হাদিউল হৃদয়, তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ)
প্রকাশ : ১৩ নভেম্বর ২০২৩, ১১:২৭ এএম
আপডেট : ১৩ নভেম্বর ২০২৩, ১১:৫৯ এএম
অনলাইন সংস্করণ

চলনবিলের পতিত জলাশয়ে পানিফল, সচ্ছলতার স্বপ্নে কৃষক

পানিফল তোলায় ব্যস্ত চাষি। ছবি : কালবেলা
পানিফল তোলায় ব্যস্ত চাষি। ছবি : কালবেলা

সিরাজগঞ্জের চলনবিল অঞ্চলে মৌসুমি পানিফল চাষে কৃষকদের আগ্রহ বাড়ছে। এরই মধ্যে লাভজনক এই ফল চাষ করে অনেক চাষির পরিবারে সুদিন ফিরছেন। চলনবিলের বিভিন্ন খাল-বিল-জলাশয়, পতিত জমিতে এখন শোভা পাচ্ছে পানিফলের ক্ষেত। জলাশয়ে চাষ হওয়া পানিফল স্থানীয় চাষিদের কাছে ‘পানি শিঙাড়া’ নামেও পরিচিত। নিচু এলাকার বিল-জলাশয়ে মৌসুমি ফসল হিসেবে পানিফল চাষ হয়।

এসব পানিফল বিক্রির জন্য গুরুদাপুর উপজেলার চাঁচকৈড় হাট, নাটোরের সিংড়া বাজার, তাড়াশ উপজেলার নওগাঁ হাট, কালিবাড়ি হাট, নিমগাছি হাট, রানীরহাট, গুল্টাবাজার, কাটাগাড়িসহ বিভিন্ন হাটবাজারে কেনাবেচা হয়। লাল রঙের হাইব্রিড পানিফল প্রতি মণ ৪৫০ টাকা, সবুজ রঙের তাজা পানিফল ৬৫০ টাকা, পাকা পানিফল ৭৫০ টাকা এবং কয়েক দিন আগে তোলা কালো রঙের পানিফল মণ ৪০০ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে।

সিংড়া উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, গত পাঁচ থেকে ছয় বছর ধরে এ উপজেলায় বাণিজ্যিক ভিত্তিতে পানিফল চাষ হচ্ছে। লাভজনক হওয়ায় প্রতি বছরই এ ফলের চাষ বাড়ছে। সিংড়া পৌরসভা, কলম, শেরকোল, তাজপুর, ও রামানন্দ খাজুরা ইউনিয়নে পতিত ও নিচু জমিতে চাষ হচ্ছে পানিফল।

সিংড়া পৌর শহরের চকসিংড়া বিলে নিচু জমিতে ছয় বছর ধরে পানিফল চাষ করছেন সাইফুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘ছয় বছর আগে অল্প জায়গায় পরীক্ষামূলক চাষ করে ভালো ফলন পাই। এ বছর দুই বিঘা জমিতে চাষাবাদ করেছি। খরচ হয়েছে ১৫ হাজার টাকা। পাইকারি প্রতি মণ ১ হাজার টাকায় বিক্রি করছি। আশা করি এ বছর ৫০ হাজার টাকা বিক্রি করতে পারব।’

আরেক চাষি আব্দুর রশিদ বলেন, ‘পানিফল চাষে খরচ কম, লাভ বেশি হওয়ায় আমাদের এলাকায় প্রতি বছর চাষ বাড়ছে। পানিফল চাষে অনেকের সংসারে সচ্ছলতা ফিরেছে। এবার ফলন ও বাজারমূল্য দুটোই ভালো আছে।’

চাঁচকৈড় বাজারের পানিফলের ব্যাপারী শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এক মাস আগে মৌসুমের শুরুতে প্রতি মণ পাকা পানিফল ১ হাজার ৮০০ এবং লাল রঙের পানিফল প্রতি মণ ১ হাজার টাকা দরে কেনাবেচা হয়েছে। এখন আমদানি বেড়ে যাওয়ায় দাম অর্ধেকে নেমে এসেছে।’

চাষি রায়হান আলী বলেন, ‘প্রতি মণ পানিফল ৪০০ টাকার কমে বিক্রি করলে চাষিদের লোকসান হবে। গত বছর মৌসুমের শেষেও এই বাজারে প্রতি মণ পানিফল মানভেদে ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা দরে কেনাবেচা হয়েছে।’

সিংড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ খন্দকার ফরিদ বলেন, ‘পতিত থাকা বিল-জলাশয়ে চাষিরা পানিফল চাষ করছেন। এতে খরচ ও পরিশ্রম কম, লাভ বেশি। ফলে এ পেশায় ঝুঁকছেন কৃষকরা। কৃষি বিভাগ সব সময় চাষিদের পাশে রয়েছে।’

তাড়াশ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আব্দুল্লাহ্ আল মামুন বলেন, ‘চলনবিল একটি বৃহত্তর এলাকা। বিলের বিভিন্ন খাল-জলাশয়ে পানি ফল থাকতে পারে। তবে কেউ বাণিজ্যিকভাবে চাষ করেছে এমন কোনো তথ্য আমাদের অফিসে নেই।’

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ভূমিকম্প / জবি ক্যাম্পাস বন্ধ ঘোষণা, হল ছাড়ছেন শিক্ষার্থীরা

ইবির ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের নতুন ডিন ড. আব্দুস শাহীদ

সামুদ্রিক নিরাপত্তা নিয়ে চীন-যুক্তরাষ্ট্রের বৈঠক

সাংবাদিকদের ওপর হঠাৎ কেন ক্ষুব্ধ সোহেল রানা

‘তৌহিদি জনতার’ সঙ্গে বাউল শিল্পীদের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া, আহত ৪

ভূমিকম্প ঝুঁকি / গ্যাস কূপ খনন কার্যক্রম বন্ধ

তরুণদের নিয়ে প্লাস্টিকমুক্ত ভবিষ্যৎ গড়ার অভিযানে ‘তারুণ্যের উৎসব ২০২৫’

না ফেরার দেশে সাবেক খেলোয়াড় ও আম্পায়ার

সময় বাড়ল রিটার্ন দাখিলের, দেবেন যেভাবে

জাতিসংঘ-বাংলাদেশ-মালদ্বীপের সমন্বিত উদ্যোগে অভিবাসী কল্যাণে নতুন সম্ভাবনা

১০

চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে কয়েদির মৃত্যু

১১

বুলবুলকে ‘বাংলার এরদোয়ান’ বললেন সাদিক কায়েম

১২

ফেনীকে নতুন করে গড়তে চাই, সুযোগ দিন : মঞ্জু

১৩

৪৭তম বিসিএস / শাহবাগে পরীক্ষার্থীদের অবস্থান, যান চলাচল বন্ধ

১৪

ভূমিকম্পে এক ভবনে হেলে গেল আরেকটি ভবন, এলাকায় আতঙ্ক

১৫

যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়ে বিশ্ববাজারে বড় বিপদে ভারত

১৬

‘আয়ারল্যান্ডকে অভিনন্দন, দারুণ ব্যাটিং করেছে তারা’

১৭

আয়কর রিটার্ন দাখিলের সময় বাড়ল

১৮

ভূমিকম্প আতঙ্ক : জবিতে ২৭ নভেম্বর পর্যন্ত ক্লাস পরীক্ষা বন্ধ

১৯

পদ্মার চর থেকে আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার

২০
X