ঘড়ির কাটায় দুপুর ১টা। এখনও আকাশ মেঘলা, দেখা নেই সূর্যের। বইছে হিমেল বাতাস। গত কয়েক দিন থেকে তাপমাত্রা এককের ঘর থেকে ১০ ও ১১ ডিগ্রির মধ্যে ওঠানামা করছে। এ পরিস্থিতিতে ঘন কুয়াশা ও হিমেল হাওয়ায় হাড় কাঁপানো শীতে জনজীবন একেবারেই বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে উত্তরের জেলা নওগাঁয়। কনকনে ঠান্ডার কারণে শিশু থেকে বৃদ্ধ সবারই নাজেহাল অবস্থা। অথচ এখনও বন্ধ ঘোষণা করা হয়নি জেলার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো। এমনকি শিশু শিক্ষার্থীদের তীব্র ঠান্ডায় মেঝেতে বসিয়ে পাঠদান করার চিত্রও দেখা গেছে।
রোববার (২১ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বদলগাছী উপজেলার বদলগাছী সরকারি প্রাথমিক ও সরকারি মডেল পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ে সরেজমিন খোঁজ নেওয়া হয়। সেখানে স্বাভাবিক নিয়মে পাঠদান করায় শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিও ছিল।
নওগাঁর বদলগাছীতে রোববার সর্বনিন্ম তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শনিবার (২০ জানুয়ারি) তাপমাত্রা ছিল ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বদলগাছী আবহাওয়া অধিদপ্তরের টেলিপ্রিন্টার আরমান হোসেন মুঠোফোনে সকাল ১০টার দিকে কালবেলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
পরে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে জানতে চাইলে আরমান হোসেন বলেন, এখন তাপমাত্রা ১৩ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যেটা আমরা অফিসিয়ালভাবে কাউকে জানাইনি। আমরা সকাল ৯টায় সর্বনিম্ন এবং সন্ধ্যা ৬টায় সর্ব্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করি।
এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মিজানুর রহমান মুঠোফোনে বলেন, আমরা সর্বনিম্ন ও সর্ব্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করি। আজ সকাল ৬টা থেকে ৯ টার মধ্যে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ ছাড়া আমাদের উর্দ্ধমুখী তাপমাত্রা রেকর্ডের জন্য আরেকটি মেশিন আছে, যেটা শুধু সর্বোচ্চ তাপমাত্রা পরিমাপ করে। তবে সেটা আনঅফিসিয়াল। শুধু আমাদের জানার জন্য।
এর আগে গত ১৭ ও ১৮ জানুয়ারি নওগাঁর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল। এরপর আর বন্ধ হয়নি কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
আজকের তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির নিচে জানিয়ে বিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করবেন কি না মুঠোফোনে জানতে চাইলে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. সাইফুল ইসলাম কালবেলাকে বলেন, আমি এখনও আবহাওয়া অফিস থেকে জানতে পারিনি। বিদ্যালয় কখন থেকে শুরু হয় জানতে চাইলে তিনি ৯টার কথা বলেন। তাহলে ৯টার সময় ১০-এর নিচে আছে, এ ক্ষেত্রে কী করবেন এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, যদি সেটা থাকে তাহলে বন্ধ ঘোষণা করা হবে।
পত্নীতলায় উপজেলায় কর্মরত এক শিক্ষক জানালেন, বিদ্যালয়ে শ্রেণি কার্যক্রম শুরু হয় সকাল ১০টায়। আর জাতীয় সংগীত ও শরীরচর্চার জন্য শিক্ষার্থীদের উপস্থিত হতে হয় সাড়ে ৯টার দিকে। আর সাড়ে ৯টার দিকে উপস্থিত হতে হলে শিক্ষার্থীদের বাড়ি থেকে বের হতে হয় ৯টার দিকে। আবার কোনো শিক্ষার্থীদের তারও আগে বাড়ি থেকে বের হতে হবে। তাহলে তো স্বাস্থ্যঝুঁকির মধ্যেই পড়ছে তারা।
অপরদিকে জেলার মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসাগুলোর বিষয়ে এখনো নেওয়া হয়নি কোনো সিদ্ধান্ত। মুঠোফোনে জানতে চাইলে জেলা শিক্ষা অফিসার মো. লুৎফর রহমান বলেন, সকাল ৯টার পর আমি আবহাওয়া অফিসে খোঁজ নিয়েছি ১১ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রয়েছে। আমার প্রতিষ্ঠান শুরু হয় ১০টায়, তাহলে কীভাবে বন্ধ দিতে পারি। এখন খোঁজ নিয়ে দেখেন ১৪ ডিগ্রি হয়ে গেছে।
মন্তব্য করুন