ভোটের মাঠে নীরবে অস্থিরতা সৃষ্টির পাঁয়তারা চালাচ্ছেন কক্সবাজার-৩ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী মিজান সাঈদ। ঈগল প্রতীক নিয়ে তিনি নির্বাচনী প্রচার চালাচ্ছেন। এলাকায় পরিচিতি না থাকায় হঠাৎ জনমানুষের মাঝে পরিচিতি পেতে অপকৌশল হিসেবে বিভিন্ন এলাকায় সংঘর্ষ বাধাচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন নৌকার সমর্থকরা।
এরই জেরে গত ২৭ ডিসেম্বর রামু এলাকায় তাদের ভাড়া করা লোক দিয়ে প্রচার গাড়ি ভাঙচুর এবং ৩ জানুয়ারি জোয়ারিয়ানালায় নৌকার প্রার্থী ও কর্মীদের গাড়ি থামিয়ে গায়ে পড়ে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে সংঘর্ষের সৃষ্টি করে।
নির্বাচনের শুরু থেকেই অপকৌশলে অরাজকতা সৃষ্টি ও নৌকা এবং শেখ হাসিনা সরকারকে বিতর্কিত করার অপচেষ্টা চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন নৌকার প্রার্থী সাইমুম সরোয়ার কমল। মনোনয়ন জমার দিনই নির্ধারিত সময়ের এক ঘণ্টা পরে এসে মনোনয়ন জমা দিতে পারেনি অভিযোগ তুলে হৈ চৈ সৃষ্টি করে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, মাঠে যোগ্যতার পরিবর্তে আঞ্চলিকতাকে উসকে দিয়ে এলাকা ভিত্তিক দ্বন্দ্ব সৃষ্টির প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন মিজান সাঈদ। লক্ষ্যে পৌঁছাতে তিনি এলাকায় এলাকায় ভাড়াটিয়া লোক নিয়োগ করেছেন বলেও অভিযোগ তাদের।
জাহিদুল ইসলাম নামে এক যুবক বলেন, মিজান সাঈদ ভোটের রাজনীতি না করে অপকর্ম করে ভোটের শান্ত পরিবেশ অশান্ত সৃষ্টি করতে চাইছেন। এসব বিষয় মাথায় নিয়ে তাকে আইনের আওতায় আনা দরকার।
আবু বক্কর নামে স্বেচ্ছাসেবকলীগের এক নেতা বলেন, কক্সবাজারের উন্নয়নে মুগ্ধ সাধারণ মানুষ নৌকায় ভোট দিতে উন্মুখ হয়ে আছেন। কিন্তু মিজান সাঈদ একের পর এক মিথ্যাচার করে জনগণকে বিভ্রান্ত করছেন। নিজের ভাড়া করা লোক দিয়ে পোস্টার ছিঁড়ে, প্রচার গাড়ি ভেঙে নৌকার প্রার্থীকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চাইছেন।
ঈদগাঁও উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও জালালাবাদ ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান ইমরুল হাসান রাশেদ বলেন, শেখ হাসিনার সরকার টানা তিন মেয়াদে ক্ষমতায় থাকাকালে ধারাবাহিক উন্নয়ন কার্যক্রম চালিয়েছেন। এবারের ভোটে কৃতজ্ঞতা স্বরূপ তার প্রতিদান দেওয়ার কথা। সবসময় সরকারি দলের কর্মী হয়ে থাকা কিছু লোক নির্বাচনে এসে জয় পেলে উন্নয়ন করে এলাকা সাজানোর গল্প বলছেন। এটা সাজানো বাগানে দাঁড়িয়ে বাগান সাজানোর গল্প বলার মতোই। তারা আবার দলের চেয়ে এলাকা ভিত্তিক সহানুভূতি নিশ্চিতে গোপন তৎপরতা চালাচ্ছেন।
নৌকার প্রার্থী সাইমুম সরোয়ার কমল বলেন, মূলত এক সময়ের শিবির কর্মী মিজান আওয়ামী লীগের সুবিধাভোগী। তিনি বিএনপি আমলে খালেদা জিয়ার কাছ থেকে সংবর্ধনা নিয়ে সে সময়ের সরকারের কাছাকাছি ছিলেন। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ঢাকায় আওয়ামী লীগের নামকরা ব্যারিস্টারদের সঙ্গে মিশে গিয়ে আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের সদস্য হন। এরপর থেকে বনে গেছেন আওয়ামী লীগার। কিন্তু পুরোনো অভ্যাস ছাড়তে পারেননি। রক্তে বয়ে চলা আওয়ামী সরকার ও নৌকা বিরোধী মনোভাব প্রকাশে নৌকার প্রার্থীকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে অপকর্ম ও মিথ্যাচার করে যাচ্ছেন। তিনি নাটক সাজিয়ে সহানুভূতি পেতেই ভাড়াটিয়া লোক দিয়ে অপরাধ করে আমার ওপর দোষ চাপাচ্ছেন। এতে আমার পারিবারিক ও আত্মীয়তায় বিরোধ থাকা লোকজনকে অপকৌশলে ব্যবহার করে প্রশাসনকে ধোঁকা দিতে চাচ্ছেন। কিন্তু জনগণ এত বোকা নয়। তারা গত দেড়যুগ ধরে আমাকে কাছ থেকে দেখেছে। উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বাজায় রাখতে নৌকাকে বিজয়ী করবেন বলে আমি আশাবাদী।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে ব্যারিস্টার মিজান সাঈদকে ফোন করা হলে কেউ একজন ফোন রিসিভ করে মিজান সাঈদ ব্যস্ত আছে বলে লাইন কেটে দেন। পরে তার ব্যবহৃত হোয়াটসঅ্যাপে ম্যাসেজ দেওয়া হয়। কিন্তু কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি।
তবে, এক সংবাদ সম্মেলনে মিজান সাঈদ তার কর্মী-সমর্থকদের ওপর হামলার এবং পোস্টার ছেঁড়ার জন্য প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী সাইমুম সরওয়ার কমলকে দায়ী করছেন। এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও জানান তিনি।
মন্তব্য করুন