নৌকায় ভোট না দিলে ভোটকেন্দ্র যাওয়ার দরকার নেই এবং যাদের সন্দেহ হবে তাদের টেবিলের ওপরে ভোট মারতে হবে বলে ভোটারদের হুমকি দিয়েছেন সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার কাশিমাড়ি ইউনিয়নের এক আওয়ামী লীগ নেতা।
সোমবার (১ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় উপজেলার কাশিমাড়ি ইউনিয়নের নতুন বাজার এলাকায় সাতক্ষীরা-৪ (শ্যামনগর-কালীগঞ্জ আংশিক) আসনের নৌকার প্রার্থী এস এম আতাউল হক দোলনের প্রচারণায় এ বক্তব্য দেন শ্যামনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ ও কাশিমাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুস সবুর মোল্লা। পরে তার বক্তব্যের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কাশিমাড়ি ইউনিয়নের নতুন বাজার এলাকার কারিগর পাড়ায় নৌকা প্রার্থীর একটি উঠান বৈঠক হয়। সেখানে শ্যামনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ ও কাশিমাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুস সবুর মোল্লা তার বক্তব্যে বলেন, ‘সকাল বেলা উঠে আল্লাহর নাম করে ভোটকেন্দ্রে যাবেন, আমি সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ভোটকেন্দ্র থাকব কোনো সমস্যা নেই ইনশাআল্লাহ। কোনো সমস্যা হলে আমি সেখানে আগে থাকব। সবাই দয়া করে ৭ তারিখে নৌকা মার্কায় ভোট দিতে যাবেন। আর যারা নৌকা মার্কায় ভোট দেবেন না, দয়া করে ওই দিকে যাওয়ার দরকার নেই। একদম স্পষ্ট কথা। যাদের সন্দেহ হবে আমার তাদের কিন্তু টেবিলে ভোট মারতে হবে, এমনই গোপনে মারতে দেব না। আর যাদের সন্দেহ হবে না, তারা গোপনে মারবে। আমি বেঁচে থাকতে আমাদের ৮ নম্বর কেন্দ্রে অন্তত এর বিকল্প কিছু হবে না।’
এ সময় ওই উঠান বৈঠকে কাশিমাড়ি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসেন সানা, গোবিন্দপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ জি এম শফিকুল ইসলামসহ অন্যান্য নেতাকর্মীরাও উপস্থিত ছিলেন।
এ বিষয়ে সাতক্ষীরা-৪ আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী আতাউল হক দোলন বলেন, বক্তব্যটি হয়তো ১৮ সালের, নতুন বক্তব্য না। তবে কেউ যদি এ ধরনের কথা বলে থাকে সেটি তার ব্যক্তিগত বক্তব্য প্রার্থী বা দলের না।
সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাজিবুল আলম বলেন, নৌকায় ভোট না দিলে কেন্দ্রে যেতে নিষেধ করা ওই আ.লীগ নেতাকে দুপুরে ডাকা হয়েছিল। সেখানে অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যান এবং ওসি উপস্থিত ছিলেন।
অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যান ও সিনিয়র সহকারী জজ প্রবীর কুমার দাস জানান, আমি তাকে ডেকে তার বক্তব্য শুনেছি, ইউএনও এবং ওসি একটি মুচলেকা নিয়েছে। অনুসন্ধান কমিটির পক্ষ থেকে এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনে একটি সুপারিশপত্র পাঠানো হবে। এ বিষয়ে কমিশন ব্যবস্থা নেবে।
মন্তব্য করুন