মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর ২০২৫, ২৭ কার্তিক ১৪৩২
জগন্নাথপুর (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৭ আগস্ট ২০২৫, ০৮:১৪ পিএম
আপডেট : ০৭ আগস্ট ২০২৫, ০৮:৫০ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

কাজ না করেই ঘরে বসে বেতন-ভাতা নেন স্বাস্থ্যকর্মী ফারহানা

অভিযুক্ত স্বাস্থ্যকর্মী ফারহানা বেগম। ছবি : সংগৃহীত
অভিযুক্ত স্বাস্থ্যকর্মী ফারহানা বেগম। ছবি : সংগৃহীত

এক মাস কিংবা দুই মাস নয়, টানা এক বছর কর্মস্থলে অনুপস্থিত থেকেও সরকারি বেতন-ভাতা এবং সব সুবিধা ভোগ করছেন সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার সৈয়দপুর ইউনিয়নের আউদত কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি (কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার) ফারহানা বেগম।

অভিযোগ রয়েছে, অসুস্থতার অজুহাতে কাজ না করে তিনি অফিসে অনুপস্থিত থাকলেও সরকারি বেতন-ভাতা তুলছেন নিয়মিত। রোগীরা চিকিৎসাসেবা না পেয়ে দিনের পর দিন ফিরে যাচ্ছেন খালি হাতে।

সূত্র জানায়, ফারহানা বেগম জগন্নাথপুর উপজেলার সৈয়দপুর শাড়পাড়া ইউনিয়নের আফজল গ্রামের আবদুল আজাদের মেয়ে। তিনি ২০১১ সালের ১৮ অক্টোবর চাকরিতে যোগদানের পর থেকে দীর্ঘদিন অনিয়মিত। ২০২৪ সালের মে মাস পর্যন্ত তিনি ক্লিনিকে সেবাদানে অনুপস্থিত ছিলেন।

ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ তার অনুপস্থিতি নিয়ে একাধিকবার ব্যবস্থা নেওয়ার উদ্যোগ নিলেও, তিনি স্থানীয় আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতার মাধ্যমে তদবির করান বলে অভিযোগ রয়েছে। উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ফারহানাকে একাধিকবার শোকজ করা হয়েছে। তবে সর্বশেষ শোকজের তারিখ কর্তৃপক্ষ জানাতে পারেনি।

জানা গেছে, উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের মেডিকেল অফিসাররা পরিদর্শনে গিয়ে ফারহানা বেগমকে ক্লিনিকে অনুপস্থিত পান। পরিদর্শন শেষে অনুপস্থিতি, অব্যবস্থাপনা ও অপরিচ্ছন্নতার কারণে তাকে শোকজ করা হয়। তবে শোকজের পরও তিনি কর্মস্থলে ফিরে আসেননি।

বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) দুপুরে সরেজমিন দেখা যায়, কমিউনিটি ক্লিনিকের দরজা খোলা থাকলেও ভেতরে কেউ নেই। সিএইচসিপি ফারহানা বেগম অনুপস্থিত।

ক্লিনিকের সামনে বসে থাকা কয়েকজন রোগী বলেন, ‘ফারহানা ম্যাডাম এক বছর ধইরা নাই। একজন পুরুষ আসে কয়দিন ধইরা, সে এখন চা খাইতে গেছেন।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ক্লিনিক সংলগ্ন এক দোকানদার বলেন, ‘সরকারি চাকরি করেন কিন্তু গত এক বছর অফিসে নাই ফারহানা বেগম। বেতন-ভাতা তো পাইতেছেন নিয়মিতই। তার জন্যই এলাকার মানুষ সরকারি চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত।’

হাসপাতালের অফিস সহকারী ফয়ছল আহমেদ তথ্য দিতে গড়িমসি করে বলেন, আমার কাছে তথ্য নেই, পরিবার পরিকল্পনা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন।

অভিযুক্ত ফারহানা বেগমের ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল করা হলেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।

এ বিষয়ে জগন্নাথপুর উপজেলার পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. কৃপেশ চন্দ্র রায় কালবেলাকে বলেন, ফারহানাকে অনুপস্থিতির কারণে একাধিকবার শোকজ করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত যোগ না দেওয়ায় আমি গত ৭ জুলাই আবার নোটিশ করেছি। তবে এতদিন তিনি কেন অফিস করেননি জানতে চাইলে কোনো উত্তর না দিয়ে জানান—তিনি অসুস্থ ছিলেন। তবে জুলাই মাস থেকে তার বেতন বন্ধ রাখা হয়েছে।

সুনামগঞ্জ জেলা সিভিল সার্জন ডা. জসিম উদ্দিন কালবেলাকে বলেন, তার মেডিকেল ছুটি থাকতে হবে। কোনো ডকুমেন্ট না থাকলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি চাকরি না করে বেতন নিতে পারবেন না।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

সরকারি মেডিকেল কলেজে কমলো ৩৫৫ আসন

মেডিকেল-ডেন্টাল ভর্তি পরীক্ষার তারিখ জানা গেল, আবেদনে যোগ্য যারা

এনসিপি কার্যালয়ের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ, আটক ৫

বিইউএফটি জাতীয় কুইজ প্রতিযোগিতা ২০২৫ অনুষ্ঠিত

স্বাগতিকদের অম্লমধুর দিন

রাতে রাজধানীর আরেক জায়গায় ককটেল বিস্ফোরণ

এনসিপির কার্যালয়ের সামনে ককটেল নিক্ষেপ

জামিনে বেরিয়ে সংঘবদ্ধ করার চেষ্টা, ছাত্রলীগ নেতা গ্রেপ্তার

প্লট বা ফ্ল্যাট হস্তান্তরে কারও অনুমতি লাগবে না : গণপূর্ত মন্ত্রণালয়

কুড়ির এশিয়ান কাপে সঙ্গী চীন

১০

প্রাথমিক শিক্ষকদের আন্দোলন প্রত্যাহার

১১

বন্দর ও বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান মাশুল নিয়ে দর-কষাকষি চলছে : নৌ উপদেষ্টা

১২

দিল্লিতে বিস্ফোরণের আগে ‘রহস্যময়’ অভিযান, যা জানা গেল

১৩

দেশ কীভাবে পরিচালিত হবে ৩১ দফায় সবই রয়েছে : হারুনুর রশিদ

১৪

কর্মজীবী নারীদের নতুন প্রস্তাব দিলেন জামায়াত আমির

১৫

আমিনুলের ঘোষণায় শুরু হচ্ছে বিসিবির নতুন যুগ

১৬

হামিমের উদ্যোগে তারেক রহমানের জন্মদিনে ফ্রি মেডিকেল ক‍্যাম্প

১৭

দিল্লি কাঁপানো ৩৭ মিনিট, কী ঘটেছিল

১৮

বার্সাকে না জানিয়েই ক্যাম্প ন্যু’তে ফিরেন মেসি!

১৯

নির্ধারিত সময়েই এমপিওভুক্ত করতে হবে : সেলিম ভুঁইয়া

২০
X