পটুয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের বিশেষ বর্ধিত সভার ৪৮ ঘণ্টা আগে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে দেওয়া পোস্ট মুছে দিলেন বাউফলের সেই আওয়ামী লীগ নেতা মোতালেব হাওলাদার। ইতোমধ্যে জেলা আওয়ামী লীগ তাকে শোকজও করেছে। শুক্রবার (৬ অক্টোবর) জেলা আওয়ামী লীগের এই সভা অনুষ্ঠিত হবে। সভায় এ বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হতে পারে বলে জানিয়েছে জেলা আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা।
নিজের বহিষ্কারাদেশ ঠেকাতে বাউফল উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল মোতালেব হাওলাদার নিজের ফেসবুক আইডি থেকে খালেদা জিয়াকে নিয়ে দেওয়া সেই ফেসবুকে পোস্টটি সরিয়ে নিয়েছেন।
পোস্ট দেওয়ার পাঁচ দিন পর মোতালেব হাওলাদার তার ফেসবুক আইডি থেকে তা মুছে দিয়ে নতুন করে আলোচনার সৃষ্টি করেছে। শোনা যাচ্ছে, হাইকমান্ডের চাপের মুখে পড়ে ওই পোস্ট ডিলিট করেছেন তিনি। এর আগে পোস্টকে কেন্দ্র করে তাকে বহিষ্কারের দাবিও করেছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী।
গত ৩০ সেপ্টেম্বর মোতালেব হাওরাদার তার ফেসবুক আইডিতে এক পোস্টে লেখেন, ‘রাজনৈতিক কারণে আইন পরিবর্তন করে হলেও বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসার সুযোগ করে দেওয়া হোক’ ব্রাকেটে তিনি মন্তব্য না করার জন্য অনুরোধও করেন।
মুহূর্তের মধ্যে ওই পোস্ট ভাইরাল হয়ে যায়। বিএনপি নেতারা তাকে সাধুবাদ জানালেও নিজ দলের নেতাকর্মীদের সমালোচনার মুখে পড়েন ওই আওয়ামী লীগ নেতা। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে বহিষ্কারের দাবিও ওঠে। এ ঘটনায় ০২ অক্টোবর তিন দিন কার্যদিবসের মধ্যে তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশও দেন জেলা আওয়ামী লীগ।
দলীয় সূত্র জানায়, উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মোতালেব হাওলাদার স্থানীয় এমপির বিশ্বস্ত সহচর হিসেবে পরিচিত ছিলেন। গত উপজেলা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে তিনি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এ ছাড়াও তার দলীয় সমর্থনে স্ত্রী রেহেনা মোতালেব উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ও ছেলে মাহমুদ বগা ইউপি চেয়ারম্যান হন। গত দুই বছর আগে এমপি ও উপজেলা চেয়ারম্যানের সম্পর্কে ফাটল ধরে।
খালেদা জিয়াকে নিয়ে নিজের বক্তব্যে প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল মোতালেব হাওলাদার সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি সংগঠনবিরোধী কোনো বক্তব্য দেইনি। মানবিক দিক থেকে খালেদা জিয়ার চিকিৎসার কথা বলেছি। এখন দল যে সিদ্ধান্ত নেবে আমি তার সঙ্গেই একমত।’
তবে গত বুধবার ফেসবুক পোস্ট ডিলিট করার পর তার মোবাইল ফোনে কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেনি।
পটুয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কাজী আলমগীর বলেন, ‘তিনি দলের সাধারণ সম্পাদক হয়ে এ ধরনের বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করতে পারেন না। তাই তাকে সংগঠনের নিয়মানুযায়ী প্রাথমিকভাবে শোকজ করা হয়েছে। জবাব পাওয়ার পর পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
মন্তব্য করুন