দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-১০ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী মনজুর আলম মঞ্জুর সমর্থককে মারধর, গুলি ও হত্যার হুমকির অভিযোগে আদালতে মামলা করা হয়েছে। মামলায় চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) সাবেক কাউন্সিলর মোহাম্মদ হোসেন হিরণ, তার স্ত্রী মোসাম্মৎ কাজলসহ মোট ছয় জনকে আসামি করা হয়েছে। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) চট্টগ্রাম মেট্টোকে অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
শুক্রবার (১২ জানুয়ারি) মামলা দায়েরের বিষয়টি কালবেলাকে নিশ্চিত করেছেন আদলতের বেঞ্চ সহকারী তারিকুল ইসলাম। এর আগে গত ১১ জানুয়ারি চট্টগ্রাম চতুর্থ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সালাউদ্দিনের আদালতে মামলা করেন গুলিবিদ্ধ পুনাম বড়ুয়া প্রকাশ শান্ত বড়ুয়া।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন মো. কামাল প্রকাশ কাঁচি কামাল ও তার স্ত্রী রাবেয়া মুন্নি মেরী, মাহমুদুর রহমান, মহিউদ্দিন বাচ্চুর স্ত্রী জিন্নাত মহিউদ্দিন।
আদালত সূত্র জানায়, গত ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রামের-১০ আসনের পাহাড়তলী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ভোটকেন্দ্রে সকাল সাড়ে ৯ টার দিকে উপস্থিত হন স্বতন্ত্র প্রার্থী মনজুর আলমের ছেলে মো. সরোয়ার আলম। এ সময় নৌকাপ্রার্থী মহিউদ্দিন বাচ্চুর সমর্থকরা তাকে ভোটকেন্দ্র থেকে চলে যেতে বলেন। একপর্যায়ে মোহাম্মদ হোসেন হিরণ কোমড় থেকে পিস্তল বের করে এবং মহিউদ্দিন বাচ্চুর স্ত্রী জিন্নাত মহিউদ্দিন, মোসাম্মৎ কাজল, মাহমুদুর রহমান ও কাচি কামাল লোহার রড, হকিষ্টিক ও বিভিন্ন অস্ত্র দিয়ে মঞ্জুর সমর্থকদের এলোপাতাড়ি মারধর করেন।
এ সময় কলেজের মূল ফটক থেকে ৪০০ গজ উত্তরে অবস্থান করা মনজুর আলমের সমর্থক পুনাম বড়ুয়ার দিকে গুলি চালান সাবেক কাউন্সিলর হিরণ। গুলিটি তার পেটের মাঝখানে নাভির ওপর গিয়ে লাগে।
মামলার অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, রক্তপাত হতে দেখে বেবি আক্তার ও রোকেয়া আক্তার নামে স্থানীয় দুই নারী এগিয়ে আসেন। এ সময় বেবি আক্তারকে মারধর করেন মহিউদ্দিন বাচ্চুর স্ত্রী জিন্নাত মহিউদ্দিন। পরে রোকেয়া আক্তারকে ধাক্কা মেরে মাটিতে ফেলে দেন সাবেক কাউন্সিলর হিরণের স্ত্রী কাজল । এ ঘটনায় আহত পুনম বড়ুয়া খুলশি থানায় মামলা করতে গেলে থানা মামলা নেয়নি। পরে গত ১১ জানুয়ারি তিনি চট্টগ্রাম আদালতে ৬ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেন।
এ ব্যাপারে মোহাম্মদ হোসেন হিরণের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তার কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
প্রসঙ্গত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন চট্টগ্রাম-১০ আসনে পাহাড়তলী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ভোটকেন্দ্রে গোলাগুলির ঘটনায় মো. জামাল (৩২) নামে আরও একজন যুবক গুলিবিদ্ধ হয়। জামালও ওই আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী মনজুর আলম মঞ্জুর সমর্থক ছিলেন। এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ জামালের স্ত্রী বাদি হয়ে খুলশী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় প্রধান আসামি করা হয় ব্ল্যাক শামীমকে। এ ছাড়া কাউন্সিলর ওয়াসিম উদ্দিন চৌধুরী ও তার স্ত্রী রুমানা চৌধুরী, কাজী কাউসার, সুমন, পারভেজের নাম উল্লেখ করে এবং আরও ৪৫ থেকে ৫০ জন অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করা হয়। পরে গত ৮ জানুয়ারি রাতে বিদেশি অস্ত্রসহ ব্ল্যাক শামীমকে সীতাকুণ্ড থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
মন্তব্য করুন