ঝিনাইদহে শীত বাড়ার সঙ্গে শিশুদের নিউমোনিয়া, জ্বরসহ শ্বাসতন্ত্রের রোগের প্রকোপ বেড়েছে। প্রতিদিন এ ধরনের রোগে সদর হাসপাতালে গড়ে ৪০ থেকে ৫০ জন শিশু ভর্তি হচ্ছে। হাসপাতালে শয্যা ও জনবল সংকটে বাড়তি রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসক ও নার্সরা।
ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে বর্তমানে শয্যা খালি নেই। হাসপাতালের কক্ষগুলোর মেঝে ও বারান্দায় রেখে চিকিৎসা করা হচ্ছে শিশুদের। প্রতিদিন নতুন করে শিশু ভর্তি হওয়ায় দিন দিন জায়গার শয্যা ও স্থান সমস্যা বেড়েই চলেছে। হাসপাতালে যত শিশু রোগী ভর্তি আছে তার বেশিরভাগই নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত। ৪০ শয্যার শিশু ওয়ার্ডের বিপরীতে চারগুন বেশি রোগী ভর্তি থাকায় জনবল সংকটের কারণে চিকিৎসাসেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসকদের।
স্বাস্থ্য বিভাগের দেওয়া তথ্যমতে, ২৫০ শয্যার হাসপাতালে বর্তমানে শিশু ওয়ার্ডে রোগী ভর্তি রয়েছে ১৪০ জন। গত এক মাসে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে নিউমোনিয়ার সঙ্গে অন্যান্য সমস্যায় দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। মাত্র একজন শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দিয়ে চলছে চিকিৎসা সেবা।
আক্রান্তরা শুধু সদর হাসপাতালেই নয়, সরকারি শিশু হাসপাতালসহ স্থানীয় প্রাইভেট হাসপাতালগুলোতেও ভিড় করছেন।
বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের রাজিব বলেন, ‘আমার সন্তানকে সদর হাসপাতালে আনলে দেখি রোগী রাখার কোনো বেড খালি নেই। মেঝে ও বারান্দাতেও জায়গা নেই। তাই কোনো উপায়ন্ত না পেয়ে প্রাইভেট হাসপাতালে চিকিৎসা করাচ্ছি।’
হাসপাতালটির সুফিয়া নামের এক নার্স বলেন, ‘হাসপাতালে কম সংখ্যক জনবল নিয়ে এত রোগীর চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছি আমরা। তারপরও সাধ্যমতো চেষ্টা করছি সব রোগীর চিকিৎসা দিতে।’
ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের কনসালট্যান্ট (শিশু ওয়ার্ড) ডা. মো. আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, শিশুকে ঠান্ডাজনিত রোগ থেকে বাঁচাতে অভিভাবকদের সচেতনতার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
মাগুরা মেডিকেল কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ অলোক সাহা বলেন, শীত বাড়লে শিশুদের নানা ধরনের রোগ হতে পারে। সেজন্য শিশুদের সব সময় গরম কাপড় পরাতে হবে। রাতে পারলে রুম হিটার ব্যবহার করতে হবে বা শিশুকে কাপড় দিয়ে হাত-পা ও মাথা ভালো করে ঢেকে রাখতে হবে। তাহলে শিশুরা রোগ থেকে নিরাপদে থাকবে।
মন্তব্য করুন