মুন্সীগঞ্জে রহস্যজনক বিস্ফোরণে একই পরিবারের শিশু ও নারীসহ চারজন দগ্ধ হয়েছে। শনিবার (৯ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৬টার দিকে শহরের ইদ্রাকপুর এলাকার আকবর মিয়ার পাঁচতলা ফ্ল্যাটে এই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন জেলা প্রশাসক মো. আবু জাফর রিপন। আগামী তিন কর্ম দিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
বিস্ফোরণে আহতদের উদ্ধার করে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক আহতদের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের বার্ন ইউনিটে প্রেরণ করে।
আহতরা হলেন, ফ্লাটটির ভাড়াটিয়া ও মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তরের প্রোগ্রাম অফিসার রিজভী আহমেদ রাসেল (৪৫) তার স্ত্রী রোজী আক্তার (৩০) তাদের আড়াই বছরের ছেলে রাইয়ান ও তার ৬০ বছরের মা সাহিদা বেগম। এদের মধ্যে রাসেলের মায়ের অবস্থা খুবই গুরুতর।
স্থানীয়রা জানায়, সকালে হঠাৎ বিকট বিস্ফোরণ শব্দ হয়। এতে ফ্লাটটিতে আগুন ধরে যায়। পরে ফায়ার সার্ভিস ও আশপাশের লোকজন দ্রুত এগিয়ে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
এদিকে এ ঘটনায় ফ্লাটে কোনো প্রকার গ্যাস সিলিন্ডারের বোতল পাওয়া যায়নি। রান্নাঘর অক্ষত অবস্থায় রয়েছে। মূলত শোয়ার ঘরে খাট তোশক সবকিছু পুড়ে গেছে। এ ছাড়া আশপাশের সব ফ্লাটের দরজা এবং জানালা ভেঙে রাস্তায় ছড়িয়ে রয়েছে। গ্যাস সিলিন্ডার নয়, রহস্যজনক বিস্ফোরণ ঘটেছে বলে স্থানীয়রা দাবি করছেন।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার মো. আবু ইউসুফ বলেন, বিস্ফোরণে চারজন দগ্ধ হয়েছে। দগ্ধদের উদ্ধার করে উন্নত চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। তবে গ্যাস লিকেজ নাকি অন্য কিছুর কারণে বিস্ফোরণ হয়েছে বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলাচ্ছে ফায়ার সার্ভিসের বিশেষজ্ঞ টিম।
এ ঘটনার পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন জেলা প্রশাসক মো. আবু জাফর রিপন, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আসলাম খান, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাসুদুল আলম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) থান্দার খাইরুল হাসান, মুন্সীগঞ্জ পৌর মেয়র সোহেল রানা রানু ও মুন্সীগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস উপপরিচালক মোস্তফা মহসীনসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।
এ সময় জেলা প্রশাসক মো. আবু জাফর রিপন বলেন, ‘আমরা পুরো বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছি। ইতিমধ্যে সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা সঠিক তদন্ত করে আগামী তিন কর্ম দিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেবেন।’
মন্তব্য করুন