বরগুনার তালতলীতে ভরণ-পোষণ না দেওয়ায় ছেলেদের বিরুদ্ধে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বরাবর অভিযোগ করেছেন বৃদ্ধা মা মরিয়ম বিবি (৮৪)। তিনি তালতলী উপজেলার ৫ নম্বর বড়বগী ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা।
শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) তালতলী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ছোটবগী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান তৌফিকুজ্জামান তনুর কাছে লিখিত অভিযোগ করেন মরিয়ম বিবি।
অভিযোগে মরিয়ম বিবি উল্লেখ করেন, ২৫ বছর পূর্বে স্বামীর মৃত্যুর পরে অতিকষ্টে সর্বস্ব দিয়ে দারিদ্র্য মোকাবিলা করে সন্তানদের লালন-পালন করে শিক্ষিত এবং সমাজে সুপ্রতিষ্ঠিত করে তুলেছেন। সন্তান হিসেবে মায়ের প্রতি কোনো দায়িত্ব-কর্তব্য পালন করেন না ছেলেরা। মায়ের কোনো খোঁজ-খবর নেন না। ভরণ-পোষণ চাইলেও দেন না। স্বামী মারা যাবার পূর্বে ৩ ছেলে ও ২ মেয়ে রেখে যান। বড় ছেলে মো. মজিবুর, দ্বিতীয় ছেলে মো. সিদ্দিক, ছোট ছেলে মো. জাকির। ২ মেয়ে মোসা. নাসিমা ও মোসা. বেগম। স্বামী মারা যাবার পরে ছেলেমেয়েদের বিবাহ সম্পন্ন করি। বিবাহের পরে ছেলেরা আলাদা থাকেন ও মেয়েরা তাদের স্বামীর বাড়ি বসবাস শুরু করেন। আমি একা বিধবা মানুষ ছোট ছেলের সাথে বসবাস করা শুরু করি। কিন্তু আমার জমানো সব কিছু ব্যয় করার পর ছোট ছেলে, সে ও তার পরিবার নিয়ে আলাদা বসবাস শুরু করে। আমাকে একা বসবাস করতে হয়। আমার ছেলেরা বিগত ৩-৪ বছর পূর্বে সব সম্পদ বিক্রি করে আমাকে পথে বসিয়ে দিয়েছে। সেই থেকে আমার কোনো টাকা পয়সা না থাকায় ছেলেরা আমার কোনোরূপ খোঁজখবর নেয় না। ভুক্তভোগী মরিয়ম বিবি জানান, বর্তমানে তিনি অসুস্থ অবস্থায় অনাহারে, অর্ধাহারে ও বিনা চিকিৎসায় দিন কাটালেও অভিযুক্ত ছেলেরা তাকে ভরণ-পোষণ দিচ্ছেন না। বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার হুমকি-ধমকি দিয়ে মানসিকভাবে নির্যাতন করেন। এমনকি বৃদ্ধাশ্রমে রাখার হুমকি দেন। ফলে বাধ্য হয়ে তিনি ইউনিয়ন পরিষদে অভিযোগ দায়ের করেছেন সুষ্ঠু বিচারের আশায়।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে ছোট ছেলে মো. জাকির বলেন, আমার মায়ের সাথে আমাদের স্ত্রীদের বনিবনা না হওয়ার কারণে আমার মা এসব মিথ্যা অভিযোগ দিছেন।
এ বিষয়ে ছোটবগী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. তৌফিকুজ্জামান তনু বলেন, আমি দেখেছিলাম তাদের অভিযোগ ছেলেদের বউয়ের সাথে মিলেমিশে থাকতে পারে না। পরে ছেলেরা জানিয়েছেন ভরণপোষণের ব্যবস্থা করা হবে।
মন্তব্য করুন