নিখোঁজের ১৩ দিনেও উদ্ধার হয়নি দিনাজপুরের বীরগঞ্জের চতুর্থ শ্রেণির স্কুলছাত্রী সুমনা রানী সুমি (১২)। এ দিকে সন্তান নিখোঁজের শোকে ম্লান হয়ে গেছে ওই পরিবারের পূজার আনন্দ। বাড়িতে চলছে সুনশান নীরবতা। নেই কোনো পূজার আয়োজন। সন্তানকে ফিরে পাবার প্রহর গুণছে পরিবারের লোকজন। নিখোঁজ সুমনা রানী সুমি উদ্ধার না হওয়ায় এলাকাবাসীর মধ্যে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে।
তবে তথ্যপ্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে দ্রুত সময়ে নিখোঁজ স্কুলছাত্রীকে পরিবারে কাছে ফিরিয়ে দিতে জোর তৎপরতা অব্যাহত রেখেছে বলে পুলিশ।
সুমনা রানী সুমি বীরগঞ্জ পৌর শহরের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা সতিশ রায়ের দ্বিতীয় কন্যা। সতিশ রায় পেশায় রিকশাচালক এবং মা সারদা দেবনাথ গৃহিণী।
নিখোজ সুমনা রানী সুমির মা সারদা দেবনাথ জানান, গত ১১ অক্টোবর সুমনা রানী সুমি দুপুরে বাড়ি ফিরে গোসল শেষে কাপড় পরে বাড়ি থেকে বেড়িয়ে যায়। এ সময় ভাত খাওয়ার জন্য বললে বান্ধবীর বাড়ি যাচ্ছে এবং ফিরে এসে ভাত খাবে বলে জানায় সে। এরপর সন্ধ্যা গড়িয়ে গেলেও বাড়িতে ফিরে আসেনি। রাতে তার বাবা বাড়ি ফিরে আসলে বিষয়টি তাকে জানালে পরে তার বাবা প্রতিবেশিদের নিয়ে বান্ধবীদের বাড়িতে খোঁজ নিয়েও কোনো সন্ধান পাননি। এরপর থেকে আজ অবধি তাদের মেয়ে নিখোঁজ।
সারদা দেবনাথ বলেন, সন্তানের শোকে বাড়িতে পূজার কোনো আয়োজন নেই। তার ফিরে আসার অপেক্ষায় প্রতিদিন পথ চেয়ে থাকি। সন্তানের স্মৃতি তুলে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েন সারদা দেবনাথ।
মেয়ে নিখোঁজে শোকে কাতর সুমনার বাবা সতিশ রায় বলেন, রাতে প্রতিবেশি ও বন্ধু-বান্ধবীদের বাসায় খোঁজ নিয়েও তাকে না পেয়ে আত্মীয়স্বজনদের বাসায় খোঁজ নিই। কিন্তু কোথাও তার খোঁজ মেলেনি। পরে ১২ অক্টোবর বীরগঞ্জ থানায় একটি জিডি করি। কিন্তু আজ পর্যন্ত তার কোনো খোঁজ নেই। সে বেঁচে আছে নাকি মৃত সেটিও জানতে পারছি না। আমরা গরিব মানুষ। রিকশা চালিয়ে সংসার চলাই। আমাদের কোনো শক্র থাকার কথাও নয়। আমার মেয়েকে দ্রুত উদ্ধারে সকলের সহযোগিতা চাই।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বীরগঞ্জ থানার এসআই মো. আলী জানান, নিখোঁজ সুমনা রানী সুমিকে উদ্ধারে পুলিশের তৎপরতা অব্যহত রয়েছে। এখন পর্যন্ত তার অবস্থান শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। তবে তথ্য প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে দ্রুত সময়ে নিখোঁজ স্কুলছাত্রীকে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিতে বীরগঞ্জ থানা কাজ করে যাচ্ছে বলেও জানান তিনি।
মন্তব্য করুন