প্রদীপ মোহন্ত, বগুড়া ব্যুরো
প্রকাশ : ২৭ নভেম্বর ২০২৩, ০৯:১০ এএম
অনলাইন সংস্করণ

বগুড়ার সাতটি আসনে চারটিতেই নতুন মুখ

বগুড়ায় সাত আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রাপ্তরা। ছবি : কালবেলা
বগুড়ায় সাত আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রাপ্তরা। ছবি : কালবেলা

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। রোববার (২৬ নভেম্বর) দুপুরে বগুড়ার সাত আসনে নৌকার মাঝিদের নাম ঘোষণা করেন দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

এর মধ্যে বগুড়া-১ আসনে সাহাদারা মান্নান, বগুড়া-২ আসনে তৌহিদুর রহমান মানিক, বগুড়া-৩ আসনে সিরাজুল ইসলাম খান রাজু, বগুড়া-৪ আসনে হেলাল কবিরাজ, বগুড়া-৫ আসনে মজিবর রহমান মজনু, বগুড়া-৬ আসনে রাগেবুল আহসান রিপু এবং বগুড়া-৭ আসনে ডা. মোস্তফা আলম নান্নুকে মনোনয়ন দিয়েছে আওয়ামী লীগ। এদের মধ্যে চার জনই নতুন মুখ।

এর আগে বগুড়ায় সাত আসনে নৌকার মনোনীত প্রার্থী হওয়ার প্রত্যাশায় দল থেকে ৫৩ জন মনোনয়ন সংগ্রহ করেছিলেন। এদের মধ্যে যাচাই-বাছাই শেষে সাতজনকে চূড়ান্ত করা হয়।

বগুড়ার-১ (সারিকান্দি-সোনাতলা) আসনে মনোনীত প্রার্থী হয়েছেন সাহাদারা মান্নান। আসনটিতে আমৃত্যু সংসদ সদস্য ছিলেন তার স্বামী আব্দুল মান্নান। তিনি আওয়ামী লীগের হয়ে নির্বাচনে অংশ নিয়ে ২০০৮ সালে প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি। এরপর ২০১৪ ও ২০১৮ সালেও এমপি নির্বাচিত হন তিনি। পরবর্তীতে ২০২০ সালের ১৮ জানুয়ারি ঢাকার ল্যাবএইড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান আব্দুল মান্নান। এরপর আসনটিতে উপনির্বাচনের মাধ্যমে সংসদ সদস্য হিসেবে স্বামীর স্থানে আসেন সাহাদারা মান্নান। তিনি সারিয়াকান্দি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্বও পালন করেছেন।

বগুড়া-২ (শিবগঞ্জ) আসনে নৌকার মাঝি হিসেবে মনোনীত হয়েছেন তৌহিদুর রহমান মানিক। তিনি নতুন মুখ। বিগত সময়ে তিনি শিবগঞ্জ পৌরসভার নৌকা প্রতীকে পরপর দুবার মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। এ ছাড়াও তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। বিগত সময়ে ২০১৪ সালে আসনটি আওয়ামী লীগের জোটের শরিক জাতীয় পার্টির হাতে ছেড়ে দেওয়া ছিল। সে সময় আসনটিতে সংসদ সদস্য হন জাতীয় পার্টির নেতা শরিফুল ইসলাম জিন্নাহ। পরবর্তীতে ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও শরিফুল ইসলাম সংসদ সদস্য হন।

বগুড়া-৩ আসনে এবার নৌকা নিয়ে লড়ার করার দায়িত্ব পেয়েছেন নতুন মুখ সিরাজুল ইসলাম খান রাজু। ২৭ বছর আদমদীঘি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছিলেন তিনি। পরবর্তীতে গত ১০ বছর ধরে উপজেলা চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছিলেন তিনি। এ ছাড়া ২০২০ সাল থেকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্বেও আছেন সিরাজুল ইসলাম। আসনটিতে ২০১৪ ও ২০১৮ সালে আওয়ামী লীগের জোটের শরিক জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য নুরুল ইসলাম তালুকদার দায়িত্বে ছিলেন।

বগুড়া-৪ আসনে মনোনয়ন দেওয়া হয় নতুন মুখ কাহালু উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও কাহালু পৌরসভার সাবেক মেয়র হেলাল উদ্দিন কবিরাজ। গত দুই দশক ধরে আসনটিতে আওয়ামী লীগ প্রার্থী বঞ্চিত হয়ে আছে। তাদের হয়ে জোটের অন্য শরিক জাসদের বগুড়া জেলা শাখার সভাপতি রেজাউল করিম তানসেন নির্বাচন করেন বিগত সময়ে। কিন্তু খুব একটা ভালো করতে পারেননি। শুধু ২০১৪ সালে বিএনপি নির্বাচনে অংশ না নেয়ায় ভোটে জয়লাভ করেন তিনি। কিন্তু পরবর্তী ২০১৮ সালে নির্বাচনে ধানের শীষের প্রার্থী মোশারফের কাছে হেরে যান তানসেন।

বগুড়া-৫ আসনে চমক খুব বেশি দেখা গেছে। ২০০৮ সাল থেকে নিয়মিত নির্বাচিত হয়ে আসা আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ও সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা হাবিবর রহমানকে এবার পরিবর্তন করা হয়েছে। তার পরিবর্তে আসনটিতে এবার নৌকার মাঝি করা হয়েছে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও শেরপুর উপজেলা চেয়ারম্যান মজিবর রহমান মজনুকে। তিনিও নতুন মুখ। তিনি দীর্ঘদিন ধরে বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। পরবর্তীতে বগুড়ার আওয়ামী লীগের প্রবীন নেতা মমতাজউদ্দিনের মৃত্যুর পর ২০১৯ সালে মজিবর রহমান মজনু সভাপতি হন। তিনি বর্তমানে শেরপুর উপজেলা চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন।

বিএনপির দুর্গ বলে পরিচিত বগুড়া-৬ আসনে চলতি বছরে ফেব্রুয়ারির উপনির্বাচনে রাগেবুল আহসান রিপু নৌকা প্রতীকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। দ্বাদশ নির্বাচনেও ফের তাকেই মনোনীত করেছে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ।

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের বাড়ি খ্যাত বগুড়া-৭ আসনটিতেও বিগত সময়ে জোটের শরিক জাতীয় পার্টির মনোনীত ব্যক্তি সংসদ সদস্য ছিলেন। এবার আসনটিতে নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন পান ডা. মোস্তফা আলম নান্নু।

ডা. মোস্তফা আলম রাজশাহী মেডিকেল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়ালেখা শেষ করেন। তিনি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের দুবার সিনেট সদস্য ছিলেন। এ ছাড়া বিএমএর বগুড়া জেলা সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। এর আগে বগুড়া জেলা স্বাচিপের সাবেক সভাপতি ছিলেন।

২০০৮ সালে বগুড়ার ৬, ৭ ও ফেনী-১ আসনে জয়ী হয়েছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। কিন্তু দুটি বেছে নেয়ার কারণে বগুড়া-৭ আসনটি শূন্য হয়ে পড়ে। এজন্য ২০০৯ সালে আসনটিতে উপনির্বাচন হয়। ওই নির্বাচনে বিএনপির মওদুদ আহমেদের বিপরীতে নৌকা নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন মোস্তফা আলম নান্নু।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

জানুয়ারি থেকে সচিবালয় সম্পূর্ণরূপে একবার ব্যবহার্য প্লাস্টিকমুক্ত হবে : পরিবেশ উপদেষ্টা

মোবাইলে যেভাবে দেখবেন আফগানিস্তান-বাংলাদেশ ম্যাচ

মুখের ব্রণ চেপে ফাটাচ্ছেন? হতে পারে যে ভয়াবহ রোগ

ওয়াশিংটন পোস্টের জরিপ / গাজা যুদ্ধ নিয়ে ইসরায়েলের সমালোচনায় অধিকাংশ মার্কিন ইহুদি

স্ত্রী-শাশুড়িকে কুপিয়ে জখম, ধানক্ষেতে পড়ে ছিল যুবকের নিথর দেহ

এসএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য নতুন নিয়ম চালু করল এনসিটিবি

ভাইকে বাঁচাতে ঝাঁপ দেয় বোন, ভেসে উঠল দুজনের নিথর দেহ

ইলিশ রক্ষায় অভিযান, প্রথমদিনেই ২২০ টন জব্দ

কখন এবং কতটা শক্তিতে আঘাত হানতে পারে ঘূর্ণিঝড় ‘শক্তি’?

কুমিল্লায় বজ্রপাতে ৩ জনের মৃত্যু

১০

মতবিনিময় সভায় বক্তারা / মহাসড়কে নিরাপত্তা ও অপরাধ দমনে জনগণের সহযোগিতা অপরিহার্য

১১

৩ বিভাগে অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস

১২

নারায়ণগঞ্জে শান্তিপূর্ণ দুর্গাপূজা উদযাপন

১৩

কারখানায় কাজ বন্ধ, মহাসড়কে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বিক্ষোভ

১৪

বিশ্বকাপের ম্যাচেও হাত মেলাননি ভারত ও পাকিস্তান অধিনায়ক

১৫

আ.লীগের সাবেক এমপি মোজাম্মেল হক গ্রেপ্তার

১৬

স্ত্রীকে হত্যা করে লাশ গুম, স্বামীর মৃত্যুদণ্ড

১৭

এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের সুখবর দিল অর্থ মন্ত্রণালয়

১৮

বিপৎসীমার ওপরে তিস্তার পানি, নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

১৯

‘ধর্ম অবমাননা’ : সেই অপূর্ব পালকে নিয়ে যা বললেন আহমাদুল্লাহ

২০
X