পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় গত কয়েকদিনের টানা বর্ষণে জামালপুরে সরিষাবাড়ী উপজেলার সাতপোয়া ইউনিয়নের দাসের বাড়ি এলাকায় প্রায় দেড়শ হেক্টর ফসলি জমি বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে আছে। এতে কোটি টাকার বেশি লোকসান হবে বলে ধারণা করছেন কৃষকরা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, দাসের বাড়ি এলাকায় পাকা সড়কের দুই পাশে ফসলের মাঠে থইথই করছে পানি। আর ওই পানির নিচেই তলিয়ে আছে কৃষকের অক্লান্ত পরিশ্রমে গড়া নতুন ফসলের স্বপ্ন। ধান, ভুট্টা ও মরিচের অঙ্কুর বৃষ্টির পানিতে নিমজ্জিত।
দাসের বাড়ি গ্রামের কৃষক মোস্তাফিজুর রহমান কালবেলাকে জানান, আমি দেড় বিঘা জমিতে ভুট্টা লাগিয়েছিলাম। এতে আমার ১৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এখন সেই ভুট্টা ক্ষেতে কোমরপানি। জানি না এ পানি কবে শুকাবে। কবে আবার নতুন করে ফসল করতে পারব। তবে সময়মতো ফসল না করতে পারলে ফসলের ফলন ভালো হয় না বলে কৃষকরা অভিযোগ করেন।
ভুক্তভোগী আরেক কৃষক শামীম বলেন, ‘আমি এক বিঘা জমিতে মরিচের টাল করেছিলাম। এখন সেই মরিচের টাল পানির নিচে। পাশেই ঝিনাই নদী রয়েছে কিন্তু সেই নদীতে পানি নিষ্কাশনের কোনো ব্যবস্থা নেই। আগে যত বৃষ্টিই হয়েছে এক সপ্তাহের মধ্যে পানি নদীতে নেমে যেত। কিন্তু এখন যেতে পারছে না। যেদিক দিয়ে পানি নেমে যেত, সেদিক দিয়ে মাটি কেটে রাস্তা উঁচু করে ফেলেছে এবং অনেকেই রাস্তার পাশে বাড়িঘর করে রেখেছে। যার কারণে পানির এ জলাবদ্ধতা এবং অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে সময়মতো ফসলের চাষাবাদ। তাই আমরা এ জলাবদ্ধতা থেকে পরিত্রাণ চাই।
এ ব্যাপারে সাতপোয়া ইউপি চেয়ারম্যান আবু তাহের কালবেলাকে জানান, পানি নিষ্কাশনের জন্য ওখানে একটি বক্স কালভার্ট ছিল। কিন্তু কালভার্টের সঙ্গে যে জমিটি সেটি মাটি দিয়ে ভরাট করে তিনি বাড়ি করেছে। যদিও সে কালভার্টের নিচ দিয়ে দুটি পাইপ দিয়েছে কিন্তু সেটি পানি নিষ্কাশনের জন্য উপযুক্ত নয়। পানি নিষ্কাশনের জন্য অন্য কোনো উপায় বের করা যায় কিনা সে বিষয়ে আমি এলাকাবাসীসহ ঊর্ধ্বতনদের সঙ্গে কথা বলে দেখছি।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ অনুপ সিংহ কালবেলাকে জানান, ‘আমি সরেজমিনে দেখে এসেছি। প্রায় দেড়শ হেক্টর ফসলি জমি পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে। এ পানি দ্রুত নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না করা গেলে কৃষকের অনেক ক্ষতি হবে। বিষয়টি আমি ঊর্ধ্বতনকে জানাব।’
মন্তব্য করুন