হত্যাচেষ্টার অভিযোগ ছেলের বিরুদ্ধে মায়ের দায়ের করা মামলায় ছেলে সাইদুর রহমানকে দুর্গাপুরের মহিপাড়া নিজ বাড়ি থেকে গত রবিবার রাতে গ্রেপ্তার করেছে থানা পুলিশ।
দুর্গাপুর থানার ওসি নাজমুল হক বলেন, ‘আংগুরা বেগম নামের এক বৃদ্ধ মা থানায় অভিযোগ করেছিলেন তদন্ত সাপেক্ষে রোববার রাতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে। সোমবার রাজশাহী আদালতে পাঠানো হয়েছে।’
উল্লেখ, গত ৮ অক্টোবর রাজশাহীর দুর্গাপুরে ছেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে থানায় হাজির মা। থানায় নিজের নিরাপত্তা ও ছেলের বিচারের দাবি জানিয়েছিলেন ৬০ বছরের আংগুরা বেগম। অভিযুক্তরা হলেন- তার ছেলে সাইদুর রহমান এবং ছেলে বউ রুমি খাতুন।
ভ্যানচালক বাবা ও মানুষের বাড়িতে কাজ করা মা জমি বিক্রি ও ঋণ করে সন্তানকে বিদেশে পাঠিয়েছিলেন। অর্থনৈতিকভাবে সচ্ছল হয়ে ১২ বছর পর দেশে ফিরেছেন ছেলে। বর্তমানে সেই প্রবাসী ছেলে তার মায়ের নামে থাকা অবশিষ্ট ২৭ শতাংশ জমি লিখে চান এবং বিভিন্ন সময়ে মা-বাবাকে নির্যাতন করে বাড়ি থেকে বের করে দিতে চেয়েছিলেন। শুধু তা-ই নয়, রোববার স্ত্রীসহ তার ছেলে বৈদ্যুতিক শক দিয়ে তাকে হত্যাচেষ্টাও করেছিলেন। এসব অভিযোগে থানায় গিয়েছিলেন ৬০ বছর বয়সী নারী আংগুরা বেগম।
আংগুরা বেগম রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার মহিপাড়া গ্রামের আকবর আলীর স্ত্রী।
ভুক্তভোগী নারী আংগুরা বেগম বলেন, ‘ফজরের নামাজ পড়তে উঠে দরজা খুলে সামনে পা দিতেই আমাকে জোরে ছিটকে ফেলে দেয়। এরপর আলো দিয়ে দেখি দরজার নিচ দিয়ে বিদ্যুতের তার। এ সময় চিৎকার দিলে তারা (ছেলে ও তার স্ত্রী) বিদ্যুতের তার বাইরে থেকে সরিয়ে নেয়। পরে পাড়ার লোকজন এসে আমাকে ঘর থেকে বের করে। তারা আমাকে বিদ্যুতের ফাঁদ পেতে মারতে চায়। এ নিয়ে প্রতিবাদ করলে সকালে আমার ছেলে ও তার বউ আমার সঙ্গে ঝগড়া করে।’
তিনি বলেন, ‘আমি মানুষের বাড়িতে কাজ করে, আর আমার স্বামী ভ্যান চালায়ে ছেলেকে বড় করেছি। এরপর সবকিছু বিক্রি করে তাকে বিদেশ পাঠাই। ১২ বছর পর দেশে আসার পর আমার নামে থাকা বাড়িসহ বসতভিটার ২৭ শতক জমি লেখে চায়। আমি দিতে চাইনি। এর পর থেকেই ওরা আমাকে আর আমার স্বামীর ওপর নির্যাতন শুরু করে। ছেলে আর তার বউ মিলে প্রায়ই আমাকে মারধর করে। বাড়ি থেকে বের করে দেয়। এসব নিয়ে কয়েকবার গ্রামে ও থানায় সালিশ হয়েছে। কিন্তু তাদের নির্যাতন কমেনি।’
তিনি আরও বলেন, ‘চারটা পুকুর, গ্রামে আবাদি জমি, বাজারে বাড়ি করার জমি সব ছেলের নামে লিখে দিছি। তারপরও আমার নামে থাকা বাড়িটুকু সে লেখে নেবে। তারপর আমাকে ও আমার স্বামীকে বাড়ি থেকে বের করে দেবে।’
মন্তব্য করুন