। এর মধ্যে পদ্মা নদীর জলসীমা ১৭ দশমিক ১ কিলোমিটার। স্থলসীমান্তের ৫৮ দশমিক ৮ কিলোমিটারে কাঁটাতারের বেড়া থাকলেও এখনো ২২ দশমিক ৭ কিলোমিটার সীমান্ত কাঁটাতারবিহীন রয়েছে, যা নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে আরও চ্যালেঞ্জিং করে তুলেছে।
বিজিবি জানিয়েছে, নির্বাচনকালীন সময়ে কোনো চিহ্নিত অপরাধী যেন সীমান্ত দিয়ে দেশত্যাগ বা দেশে প্রবেশ করতে না পারে, সে বিষয়ে কঠোর নজরদারি রাখা হচ্ছে। একই সঙ্গে অবৈধ অস্ত্র, বিস্ফোরক ও মাদক চোরাচালান ঠেকাতে তল্লাশি কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সীমান্ত দিয়ে অবৈধ পুশ ইন রোধে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সাধারণ মানুষের সহযোগিতায় কাজ করছে বিজিবি।
এ বিষয়ে কুষ্টিয়া ব্যাটালিয়নের (৪৭ বিজিবি) অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল রাশেদ কামাল রনি, এসইউপি, পিএসসি, জি কালবেলাকে বলেন, সীমান্তে অনুপ্রবেশ রোধে বিজিবি সর্বদা সতর্ক রয়েছে। সীমান্ত এলাকায় কোনো অপরিচিত বা সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে দেখা গেলে তাৎক্ষণিকভাবে বিজিবিকে জানাতে তিনি সবার প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি আরও বলেন, শুধু নির্বাচনকাল নয়, সার্বিকভাবে সীমান্ত পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখাই বিজিবির প্রধান লক্ষ্য। শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন সম্পন্ন করতে সীমান্তের প্রতিটি পয়েন্টে বিজিবি সদস্যরা সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন এবং সন্দেহভাজনদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন