জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে নির্বাচনী প্রচারে নৌকা ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় ৯ জন আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। বুধবার (২৭ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে হাসপাতাল গেটের পূর্ব দিকে সন্ধ্যায় পৌর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে নৌকার প্রার্থী আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপনের নির্বাচনী পথসভা অনুষ্ঠিত হয়। পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি এনায়েতুর রহমান আকন্দের সভাপতিত্বে পথসভার অনুষ্ঠানের প্রায় শেষ পর্যায়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী গোলাম মাহফুজ চৌধুরী অবসরের নেতৃত্বে কাঁচি মার্কার মিছিলে বিভিন্ন রকম স্লোগান দিতে দিতে পথসভা অতিক্রম করার সময় উভয়পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে থানার ওসি শাহিনুর রহমানের নেতৃত্বে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এতে উভয়পক্ষের নয়জন আহত হয়েছে।
সংঘর্ষের প্রতিবাদে তাৎক্ষণিক স্বতন্ত্র প্রার্থী গোলাম মাহফুজ চৌধুরী কলেজ বাজার গরুহাটিতে আনোয়ারুল ইসলাম বাবলুর সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সভা করেন। এ সময় স্বতন্ত্র প্রার্থী অবসর বলেন, আমাদের শান্তিপূর্ণ মিছিলে নৌকার কর্মী-সমর্থকরা অতর্কিত হামলা চালায়। এতে আমার কর্মী-সমর্থকরা আহত হয় এবং কর্মীরা আক্কেলপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসা নেয়।
অপরদিকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোকছেদ আলী প্রামাণিক সাংবাদিকদের বলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী গোলাম মাহফুজ চৌধুরীর সমর্থকরা ষড়যন্ত্র করে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে পথসভা শেষ হওয়ার মুহূর্তে সেখানে উসকানিমূলকভাবে মিছিল থেকে স্লোগান দেয় ও আমাদের ওপরে অতর্কিত হামলা চালায়। উচিত ছিল কোনো রাজনৈতিক দল কোনো প্রোগ্রাম করলে অন্য প্রার্থীদের প্রোগ্রাম শেষে করা উচিত। এটা রাজনৈতিক শিষ্টাচার। আমরা এই পথসভা করার জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা এবং থানার ওসিকে লিখিত অবহিত করেছি। স্বতন্ত্র প্রার্থী নিশ্চিত পরাজয় জেনে আমাদের শান্তিপ্রিয় পথসভায় এই উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ঘটনাটি ঘটিয়েছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তসাপেক্ষে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও প্রশাসনকে সঠিক বিচার করার জন্য আহ্বান জানাই।
আক্কেলপুর উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আদনান জানান, হাসপাতালে আহত অবস্থায় নয়জন চিকিৎসা নিতে আসেন। তাদের মধ্য থেকে চারজন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে চলে যান এবং ৫ জন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
আক্কেলপুর থানার ওসি শাহিনুর রহমান বলেন, আওয়ামী লীগ ও স্বতন্ত্র প্রার্থীসহ কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ায় এই সংঘর্ষ ঘটে। জয়পুরহাট পুলিশ সুপার কার্যালয়ে খবর দিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে জয়পুরহাট অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) ফারজানা হোসেন, জয়পুরহাট সহকারী পুলিশ সুপার (পাঁচবিবি সার্কেল) আফজালুল ইসলাম, ডিবি ও র্যাবের সদস্যগণ টহল দেয়।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা মনজুরুল আলমের সঙ্গে এ বিষয়ে মুঠোফোনে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তাদের পাওয়া যায়নি।
মন্তব্য করুন