কক্সবাজার-১ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী জাফর আলমের স্ত্রী স্কুলশিক্ষিকা শাহেদা বেগমের নামে ৬১৯ শতক জমি রয়েছে। রয়েছে নগদ ২০ লাখ টাকাও। তিনি চকরিয়া উপজেলার পালাকাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে জমা দেওয়া হলফনামা থেকে এ তথ্য জানা যায়। একজন স্কুলশিক্ষিকার নামে বিপুল নগদ টাকা ও জমির মালিকানার উৎস নিয়ে এলাকায় আলোচনা-সমালোচনা চলছে।
এদিকে জাফর আলম নিজের নামে ব্যবসা থেকে ২৪ লাখ ৭৯ হাজার ৬৮০ টাকা আয় দেখালেও কোন ধরনের ব্যবসা করেন সেটি উল্লেখ করেননি হলফনামায়। এ ছাড়া স্ত্রীর নামে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা রয়েছে আরও ২৮ লাখ ৭৫ হাজার ৫০১ টাকা। রয়েছে ১৮ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র ও ৩০ ভরি ওজনের স্বর্ণালংকার। ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকার মূল্যবান জিনিসপত্র। তার দেওয়া তথ্য মতে স্ত্রীর সম্পদের পরিমাণ দাঁড়ায় ২ কোটি ৬৮ লাখ ৭১ হাজার ২৫৪ টাকা।
একজন স্কুলশিক্ষিকার নামে বিপুল পরিমাণ নগদ টাকা ও জমির মালিকানার উৎস নিয়ে জেলাজুড়ে আওয়ামী লীগ ও দলের বাইরে নেতাকর্মীদের মধ্যে চলছে সমালোচনার ঝড়। এ ছাড়া জাফর আলমের বিরুদ্ধে দলের কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের, চিংড়ি ঘের দখল, সরকারি ও ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি দখল, ডাকাতির অভিযোগও করছেন তারা।
জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও ফাসিয়াখালী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন বলেন, ‘জাফর আলমের শ্বশুরবাড়ি আমার ইউনিয়নে অবস্থিত। তাদের পরিবারে জায়গাজমি নেই বললেই চলে। কিন্তু একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এমপি হওয়ার পর বদলে যায় তাদের পরিবারের ভাগ্য। এমপি পদটি তার পরিবারের জন্য আলাদিনের চেরাগ হয়ে ওঠে। তাই দলের মনোনয়ন না পেয়ে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ করছেন তিনি। এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করে সাধারণ মানুষের সম্পদ লুট করে নিজে ও স্ত্রী, কন্যা-পুত্রের নামে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন।’
মাতামুহুরি সাংগঠনিক উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মহসিন বাবুল বলেন, ‘একজন স্কুলশিক্ষিকার বিপুল পরিমাণ অর্থের উৎস কী? এ প্রশ্নটি এখন সামনে চলে আসছে। আমরা বিষয়টি তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।’
জানতে জাফর আলমকে ফোন করা হলেও সংযোগ না পাওয়ায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে ক্ষুদে বার্তা পাঠালেও তিনি কোনো প্রতিক্রিয়া জানাননি।
মন্তব্য করুন