মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় পূর্ব শত্রুতার জেরে এক নারী গ্রাম পুলিশ সদস্যকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় প্রভাবশালী জাবেদ বাবুর্চি ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে।
জানা গেছে, হামলায় আহত ওই নারী গ্রাম পুলিশ সদস্যের নাম শামীমা আক্তার (২৮)। তিনি গজারিয়া উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নের উত্তর ফুলদী গ্রামের শাহাবুদ্দিন ভূঁইয়ার মেয়ে।
গ্রাম পুলিশ সদস্য শামীমা বলেন, স্বামীর সঙ্গে ডিভোর্স হয়ে যাওয়ার পর একটি ছেলে নিয়ে অভাব অনটনে কোনো রকমের দিন কাটছিল তার। এর মধ্যে স্থানীয় একটি প্রাইভেট হাসপাতালে চাকরি করে ৪০ হাজার টাকা জমিয়েছিলেন তিনি। গত প্রায় সাত বছর আগে তার খালাতো বোন সাবিনার মাধ্যমে ডালিয়া বেগম নামে এক নারী টাকাটি সুদে নেন। দক্ষিণ ফুলদী গ্রামের বারেক ফকিরের ছেলে জাবেদ সম্পর্কে ডালিয়ার বিয়াই। সুদে নেওয়ার পরে প্রথম কয়েক মাস সুদের টাকা নিয়মিত পরিশোধ করলেও এরপর থেকে সুদের টাকা পরিশোধ করতে গড়িমসি শুরু করেন ডালিয়া। মূল টাকার জন্য ডালিয়াকে চাপ দিলেও সে টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানায়। এভাবে প্রায় ছয় বছর পেরিয়ে যায়। সম্প্রতি গজারিয়া থানা পুলিশের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে তিনি বিষয়টি জানালে তিনি স্থানীয় ইউপি সদস্যের মাধ্যমে টাকাটি আদায় করে দেন। এ ঘটনার পর ডালিয়া তার উপর ক্ষুব্ধ ছিল। ডালিয়ার বিয়াই জাবেদ একাধিকবার তাকে মারধর করার হুমকি দিয়েছিল।
এর জেরে বৃহস্পতিবার (১৪ ডিসেম্বর) বিকাল চারটার গজারিয়া ইউনিয়ন পরিষদে ডিউটি শেষ করে ব্যাটারিচালিত অটো রিকশাযোগে বাড়ি ফেরার পথে দক্ষিণ ফুলদী এলাকায় ডালিয়ার বিয়াই জাবেদের বাড়ির কাছাকাছি এলে অটোরিকশা চালক গাড়িটি কিছু সময়ের জন্য থামালে জাবেদ তার উপর হামলা করে। পরে জাবেদ বাড়ি থেকে তার স্ত্রী এবং বিয়াইন ডালিয়াসহ আরো কয়েকজনকে ডেকে আনলে তারাও তাকে মারধর করে। তাদের মারধরে তিনি অচেতন হয়ে পড়েন। পরে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়।
বিষয়টি সম্পর্কে গজারিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ০৮ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য হাবিবুর রহমান বলেন, এরকম একটি খবর শুনেছি তবে কী কারণে তাকে মারধর করা হয়েছে তা বলতে পারবো না।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত জাবেদ বলেন, এ ঘটনার সঙ্গে আমি জড়িত না। পাওনা টাকা সুদসহ আদায় করার পরও আজ আমার বাসায় এসে গালিগালাজ করলে আমার স্ত্রী তার প্রতিবাদ করে। এই ঘটনায় আমার স্ত্রীকে সে মারধর করেছে। আমার পরিবারে কোনো সদস্য এই মহিলাকে মারধর করে নাই।
বিষয়টি সম্পর্কে গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. কামরুন নাহার বলেন, বিকাল পৌনে পাঁচটার দিকে আমাদের হাসপাতালে পেশায় গ্রাম পুলিশ এক নারীকে নিয়ে আসা হয়। প্রাথমিক পর্যেবক্ষণ শেষে আমরা তার গায়ে ও গলায় আঘাতের চিহ্ন দেখতে পাই তবে তা গুরুতর নয়। প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাকে হাসপাতালে ভর্তি দেওয়া হয়েছে।
বিষয়টি সম্পর্কে গজারিয়া থানার ওসি মোল্লা সোহেব আলী বলেন, বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে চারটার দিকে একজন নারী গ্রাম পুলিশ সদস্য আমাদের থানায় এসেছিল। আমরা তাকে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করতে বলেছি।
মন্তব্য করুন