দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে আশানুরূপ ভোজ্যতেলের আমদানিনির্ভরতা কমাতে সরিষা চাষে ঝুঁকে পড়েছেন উপজেলার কমবেশি সব এলাকার কৃষক। এতে করে পতিত জমিতে বেড়েছে সরিষা চাষের পরিমাণ।
ফুলবাড়ী উপজেলার পৌর এলাকাসহ সাত ইউনিয়নের ফসলের মাঠে শোভা বর্ধন করছে হলুদের আভা। আশানুরূপ ফলন ঘরে তুলতে শেষ সময়ে সরিষা ক্ষেত পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন এলাকার সরিষা চাষিরা।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, বিশ্বব্যাপী ভোজ্যতেলের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় ভোজ্যতেলের আমদানিনির্ভরতা কমাতে এবং স্থানীয়ভাবে সরিষা আবাদের মাধ্যমে ভোজ্যতেলে ঘাটতি পূরণের লক্ষ্যে উপজেলায় সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ১ হাজার ৩৪৫ হেক্টর জমিতে। কিন্তু চাষাবাদ হয়েছে ১ হাজার ৮২৩ হেক্টর জমিতে। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৪৭৮ হেক্টর জমিতে বেশি চাষাবাদ হয়েছে। এতে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২ হাজার ১৮ টন। একইভাবে সরিষার উৎপাদন বাড়াতে উপজেলার ক্ষুদ্র প্রান্তিক চাষির মাঝে প্রণোদনা হিসেবে বিনামূল্যে উন্নত মানের সরিষা বীজ, সার বিতরণ করা হয়েছে।
সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বিগত বছরগুলোর তুলনায় এ বছর সরিষার আবাদ বেড়েছে প্রায় ৫০০ হেক্টর বেশি জমিতে। আমন ধান কাটার পর থেকে ধান রোপণের আগ পর্যন্ত যেসব জমি পতিত অবস্থায় পড়ে থাকত এ বছর সেই সব জমিতেও সরিষা চাষ করছেন চাষিরা।
উপজেলার ৭নং শিবনগর ইউনিয়নের দাদপুর এলাকার সরিষা চাষি শহিদুল ইসলাম ও অহিনুর রহমান বলেন, আমন ধান কাটাই-মাড়াইয়ের ৯০ থেকে ১২০ দিন পর ইরিবোরো ধান রোপণ কার্যক্রম শুরু করা হয়। এ সময় মাত্র ৭০ থেকে ৮০ দিনের মাথায় সরিষা ঘরে তোলা যায়। বিগত বছরগুলোতে এ সব জমি পতিত অবস্থায় পড়ে থাকলেও এ বছর জমি পতিত অবস্থায় ফেলে না রেখে সরিষা চাষ করা হচ্ছে। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে সরিষা চালের প্রণোদনা হিসেবে বিনামূল্যে সরিষার বীজ ও রাসায়নিক সার দিয়ে সরিষা চাষে আগ্রহী করা হয়েছে কৃষকদের। ফলে চাষিরাও সরিষা চাষে আগ্রহী হয়ে পতিত জমিতে বেশি বেশি সরিষা চাষে ঝুঁকে পড়েছেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রুম্মান আক্তার বলেন, কম খরচে আশানুরূপ লাভ পাওয়ায় সরিষা চাষে কৃষকরা ঝুঁকে পড়ায় সরিষা আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছড়িয়ে গেছে। এতে করে সরিষা ফুলের মধুর উৎপাদনও বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ ছাড়াও সরিষার পাতা জমিতে পড়ে উন্নতমানের জৈব সার হিসেবে পরিণত হওয়ায় পরবর্তী ফসল উৎপাদনে রাসায়নিক সার কম লাগে।
মন্তব্য করুন