পাটগ্রাম (লালমনিরহাট) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৪ জানুয়ারি ২০২৪, ০৯:৫৪ এএম
অনলাইন সংস্করণ

তিস্তার বালুচরে স্বপ্ন, কোটি টাকার ফসলের আশা

পাটগ্রামের দহগ্রামে তিস্তার চরে গম ক্তেষে পানি দিচ্ছেন এক কৃষক। ছবি : কালবেলা
পাটগ্রামের দহগ্রামে তিস্তার চরে গম ক্তেষে পানি দিচ্ছেন এক কৃষক। ছবি : কালবেলা

লালমনিরহাটের পাটগ্রামে তিস্তা ও ধরলা নদীর বালুচরে এবার বেশি পলি পড়েছে। ফলে বিস্তৃত চরাঞ্চল ভরে গেছে ভুট্টা, গম ও আলুর মতো নানা ফসলের সমারোহে। কৃষকরা এখন ক্ষেত পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন।

কৃষিসংশ্লিষ্টরা বলছেন, এবার দহগ্রাম ইউনিয়নের তিস্তা এবং পাটগ্রাম পৌরসভা, জগৎবেড় ও জোংড়া ইউনিয়নের ধরলার চরে প্রায় ১৩০ হেক্টর জমি চাষের আওতায় এসেছে, যা অন্য বছরের তুলনায় প্রায় পাঁচ গুণ বেশি। এ চাষাবাদে দেড় হাজার টনের বেশি ফসল উৎপাদিত হবে। বাজারমূল্য পাওয়া যাবে প্রায় সাড়ে ৬ কোটি টাকা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, চরে বিস্তীর্ণ ভূমিতে ভুট্টা, গম, বাদাম, আলু, মরিচ, মিষ্টি আলু, মিষ্টিকুমড়া, সরিষাসহ বিভিন্ন শাকসবজি আবাদ দেখা যায়। ফসলের খেতে কৃষক পরিবারের সদস্যরা ছাড়াও কৃষিশ্রমিকরা কাজ করছেন। কেউ ডিজেলচালিত সেচযন্ত্র দিয়ে খেতে পানি দিচ্ছেন, কেউ খেতে নিড়ানি করছেন, আবার কেউ আগাছা তুলছেন সন্ধ্যা পর্যন্ত। তারা খেতের পরিচর্যা করতে সকালে মাঠে যান, সঙ্গে নিয়ে যান খাবার ও পানি। দুপুরে খেতের আইলেই খেয়ে আবার কাজে ফেরেন।

কৃষকেরা জানান, আন্তঃসীমান্ত নদী তিস্তা ও ধরলার পানিপ্রবাহ নানাভাবে নিয়ন্ত্রণ করে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ। গত বছরের ৪ অক্টোবর ছেড়ে দেওয়া তিস্তার পানিতে দহগ্রামে প্রবল বন্যা দেখা দেয়। এতে ভেসে আসা পলি জমা হয় বালুচরে। এ পলির পরিমাণ ছিল এবার অনেক বেশি। তাই চরের দাবিদার স্থানীয় গ্রামবাসী এ বছর অনেক বেশি চাষাবাদ করছেন।

দহগ্রামের চরের কৃষক ফরহাদ মণ্ডল বলেন, ‘তিস্তা নদী যখন ভাঙে, তখন চরে ধু ধু বালু পড়ে। এতে আমরা আবাদ করি। এবার ভুট্টার আবাদ হয়েছে। আমরা খুব খুশি।’

একই এলাকার কৃষক আবু সাঈদ বলেন, ‘তিস্তা নদী দীর্ঘদিন ধরে ভাঙছে। এবারে পলি বেশি পড়েছে। সবাই বিভিন্ন ফসল আবাদ করেছেন, ক্ষেতও ভালো আছে। ফলন বেশি হবে বলে আশা করছি।’

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পাটগ্রাম উপজেলা কার্যালয় সূত্র জানায়, এবার তিস্তা ও ধরলা নদীর চরাঞ্চলের ৬৫ হেক্টর জমিতে ভুট্টা আবাদ হচ্ছে। এ ছাড়া গম ২৫ হেক্টর, আলু ১৫ হেক্টর, মিষ্টিকুমড়া ৮ হেক্টর, মরিচ ৬ হেক্টর, চিনাবাদাম ৫ হেক্টর ও মিষ্টি আলু ৪ হেক্টর জমিতে চাষ করা হচ্ছে। এতে ১ হাজার ৬৫৩ টন ফসল উৎপাদিত হবে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল গাফফার বলেন, ‘এবারের মৌসুমে নদীর চরগুলোতে পলিমাটি বেশি পড়েছে। এতে স্থানীয় কৃষকরা সবাই চাষাবাদ করছেন। ফলনও ভালো হবে। আমরা অনুমান করছি, এসব চরে উৎপাদিত ফসলের মূল্য প্রায় সাড়ে ৬ কোটি টাকা হবে। উপজেলা কৃষি কার্যালয় থেকে চরাঞ্চলে চাষাবাদে কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।’

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

কোন সময়ের স্বপ্ন সত্য হওয়ার সম্ভাবনা বেশি? যা বলছেন আলেমরা

শ্রীলঙ্কা সিরিজের জন্য বাংলাদেশের দল ঘোষণা

এক নেতাকে ‘সুখবর’ দিল যুবদল

বিএনপি ক্ষমতায় এলে দোহার-নবাবগঞ্জে গ্যাস সরবরাহের প্রতিশ্রুতি দিলেন খন্দকার আবু আশফাক

ঘন ঘন ভূমিকম্প নিয়ে শায়খ আহমাদুল্লাহর সতর্কবার্তা

বিশ্বকাপের শিরোপা ধরে রাখল ভারত

ব্লুটুথ হেডফোন নাকি সাধারণ হেডফোন, কোনটি ভালো জানেন?

নুরুদ্দিন আহাম্মেদ অপুকে মনোনীত করায় আনন্দ মিছিল

ইকরা হবিগঞ্জের বার্ষিক চড়ুইভাতি অনুষ্ঠিত

মেট্রোরেলে গাঁজা পরিবহন, বাবা-মেয়ে আটক

১০

বাংলাদেশের জন্য এক লাখ টন চাল কিনছে পাকিস্তান

১১

পদ ফিরে পেলেন বিএনপির এক নেতা

১২

এশিয়ান ইউনিভার্সিটি প্রেসিডেন্টস ফোরামে সভাপতিত্ব করেন ড. মো. সবুর খান

১৩

উচ্ছেদ আশঙ্কায় ৪০০ পরিবার, আশ্রয় রক্ষার দাবি স্থানীয়দের

১৪

বাউল শিল্পীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে টিএসসিতে ‘বাউল সন্ধ্যা’

১৫

ব্যাংক বন্ধে গ্রাহক তাৎক্ষণিক যত টাকা পাবেন

১৬

আমলাতান্ত্রিকতার কারণে শিক্ষকরা অনাহারে জীবন-যাপন করছেন : রিজভী

১৭

কখনও এক, কখনও তিন ম্যাচ: এমএলএস প্লে-অফের বিভ্রান্তিকর নিয়মের ব্যাখ্যা

১৮

থাইল্যান্ডের ই-ভিসা নিয়ে সতর্কবার্তা

১৯

সড়কে লবণ ফেলে, কাফনের কাপড় পরে চাষিদের প্রতিবাদ

২০
X