সারাদেশের মতো নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলাতেও জনগণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় তৈরি করা হয় কমিউনিটি ক্লিনিক। উপজেলার নূরপুর মালঞ্চি কমিউনিটি ক্লিনিকে কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি) হিসেবে কর্মরত রয়েছেন আক্তারুজ্জামান। বৃদ্ধ বাবা-মা, স্ত্রী, ছেলে মেয়েসহ মোট ছয়জনের সংসার তার।
উপার্জনক্ষম ব্যক্তি তিনি একাই । নিজের জমিজমাও নেই। ফলে এই চাকরি করেই সবার মুখের খাবার জোগাতে হয় তাকে। ওই চাকরির বেতন দিয়ে ভালোই চলছিল আক্তারুজ্জামানের ৬ সদস্যের পরিবারের। তবে হঠাৎ তিন মাস যাবৎ বেতন না পাওয়ায় সংসারে নেমে এসেছে অভাব-অনটন। এখন সংসারের অভাব ঘোচাতে প্রতিনিয়িত হিমশিম খেতে হচ্ছে তাকে। খেয়ে না খেয়ে দিন কাটাচ্ছে তার পরিবার।
কমিউনিটি ক্লিনিকে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ডিউটি করায় অন্য কোনো কাজও করতে পারেছন না তিনি। শুধু আক্তারুজ্জামান নয়, তার মতো উপজেলার বিভিন্ন কমিউনিটি ক্লিনিকে কর্মরত ১৭ জন সিএইচসিপি পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
উপজেলায় কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডারদের (সিএইচসিপি) জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তিন মাস ধরে বেতন-ভাতা বন্ধ রয়েছে। কবে নাগাদ বেতন পাবেন সেটিও অনিশ্চিত। ফলে দ্রব্যমূল্যের এই ঊর্ধ্বগতির বাজারে বেতন না পেয়ে সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন সবাই।
সিএইচসিপিদের কয়েকজন জানান, প্রতি মাসের ২ থেকে ৩ তারিখের মধ্যে একটি প্রকল্পের মাধ্যমে তারা বেতন-ভাতাদি পেয়ে থাকেন।
বাঁশবাড়িয়া কমিউনিটি ক্লিনিকের আরেক সিএইচসিপি রফিকুল ইসলাম বলেন, আমার বাড়ির ভিটা ছাড়া আর কিছুই নেই। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির এই বাজারে সামান্য ওই বেতন দিয়ে টেনেটুনে কোনো রকমে সংসার চালাই। তারপর আবার গত তিন মাস থেকে সেটিও বন্ধ। দোকানদাররা আর বাকিতে জিনিস দিতে চাচ্ছেন না। কী যে বিপদে রয়েছি, কাউকে বলে বোঝাতে পারব না।
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, একটি প্রকল্পের মাধ্যমে সিএইচসিপিদের বেতন-ভাতাদি পরিশোধ করা হয়। সারা দেশেই তাদের বেতন-ভাতাদি বন্ধ রয়েছে। অর্থ ছাড় হয়ে আসলেই তারা বকেয়া সমেত বেতন-ভাতাদি পাবেন।
মন্তব্য করুন