বাংলাদেশি স্বামীকে না পেয়ে বুকভরা বেদনা নিয়ে ফিরে গিয়েছিলেন ভারতীয় তরুণী রিয়া বালা (৩২)। সেই তরুণী ভারতে ফিরে যাওয়ার চারদিন পর আবারও স্বামীর খোঁজে ছুটে এসেছেন বাংলাদেশে।
বুধবার (৬ ডিসেম্বর) বিকেলে তেঁতুলিয়া উপজেলার বাংলাবান্ধা ইমিগ্রেশন দিয়ে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করেন তিনি। তবে এবার ভারতীয় ওই নারীর জন্য শ্বশুরসহ বাংলাদেশের স্বামীর পরিবারের লোকজনকে ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট এ অপেক্ষা করতে দেখা গেছে।
২৯ ডিসেম্বর স্বামীর খোঁজে বাংলাদেশে আসেন ভারতীয় নারী রিয়া বালা। কিন্তু তার আসার খবর পেয়ে গা ঢাকা দেয় স্বামী বিটু রায়। এক পর্যায়ে তার নিরাপত্তার কথা উপজেলা প্রশাসনকে জানালে গত ২ ডিসেম্বর তাকে তেঁতুলিয়া মডেল থানায় নারী-শিশু সেলে রাখা হয়। পরদিন ৩ ডিসেম্বর রিয়া বালা ভারত ফেরত যেতে সম্মত হলে তাকে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
এদিকে ভারতীয় ওই নারী আবারও দেশে আসার খবরে তেঁতুলিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফজলে রাব্বি ও তেঁতুলিয়া মডেল থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবু সাঈদ চৌধুরীসহ সংশ্লিষ্টরাও ইমিগ্রেশন এ উপস্থিত হন। পরে শ্বশুর শ্রী নিখিল চন্দ্র রায় উপজেলা প্রশাসনের কাছে ভারতীয় ওই নারীকে পুত্রবধূ হিসেবে ঘরে তোলার লিখিত অঙ্গীকার দিয়ে বাড়ি নিয়ে যান।
জানা গেছে, ভারতের বর্ধমান জেলার অম্বিকা কালনা এলাকার শ্যামল কান্তির মেয়ে রিয়া বালার সাথে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে পরিচয়ের সূত্র ধরে বাংলাদেশি যুবক পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ার উপজেলার দেবনগর ইউনিয়নের শিবচন্ডী এলাকার অখিল চন্দ্র রায়ের ছেলে বিটু রায়ের সাথে ওই নারীর প্রেমের সম্পর্ক হয়। এক পর্যায়ে বিটু রায় ভারতের জলপাইগুড়িতে গিয়ে প্রেমিকা রিয়া বালার সাথে দেখা করেন এবং গত ২১ সেপ্টেম্বর জলপাইগুড়ি জেলার রাজগঞ্জ থানার শিকারপুর এলাকায় তার এক আত্মীয়ের বাড়িতে নিয়ে রিয়া বালাকে বিয়েও করেন। বিয়ের পর প্রায় এক মাস ওই এলাকায় বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকেন বিটু। এরপর দেশে ফিরে রিয়া বালার সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেওয়া স্বামীর খোঁজে বাংলাদেশে আসেন রিয়া বালা।
রিয়া বালা বলেন, বিটু রায়ের বিয়ের পর এক মাস ভাড়া বাড়িতে ছিলাম। কিন্ত কৌশলে দেশে গিয়ে আমার সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। আমি স্বামীর খোঁজে বাংলাদেশে তার বাড়িতে থাকতে না পেরে ভারতে ফিরে যাই। স্বামীসহ শ্বশুর বাড়ির লোকজনের সম্মতিতে আবার এসেছি। তবে এবার আমাকে নিতে শ্বশুরসহ তার পরিবারের লোকজন এসেছেন।
শ্বশুর শ্রী নিখিল চন্দ্র বলেন, ছেলে বাড়িতে ছিল না। তার সাথে যোগাযোগও হচ্ছিল না। এজন্য তাকে বাড়িতে রাখা সম্ভব হয়নি। তবে এখন ছেলের সাথে কথা হয়েছে। সে খুলনা থেকে আসছে। আর আমরা নববধূকে নিয়ে বাড়ি আসছি।
তেঁতুলিয়া মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু সাঈদ চৌধুরী বলেন, বুধবার বিকেলে ভারতীয় ওই নারী বাংলাবান্ধা ইমিগ্রেশন দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেন। পরে উপজেলা প্রশাসনের কাছে অঙ্গীকারপূর্বক শ্বশুর বাড়ির লোকজন তাকে বরণ করে বাড়িতে নিয়ে যান।
মন্তব্য করুন