আর মাত্র কয়েক ঘণ্টা, এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে উদ্ধোধন হচ্ছে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল। এতে খুলে যাবে দেশের অর্থনীতির অপার সম্ভাবনার দুয়ার। এই উদ্ধোধনের একেবারে শেষ মুহুর্তে টানেল ঘিরে পরিদর্শন ও উদ্বোধনের প্রস্তুতি মূলক মহড়া চালিয়েছে সেতু বিভাগ, সেতু কর্তৃপক্ষ এবং প্রশাসন।
বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) দুপুরে এ মহড়া অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক (ডিসি) আবুল বাসার আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান এবং টানেলের প্রকল্প পরিচালক হারুনুর রশিদ পরিদর্শন করেন।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক (ডিসি) আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, দক্ষিণ এশিয়ায় নদীর তলদেশে প্রথম নির্মিত হয়েছে টানেল। টানেলকে ঘিরে চীনের সাংহাই সিটির আদলে চট্টগ্রাম শহর ‘ওয়ান সিটি টু টাউন’ রূপ নেবে। এ টানেলের ফলে দক্ষিণ চট্টগ্রামে সম্ভাবনার নতুন দুয়ার উন্মোচিত হবে। আগামী ২৮ অক্টোবর এ টানেল উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। স্বপ্নের বঙ্গবন্ধু টানেল ঘিরে নদীর দক্ষিণ পাড়ের আনোয়ারা, কর্ণফুলী, পটিয়াসহ দক্ষিণ চট্টগ্রামে দৃশ্যমান পরিবর্তন দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে এই উপজেলায় দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ শুরু হয়েছে। শুধু টানেল নয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শিল্পনগর, মহেশখালীর মাতারবাড়িতে নভীর সমুদ্রবন্দর, কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র এসব প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে অনেক মানুষের কর্মস্থান হবে। বদলে যাবে চট্টগ্রাম।
তিনি বলেন, চট্টগ্রামে সফরকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধু টানেলসহ মোট ২০টি প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন। এর মধ্যে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের সাতটি প্রকল্প রয়েছে। অনেকগুলোর কাজই প্রায় শেষ হয়েছে। যেগুলো হয়নি সেগুলো আগামী বছরের জুনের মধ্যে সম্পন্ন হয়ে যাবে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল প্রকল্প পরিচালক (পিডি) ইঞ্জিনিয়ার হারুনুর রশিদ বলেন, উদ্বোধন ঘিরে সেতু কর্তৃপক্ষ, সেতু বিভাগ, প্রশাসন মিলে সব রকমের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। এখন শুধু উদ্বোধনের অপেক্ষা। এই টানেল শুধু দুই কর্ণফুলী নদীর পাড়কে সংযুক্ত করেনি, ওয়ান সিটি টু টাউনের যে কনসেপ্ট সেটাও বাস্তবায়িত হয়েছে। এই টানেলের মাধ্যমে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সড়ক নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত হবে। টানেল সুরক্ষায় সর্বোচ্চ নিরাপত্তাবলয় গড়ে তোলা হয়েছে। পুলিশের পাশাপাশি থাকবেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অন্য সদস্যরাও। টানেলে ১০০টির বেশি অত্যাধুনিক ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। এখানে কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে ৫ মিনিটের মধ্যে উদ্ধার তৎপরতা চলবে।
অন্যদিকে এক সংবাদ সম্মেলনে চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এটিএম পেয়ারুল ইসলাম জানিয়েছেন, বঙ্গবন্ধুর টানেল উদ্বোধনের দিন ১৩৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত জেলা পরিষদের ৫ প্রকল্প উদ্বোধনের কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর। এর মধ্যে রয়েছে জেলা পরিষদের ১৮ তলা জেলা পরিষদ টাওয়ার, এক হাজার আসন বিশিষ্ট পটিয়া শেখ কামাল অডিটরিয়াম কাম মাল্টিপারপাস কমপ্লেক্স, রাউজানে শেখ কামাল কমপ্লেক্স এবং আনোয়ারা ও রাঙ্গুনিয়ায় জেলা পরিষদ ডাকবাংলো।
তাছাড়া চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামীলীগসহ কেন্দ্রীয় ও জেলার শীর্ষ নেতারা জনসভাস্থল পরির্দশন করেছেন পৃথকভাবে।
মন্তব্য করুন