চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) নাট্যকলা বিভাগের প্রভাষক নিয়োগ বোর্ড নিয়ে ধূম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনায় শিক্ষকদের দুই পক্ষ পরস্পরকে দায়ী করেছেন। একটি পক্ষ বলছেন, স্ত্রীকে নিয়োগ পরীক্ষার সাক্ষাৎকারে না ডাকায় নিয়োগ বোর্ড থেকে পদত্যাগ করেছেন অধ্যাপক কুন্তল বড়ুয়া। অন্যদিকে কুন্তল বড়ুয়ার দাবি, নিয়োগের ক্ষেত্রে অনিয়মের শঙ্কায় নিয়োগ বোর্ডের কার্যক্রম থেকে নিজেকে বিরত রেখেছেন তিনি।
রোববার (২১ জানুয়ারি) সকালে অধ্যাপক কুন্তল বড়ুয়া পদত্যাগ করে চিঠি দেন। আরেক সদস্য অধ্যাপক আনোয়ার সাঈদ পলাশও অনুপস্থিত ছিলেন বলে জানা গেছে।
অভিযোগ উঠেছে, পরিকল্পনা কমিটির সদস্যরা চাপের মুখে বিশেষ বিবেচনায় কুন্তল বড়ুয়ার স্ত্রী সোমা বড়ুয়াকে সাক্ষাৎকারে ডাকতে কমিটি সুপারিশ করে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষক নিয়োগ নীতিমালা অনুযায়ী নৃত্যকলা বিষয়টি বিজ্ঞাপনে অন্তর্ভুক্ত না থাকায় শিক্ষক সেল থেকে কুন্তল বড়ুয়ার স্ত্রী সোমা বড়ুয়াকে সাক্ষাৎকারে ডাকা হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের ওপরও নানাভাবে একটি পক্ষ সোমা বড়ুয়াকে সাক্ষাৎকারে ডাকার চিঠি দিতে চাপ দিচ্ছিলেন বলে জানা গেছে। কিন্তু বিভাগীয় পরিকল্পনা কমিটি নীতিমালাবহির্ভূত সুপারিশ করলেও সেটি বাস্তবায়ন না করতে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত রয়েছে।
এর আগে গত ১১ জানুয়ারি এ বিভাগে প্রভাষক পদে নিয়োগ দিতে বোর্ড সভা আহ্বান করা হয়। কিন্তু নিজের স্ত্রীর ভাইভা কার্ড ইস্যু না হওয়ায় দুই দিন আগে কুন্তল বড়ুয়া এ নিয়োগ বোর্ডে উপস্থিত হতে অপারগতা প্রকাশ করেন। পরে এ বোর্ড স্থগিত করা হয়। পরবর্তী দিনক্ষণ নির্ধারণ করা হয়েছিল ২১ জানুয়ারি। রোববার সকালে অধ্যাপক কুন্তল বড়ুয়া পদত্যাগ করে চিঠি দেন।
এ বিষয়ে জানতে রোববার বিকেলে চবি উপাচার্য প্রফেসর ড. শিরীণ আখতার বলেন, বিভাগের পরিকল্পনা কমিটির দুই দফা সুপারিশ করেছে নাট্যকলা বিভাগে শিক্ষক নিয়োগ দিতে। সে অনুযায়ী সার্কুলার হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী বোর্ডও বসেছে। কোরাম পূর্ণ করতে না দিতে কেউ পদত্যাগ করেছেন বলে শুনেছি। কিন্তু তবুও কোরাম পূর্ণ হয়েছে। আমরা রেজিস্ট্রার ও শিক্ষক সেলের কাছ থেকে নিয়মের বিষয়টি স্পষ্ট করে জেনে নিয়ে বোর্ডের নিয়ম অনুসারে কাজ সম্পন্ন করেছি। নিয়মের ব্যত্যয় হয়নি।
এ বিষয়ে নাট্যকলা বিভাগের অধ্যাপক ও প্রভাষক নিয়োগ বোর্ডের সদস্য কুন্তল বড়ুয়া কালবেলাকে বলেন, আমি পদত্যাগ করিনি, এ বোর্ড থেকে নিজেকে বিরত থেকেছি। আমার আশঙ্কা যোগ্য প্রার্থীদের বাদ দিয়ে পূর্বনির্ধারিত প্রার্থীদের নিয়োগের পাঁয়তারা চলছে। তাই আমি নিজেকে বিরত রেখেছি। আমার স্ত্রীকে নিয়ে যে কথা হচ্ছে, তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
মন্তব্য করুন