

পাবনা সরকারি এডওয়ার্ড কলেজে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের আলোচনা সভায় যুদ্ধাপরাধে দণ্ডিত জামায়াতের প্রয়াত নেতা গোলাম আযম ও মতিউর রহমানকে ‘দেশপ্রেমিক’ এবং স্বাধীনতা যুদ্ধের ‘বীর সূর্যসন্তান’ উল্লেখ করে কলেজ শাখা ছাত্র শিবিরের সেক্রেটারি মামুন আল হাসানের দেওয়া বক্তব্য ঘিরে ব্যাপক হট্টগোল হয়েছে।
রোববার (১৪ ডিসেম্বর) দুপুরে কলেজের শহীদ আব্দুস সাত্তার মিলনায়তনে এ ঘটনা ঘটে।
শিবির নেতার এমন বক্তব্যকে ইতিহাস বিকৃতির প্রচেষ্টা উল্লেখ করে এর প্রতিবাদ জানিয়েছেন কলেজ শাখা ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। পাশাপাশি এ বক্তব্যের নিন্দা জানিয়েছে কলেজ কর্তৃপক্ষও।
জানা গেছে, শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভার আয়োজন করে কলেজ কর্তৃপক্ষ। সেখানে বাংলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক মো. রুহুল আমিনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কলেজের উপাধ্যক্ষ মো. আব্দুল খালেক। আলোচনা সভার এক পর্যায়ে বক্তব্য দিতে কলেজ শাখা ছাত্র শিবিরের সেক্রেটারি মামুন আল হাসানকে মঞ্চে ডাকা হয়।
একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, শিবির নেতা মামুন আল হাসান তার বক্তব্যের শুরুর দিকেই বলতে শুরু করেন- ‘আমি স্মরণ করছি স্বাধীনতা যুদ্ধে এ দেশের সব সূর্যসন্তান মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী ও গোলাম আযমসহ জামায়াতে ইসলামীর সেই সব মানুষদের......।’ ঠিক তখনই ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা তার এই বক্তব্যের প্রতিবাদে অনুষ্ঠান বয়কটের সিদ্ধান্ত নিলে দুপক্ষের মধ্যে হট্টগোলের সৃষ্টি হয়।
এ সময় শিবির নেতাদের সঙ্গে ছাত্রদল নেতাদের কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতি হয়। শিবির নেতার বক্তব্যের প্রতিবাদে মিলনায়তনের ভেতরেই বিক্ষোভ করেন ছাত্রদল নেতাকর্মীরা।
এ বিষয়ে সরকারি এডওয়ার্ড কলেজ শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান শ্রাবণ বলেন, শিবিরের সঙ্গে যে হট্টগোল হয়েছে এটা মূলত ছাত্রদলের হয়নি, এ হট্টগোল হয়েছে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে, সেখানে ছাত্রদলের কিছু কর্মী উপস্থিত ছিল।
সভায় কলেজ শাখা শিবিরের সেক্রেটারি বক্তব্য দিতে গিয়ে প্রথমেই বলেন, ‘আমি স্মরণ করছি জাতির সূর্যসন্তান দেশপ্রেমিক গোলাম আজম ও মতিউর রহমান নিজামীকে।’
এই বক্তব্য দেওয়ার পরপরই সাধারণ শিক্ষার্থী ও ছাত্রদলের কিছু কর্মী প্রতিবাদ করে।
শ্রাবণ আরও বলেন, গোলাম আজম রাজাকারকুলের শিরোমণি, তাকে যখন জাতির সূর্যসন্তান ও দেশপ্রেমিক বলা হয়, তখন আমরা শহীদ জিয়ার আদর্শের সৈনিক হয়ে তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। অবিলম্বে ছাত্রশিবিরকে এমন বক্তব্য প্রত্যাহার করে সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাছে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানিয়েছি।
তবে এ প্রসঙ্গে কলেজ শাখা ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি মামুন আল হাসান বলেন, অনুষ্ঠানটি ছিল বুদ্ধিজীবী দিবস নিয়ে। কিন্তু ছাত্রদল নেতা তার বক্তব্যের পুরোটাই জামায়াত-শিবির নিয়ে মিথ্যাচার করেছেন। বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার বিচারবহির্ভূত ও নিজস্ব আদালত তৈরি করে জামায়াতের যেসব নেতাদের হত্যা করেছে সেসব নিয়ে মিথ্যাচার করেছেন। মৃত মানুষদের নিয়ে বিষোদগার করেছেন। তারা পূর্বকল্পিতভাবে অনুষ্ঠান পণ্ড করার চেষ্টায় ছিলেন। আমরা এর নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
মন্তব্য করুন